এ দিন তৃণমূলের পার্টি অফিসে অনুব্রত মণ্ডল ও অনুপম হাজরা। —নিজস্ব চিত্র।
নির্বাচনের কয়েক মাস আগেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন। সেই অনুপম হাজরাই সোমবার বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে দেখা করলেন। এমনকি পায়ে হাত দিয়ে প্রণামও করলেন। আর তা নিয়েই নতুন করে জল্পনা শুরু। শুধুমাত্র সৌজন্য দেখাতেই কি অনুব্রতর কাছে গেলেন তিনি, নাকি এর পিছনে রয়েছে অন্য কোনও সমীকরণ, প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বাংলার রাজনৈতিক মহলে। অনুপম নিজে যদিও সেই জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন।
এই অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধেই তোপ দেগে একসময় দল থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন অনুপম। যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী মিমি চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে যাদবপুরে তাঁকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। তার মধ্যেই এ দিন বোলপুরে ভোট দিতে যান অনুপম। সেই ফাঁকেই বীরভূম জেলায় তৃণমূলের পার্টি অফিসে গিয়ে অনুব্রতর সঙ্গে দেখা করেন তিনি।
দীর্ঘ মন কষাকষির পর এই সাক্ষাতে অবশ্য দু’জনের কাউকেই আড়ষ্ট হতে দেখা যায়নি। বরং মাথায় হাত রেখে অনুপমকে আশীর্বাদ করেন অনুব্রত। জড়িয়েও ধরেন। তার পর অভিভাবক সুলভ ভঙ্গিতে জানতে চান, খালি পেটে ঘুরছেন নাকি খেয়ে এসেছেন অনুপম? ‘কাকা’র কথার অবাধ্য হননি অনুপমও। খাওয়া দাওয়া সেরেই পার্টি অফিস থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি।
সৌজন্য দেখাতেই সাক্ষাত্ করতে গিয়েছিলেন বলে জানান অনুপম। —নিজস্ব চিত্র।
আরও পড়ুন: ৪০ তৃণমূল বিধায়ক যোগাযোগ রাখছেন! চাঞ্চল্যকর দাবি মোদীর, ঘোড়া কেনাবেচার অভিযোগ তৃণমূলের
বাবার সঙ্গে বন্ধুত্ব থাকায় চিরকাল অনুব্রত কাকা ডেকে এসেছেন অনুপম। তাই এ দিন জানান, ‘‘ভোট দিতে আসার আগেই ফোনে কথা হয়েছিল কাকার সঙ্গে। তখনই দেখা করে যেতে বলেছিলেন। তাই ঘুরে গেলাম।’’ তবে নিতান্ত সৌজন্য দেখাতেই অনুব্রতর সঙ্গে তিনি দেখা করতে গিয়েছিলেন বলেও সংবাদমাধ্যমে সাফ জানিয়ে দেন অনুপম। তিনি বলেন, ‘‘রাজনীতি আলাদা জায়গায়, আর ব্যক্তিগত সম্পর্ক আলাদা জায়গায়।দিনের শেষে আমরা সবাই মানুষ। তাই যে পার্টি-ই করি না কেন, বাকি সকলের সঙ্গেই সুসম্পর্ক রেখে চলি। আর পাঁচ জন রাজনীতিকের মতো ভাবি না আমি।’’
আরও পড়ুন: ইভিএম-এর বোতামে আতর! ভোট দিয়ে বেরোলেই আঙুল শুঁকছেন তৃণমূল কর্মীরা
অনুপমের বিজেপিতে চলে যাওয়া নিয়ে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘ও বোকামি করেছে। হুট করে, আমাকে না জিজ্ঞাসা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। আমি তো ওকেই প্রার্থী করতাম। মুখ্যমন্ত্রীকেও জানিয়ে দিয়েছিলাম।’’ সুযোগ এলে ফের অনুব্রতকে দলে ফিরিয়ে নিতে রাজি বলেও জানান অনুব্রত। তাঁর কথায়, ‘‘অনুপম বোলপুরের ছেলে। ওর বাবা আমার বন্ধু। ও চাইলে দলে ফিরিয়ে নিতে পারি ওকে। সাংসদ হতে চাইলে বলুক। আমি কথা বলব মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। রাজ্যসভা আছে তো!’’ তাঁর এই মন্তব্য নিয়েই নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy