খুব ভাল আলোচনা হয়েছে— শিবপ্রকাশের বাড়িতে বৈঠক শেষে এ কথাই বলছেন শোভনরা। নিজস্ব চিত্র
যোগদান মিটলেও অস্বস্তি কিছুটা রয়েই গিয়েছিল বুধবার। কিন্তু রাত পোহাতেই মেঘ সরার ইঙ্গিত মিলতে শুরু করল। শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নিজের বাড়িতে বৈঠক করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিব প্রকাশ। দেবশ্রী-পর্বকে এ দিনের বৈঠকে তিনি ‘দুঃস্বপ্ন’ বলে আখ্যা দিলেন। ওই ঘটনা ভুলে বিজেপিকে নিজেদের ‘পরিবার’ মনে করার পরামর্শও দিলেন শোভন-বৈশাখীকে। শিব প্রকাশের হাতে রাখি বেঁধে গোটা অধ্যায়কে মধুরেণ সমাপয়েতের দিকে নিয়ে গেলেন বৈশাখীও।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ বৈশাখীকে সঙ্গে নিয়ে শিব প্রকাশের নয়াদিল্লির বাড়িতে পৌঁছন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র। পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সহকারী পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেননও পৌঁছন। বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্বের সঙ্গে এ দিন শোভনদের ঘণ্টা দুয়েক বৈঠক হয়েছে বলে খবর। যে মর্যাদা এবং সম্মানের প্রশ্নে তৃণমূলের সঙ্গে তিনি দূরত্ব বাড়িয়ে নিয়েছিলেন বলে শোভন চট্টোপাধ্যায় একাধিক বার জানিয়েছিলেন, বিজেপিতে সেই মর্যাদা এবং সম্মানের কোনও ঘাটতি হবে না— শোভনকে এ দিন এই রকমই আশ্বাস দেন বিজেপির ওই অন্যতম শীর্ষনেতা।
আরও পড়ুন: শোভনকে ‘পরিচ্ছন্ন’ বলতে নারাজ দিলীপ
আরও পড়ুন: শোভনের পাড়ায় তৃণমূলের ‘মুখ’ রত্না
বুধবার শোভনদের যোগদানের আগে তৃণমূল বিধায়ক দেবশ্রী রায় আচমকা বিজেপি সদর দফতরে হাজির হওয়ায় যে জটিলতা তৈরি হয়েছিল, সে প্রসঙ্গ স্বাভাবিক ভাবেই ওঠে এ দিনের বৈঠকে। নয়াদিল্লি সূত্রের খবর, ওই ঘটনাকে এ দিন ‘দুঃস্বপ্ন’ বলে আখ্যা দেন শিব প্রকাশ। কোনও দুরভিসন্ধি নিয়েই ওই ঘটনা ঘটানো হয়েছিল— শিব প্রকাশের মত এমনই বলে জানা গিয়েছে।
যা বুধবার ঘটেছে, তা ভুলে গিয়ে শোভন ও বৈশাখীকে সাংগঠনিক কাজে মন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে বলে খবর। তাঁদের বলা হয়েছে— আজ থেকে বিজেপি-কে নিজেদের পরিবার মনে করুন। শুধু শোভনকে নয়, বৈশাখীকেও যে সুনির্দিষ্ট ভূমিকা পালন করতে হবে দলের হয়ে, তা-ও শিব প্রকাশ এ দিনের বৈঠকে স্পষ্ট করে দেন বলে জানা গিয়েছে।
শোভনকে ঠিক কোন ভূমিকায় দেখা যাবে বিজেপিতে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কিন্তু কলকাতা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় শোভন চট্টোপাধ্যায়ের যে প্রভাব রয়েছে, তাকে যে সব রকম ভাবে কাজে লাগাতে হবে এবং এই এলাকায় বিজেপির সংগঠন দ্রুত বাড়িয়ে তোলায় শোভনকে যে বড় ভূমিকা নিতে হবে, সে ইঙ্গিত এ দিন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব দিয়ে দিয়েছেন বলে খবর।
গতকাল দলে শোভনদের আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বাগত জানানোর সময়ে মুকুল রায়ও একই কথা বলেছিলেন। কলকাতা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার রাজনীতিতে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ভূমিকা ঠিক কতটা, সে সম্পর্কে বেশ কিছু কথা বলেছিলেন মুকুল। শিব প্রকাশের তরফ থেকেও এ দিন অনেকটা একই রকম বার্তা পেলেন বেহালা পূর্বের বিধায়ক।
এ দিনের বৈঠকে কী আলোচনা হল, তা নিয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায় বিশদে মুখ খুলতে চাননি। তিনি শুধু জানিয়েছেন, শিব প্রকাশ ও অরবিন্দ মেননের সঙ্গে খুব ‘গঠনমূলক আলোচনা’ হয়েছে।
বৈঠক নিয়ে বিশদে মুখ খোলেননি বৈশাখীও। তবে আনন্দবাজারকে তিনি বলেছেন, ‘‘আমি শিব প্রকাশজির হাতে রাখি বেঁধেছি। তিনি বলেছেন, আমাকে রক্ষা করার সব দায়িত্ব তাঁর।’’
এ দিন বিকেলে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষের সঙ্গেও শোভন চট্টোপাধ্যায়দের বৈঠক হয়েছে। সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনা তো হয়েইছে। শোভন ও বৈশাখীকে কী ধরনের ভূমিকা পালন করতে হতে পারে, তার আভাসও সন্তোষ দিয়েছেন বলে খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy