চার্জশিট হয়ে গিয়েছে। তবু সারদা গোষ্ঠীর অন্যতম ডিরেক্টর দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে আবার জেরা করতে চেয়ে আদালতে আবেদন করল সিবিআই। মঙ্গলবার বারাসতের বিশেষ আদালতে সিবিআইয়ের আইনজীবী চন্দনকুমার সিংহের তরফে এই আবেদন পেশ করা হয়।
সারদা-কাণ্ডে অভিযুক্তদের এ দিন ওই আদালতে তোলার কথা ছিল। অন্য আদালতে হাজিরা থাকায় দেবযানী অবশ্য বারাসতে ছিলেন না। যে-মামলার প্রেক্ষিতে সিবিআই আবার দেবযানীকে জেরা করতে চায়, তার যে চার্জশিট হয়ে গিয়েছে, সেই প্রসঙ্গ টেনে বিচারক সোমনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘চার্জশিটের পরেও কেন জেরার প্রয়োজন, আদালতকে তা জানাতে হবে। আবেদনে সে-কথা স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি।’’
সারদায় রাজ্য পুলিশের ‘সিট’ বা বিশেষ তদন্তকারী দলের প্রধান ছিলেন কলকাতা পুলিশের বর্তমান কমিশনার রাজীব কুমার। সিবিআই এ দিনই সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ করেছে, রাজীব যে-সব নথি পেয়েছিলেন, তার পুরোটা তাদের দেওয়া হয়নি। কয়েক সপ্তাহ আগে এই বিশেষ আদালতে দেবযানী বলেছিলেন, ‘‘সারদার একটি লাল ডায়েরি ছিল।’’ সিবিআইয়ের বক্তব্য, সেই ডায়েরি তাদের হাতে পৌঁছয়নি। কী কী নথি দেবযানীরা সেই সময় পুলিশকে দিয়েছিলেন, সেই বিষয়ে নতুন করে তথ্য জোগাড়ের জন্যই দেবযানীকে আবার জেরা করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ৮ ফেব্রুয়ারি শিলংয়ে হাজির হতে পারেন, সিবিআইকে চিঠি রাজীব কুমারের
এ দিন এজলাসে ছিলেন সারদার কর্ণধার এবং মূল অভিযুক্ত সুদীপ্ত সেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘বহু বার বলেছি, আমি লাল ডায়েরির বিষয়ে কিছু জানি না। দেবযানী বলেছিলেন। তাঁকে জিজ্ঞাসা করুন। আমার কাছে কোনও লাল ডায়েরি ছিল না। কোনও পেন ড্রাইভ বা ল্যাপটপও ছিল না।’’
দেবযানীর আইনজীবী রজনীশ মৌলিক বলেন, ‘‘আমাদের এই বিষয়ে নোটিস দেওয়া হয়নি।’’ বিচারক জানান, সব অভিযুক্তের আইনজীবীদের আবেদনের প্রতিলিপি দিতে হবে। সিবিআইয়ের আবেদনের শুনানি হবে ১৩ ফেব্রুয়ারি।
অভিযুক্ত মনোরঞ্জনা সিংহও এ দিন আদালতে ছিলেন না। চিকিৎসকের শংসাপত্র দিয়ে তাঁর আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী জানান, অসুস্থতার জন্য তিনি আদালতে হাজির হতে পারেনি।
আদালতে অভিযুক্তদের নিজেদের মধ্যে কুশল বিনিময় করতে দেখা যায়। অন্যতম অভিযুক্ত কুণাল ঘোষ কথা বলেন সুদীপ্তের সঙ্গে। উত্তেজিত হয়ে সুদীপ্তকে বলতে শোনা যায়, তাঁকে কড়া নজরদারিতে রাখা হয়েছে। কেন বামপন্থীরা তাঁর বিরুদ্ধে ফের মিছিল শুরু করলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন করতে শোনা যায় সুদীপ্তকে। এক বাম নেতার নাম উল্লেখ করে সুদীপ্তকে বলতে শোনা যায়, ‘ভাল’ সময়ে তিনি ওই নেতাদের সব রকম সাহায্য করেছেন। পরে আদালত কক্ষের বাইরে কুণাল বলেন, ‘‘সুদীপ্তবাবু অনেককেই সাহায্য করেছেন। এখন মাঝেমধ্যে বিচলিত হয়ে পড়েন। আমাকে সামনে পেয়ে ইমোশানাল হয়ে পড়েছিলেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy