মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।
কাজ চলছে বেশ কিছু দিন ধরে। তা সত্ত্বেও নতুন রেশন কার্ডের আবেদন বা সংশোধন প্রক্রিয়া নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হচ্ছে না কেন? বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে রীতিমতো উষ্মার সঙ্গে প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
খাদ্য দফতর সূত্রের বক্তব্য, গত সপ্তাহে নবান্ন থেকে রেশন কার্ড সংক্রান্ত প্রায় সাত হাজার আবেদন ওই দফতরে পাঠিয়ে কয়েক দিনের মধ্যে তার নিষ্পত্তি করতে বলা হয়। কিন্তু তা করা সম্ভব হয়নি। কারণ, রেশন কার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ নথির ক্ষেত্রে সব দিক বিবেচনা করেই তা তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় খাদ্য দফতর। সেই জন্য রেশন কার্ড সংক্রান্ত কোনও আবেদন জমা পড়লে তা খতিয়ে দেখতে স্পেশাল টিম আবেদনকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করে। প্রয়োজনে ওই দল আবেদনকারীর বাড়িতে যায়। ফলে সব কাজ শেষ করে কয়েক দিনের মধ্যে রেশন কার্ড উপভোক্তার হাতে পৌঁছে দেওয়া কার্যত অসম্ভব।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের জন অভিযোগ সেলে দৈনিক গড়ে রেশন কার্ড সংক্রান্ত ২৫০-৩০০টি অভিযোগ পড়ে। নবান্ন থেকে তা খাদ্য দফতরে যাওয়ার পরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়। কিন্তু নবান্ন থেকে একসঙ্গে সাত হাজার আবেদন আসায় সব ক’টির নিষ্পত্তি করা যায়নি। এ দিনের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর উষ্মার সঙ্গে এই ঘটনার যোগসূত্র আছে কি না, খাদ্য দফতরের কর্তারা সেই বিষয়ে অবশ্য স্পষ্ট করে কিছু বলেননি।
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন প্রশ্ন তোলেন, খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের বিরুদ্ধে এত অভিযোগ কেন? রেশন কার্ডের কাজ ফেলে রাখা হয়েছে কি না?
এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত খাদ্য ও সরবরাহ সচিব মনোজ আগরওয়াল যুক্তি দেখান, ‘‘রেশন কার্ড স্পিড পোস্টে চলে গিয়েছে। পৌঁছতে ৪-৫ দিন লাগে। নাম সংশোধন করার জন্য. কিছু কাজ...।’’ সচিবকে থামিয়ে দিয়ে মমতা বলেন, ‘‘তোমরা খুব চালু। যখনই ধরা হয়, তখনই স্পিড পোস্ট। তা না-হলে বলে নাম পরিবর্তন হচ্ছে। এটা এ বার একটু বন্ধ করো।’’ পশ্চিম বর্ধমানে ৮১ শতাংশ কাজ পড়ে আছে কেন, তা-ও জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী উষ্মা প্রকাশ করার পরে পরিস্থিতি পর্যালোচনা শুরু করেছেন খাদ্য দফতরের কর্তারা। সেপ্টেম্বর ও নভেম্বরে আয়োজিত শিবিরে রেশন কার্ড সংক্রান্ত লক্ষ লক্ষ আবেদন জমা পড়েছে। তার আগে বহু আবেদনের প্রেক্ষিতে কার্ড তৈরি হয়েছিল। বিভিন্ন জেলা খাদ্য দফতরের অফিসে প্রচুর রেশন কার্ড পড়ে আছে। সেই সব কার্ডের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়েও পর্যালোচনা শুরু করেছেন দফতরের কর্তারা। কারণ, একই লোক দু’বার আবেদন করে থাকতে পারেন। ডাকঘরের মাধ্যমে উপভোক্তার কাছে রেশন কার্ড পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে খাদ্য দফতর। তবে বহু আবেদনে পিন কোড না-থাকায় কী ভাবে ডাকে বাড়িতে কার্ড পৌঁছে দেওয়া হবে, তা নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে। এই সব কারণেই যে রেশন কার্ড সময়মতো পৌঁছনো নিয়ে কখনও কখনও জটিলতা তৈরি হচ্ছে, তা মানছেন খাদ্য দফতরের কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy