অভিযোগের আঙুল অদিতি চক্রবর্তীর দিকেই। নিজস্ব চিত্র।
প্রথম স্বামী জয়দীপ বিশ্বাসের মৃত্যুর পিছনেও হাত ছিল অদিতির। এমনটাই অভিযোগ জয়দীপ বিশ্বাসের পরিবারের। খড়দহে প্রৌঢ় প্রতুল চক্রবর্তী খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী অদিতি চক্রবর্তীর প্রথম স্বামী ছিলেন জয়দীপ।
তদন্তে নেমে পুলিশ অদিতির প্রথম স্বামীর বারাসতের বাড়িতেও যায়। সেখানেই তদন্তকারীদের এই অভিযোগ জানান জয়দীপের পরিবার এবং প্রতিবেশীরা। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ২০০১ সালে জয়দীপের সঙ্গে বিয়ে হয় অদিতির। ২০০৪ সালে জয়দীপের মৃত্যু হয়। কিন্তু তার আগে, অদিতির বিয়ের পর থেকে ওই পরিবারের তিন জনের মৃত্যু হয়েছিল। ২০০২ সালে হঠাৎই মারা যান জয়দীপের মা। তার পর মারা যান আরও দুই আত্মীয়। পর পর মৃত্যুর ঘটনা ঘটতে থাকে পরিবারে। এর পর হঠাৎ করেই জয়দীপের মৃত্যুর পর তাঁর পরিবারের লোকজন এবং প্রতিবেশীরা অদিতিকেই সন্দেহ করেন। যদিও প্রাথমিক ভাবে স্থানীয় চিকিৎসক হার্ট অ্যাটাকে জয়দীপের মৃত্যু হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রতিবেশীরা তা মানতে রাজি হননি।
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, সেই সময় তাঁরা বিষয়টি বারাসত থানায় জানালে জয়দীপের দেহের ময়নাতদন্ত হয়। পোস্ট মর্টেমে অস্বাভাবিক কিছু পাওয়া না গেলেও জয়দীপের পেটে মদ পাওয়া গিয়েছিল। তাঁর পরিবারের দাবি, জয়দীপ কখনও মদ খেতেন না। সেই কারণে আজও জয়দীপের মৃত্যু ঘিরে অদিতিকেই সন্দেহ করেন তাঁর পরিবার।
আরও পড়ুন: খুন করে স্বামীর দেহের পাশেই রাত কাটালেন, সকাল হতেই অফিস গেলেন স্ত্রী
আরও পড়ুন: তাঁরই চেপে ধরা শাড়ির ফাঁসে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছেন স্বামী প্রতুল, জেরায় স্বীকার অদিতির
পুলিশ সূত্রে খবর, এর পরেই বারাসতের চৌধুরী পাড়া ছেড়ে সিঁথিতে নিজের বাড়িতে চলে আসেন অদিতি। এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ায় জয়দীপের চাকরিটাও তিনি পান। পাশাপাশি বারাসতে জয়দীপের সম্পত্তি বিক্রি করে দেন।
তদন্তকারীদের জেরার মুখে অদিতি জানিয়েছেন, মার্চ মাসে প্রতুলের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পর একটি ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটে নিজের বিয়ের বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন তিনি। নিজেকে বিবাহ বিচ্ছিন্না ঘোষণা করেই সেই বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন। সেই বিজ্ঞাপন দেখে অনেকেই যোগাযোগ করেছিলেন তাঁর সঙ্গে। তার মধ্যে এক জনের সঙ্গে কথাবার্তা প্রায় পাকা হয়ে গিয়েছিল। সেই কথা জানতে পারে প্রতুল। এই নিয়ে প্রতুলের সঙ্গে ব্যাপক অশান্তি হয়। তদন্তকারীদের অদিতি জেরায় বলেছেন, যার সঙ্গে তৃতীয় বিবাহর পরিকল্পনা করছিলেন অদিতি, সেই ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁকে হুমকি দিয়েছিল প্রতুল। পুলিশ ইতিমধ্যেই সেই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছে। খড়দা থানার আইসি মৃত্যুঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৈরি তদন্তকারী দলের এক সদস্য বলেন, “এই সমস্ত তথ্যই আমরা খতিয়ে দেখছি। কারণ অদিতি যা যা বলেছে তা কতটা সত্যি সেটাও আমরা দেখছি। শুধু প্রতুলের অত্যাচারেই এই খুন না পরিকল্পনা করেই অন্য কোনও কারণে খুন তা আমরা খতিয়ে দেখছি।”
(পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার খবর এবং বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাংলায় খবর পেতে চোখ রাখুন আমাদের রাজ্য বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy