প্রতীকী ছবি।
আদতে দুর্গাপুর মুক্ত উপ-সংশোধনাগারের আবাসিক যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মহম্মদ নাসির। তাঁকে দিয়েই শনিবার, কালীপুজোর দিন মন্দির চত্বরে আলপনা দেওয়ালেন দুর্গাপুরের কোকআভেন থানার নডিহা রোডের একটি কালী মন্দির কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি,
এক দিকে, সমাজের সব স্তরের মানুষের পাশে দাঁড়ানো, অন্য দিকে, সম্প্রীতির বার্তা দিতেই তাঁদের এই উদ্যোগ।
কলকাতার মেটিয়াবুরুজের বাসিন্দা মহম্মদ নাসির একটি খুনের মামলায় ২০০৬-এ যাবজ্জীবনের সাজা পান। লকডাউনের আগে তাঁকে স্থানান্তরিত করানো হয় দুর্গাপুরের ওই সংশোধনাগারে। সম্প্রতি প্রায় ছ’মাসের জন্য বাড়িও গিয়েছিলেন। গত ১ নভেম্বর দুর্গাপুরে ফিরেছেন।
আলপনা দিতে দিতেই ওই আবাসিক জানালেন, ছোট থেকেই গ্যারাজে কাজ করতেন। সেখানে গাড়ি রং করার কাজ শেখেন। এক সময়ে শুধু গাড়ি নয়, যে কোনও রঙের কাজেই তিনি সিদ্ধহস্ত হয়ে ওঠেন। তিনি আলপনাও দিতে পারেন, এটা মন্দির কর্তৃপক্ষ জানতে পারেন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের থেকে। এর পরেই তাঁকে দিয়ে আলপনা দেওয়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মন্দির কমিটির তরফে প্রবাল ঘোষ বলেন, ‘‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দিতে এবং সমাজের সব স্তরের মানুষের পাশে দাঁড়াতেই আমরা পরিকল্পনা করেছিলাম।’’ উপ-সংশোধনাগারের আধিকারিক অজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই সংশোধনাগারের আবাসিকদের বিভিন্ন কাজে যুক্ত করার চেষ্টা করা হয়। নাসির রঙের কাজ জানেন।’’
দুর্গাপুর আদালতের সরকারি আইনজীবী দেবব্রত সাঁই বলেন, ‘‘যাবজ্জীবন মানে আজীবন সাজা। তবে দীর্ঘদিন সাজা খাটার পরে, বন্দির আচরণ সন্তোষজনক হলে তা বিবেচনা করে দেখে রাজ্য সরকারের নির্দিষ্ট কমিটি।’’ মন্দিরে আলপনা দিয়ে খুশি নাসিরও বলেন, ‘‘এই কাজটা করতে পেরে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। জীবনের অনেকটা সময় পেরিয়ে গিয়েছে। তবে দেখা যাক, আবার নতুন করে জীবনটা শুরু করা যায় কি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy