Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal

বঙ্গভবনে ‘নজরবন্দি’ রাজীব, গ্রেফতারি নিয়ে শীর্ষ আদালতের রায় আগামিকাল

বুধবার রাতে নির্বাচন কমিশনের আচমকা নির্দেশে কার্যত রাজ্য ছাড়া হয়ে ভোটের মরসুমে দিল্লি পাড়ি দিতে হয় তাঁকে।

দিল্লি যাওয়ার পথে কলকাতা বিমানবন্দরে পুলিশ কর্তা রাজীব কুমার। ছবি-পিটিআই।

দিল্লি যাওয়ার পথে কলকাতা বিমানবন্দরে পুলিশ কর্তা রাজীব কুমার। ছবি-পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৯ ১৮:২০
Share: Save:

বৃহস্পতিবার কয়েক মিনিটের জন্য নর্থ ব্লকে হাজিরা দেওয়ার সময়টুকু ছাড়া দিনভর বঙ্গভবনে নিজের ঘরেই বন্দি রইলেন কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন কমিশনার রাজীব কুমার।

বুধবার রাতে নির্বাচন কমিশনের আচমকা নির্দেশে কার্যত রাজ্য ছাড়া হয়ে ভোটের মরসুমে দিল্লি পাড়ি দিতে হয় তাঁকে। সিদ্ধান্তটা যে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা তা কমিশনের কথাতেই স্পষ্ট। রাজ্যের এক আমলার কথায়, ‘‘রাজ্যের বাইরে নিয়ে গিয়ে নজরবন্দি করা হল রাজীব কুমারকে।”

সেই ‘নজরবন্দি’ অবস্থাতেই তাঁর উদ্বেগের পারদ আরও কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। এ দিন সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানা যায়, রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের করা মামলার রায় ঘোষণা হবে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায়। রায় দেবেন তিন বিচারপতির বেঞ্চের অন্যতম বিচারপতি সঞ্জীব খন্না। গত ২ মে থেকে ওই মামলার রায় স্থগিত রয়েছে।

আরও পড়ুন- এক লক্ষ বার কান ধরে ওঠবোস করা উচিত প্রধানমন্ত্রীর! এ বার মূর্তি ভাঙা নিয়ে তোপ মমতার​

আরও দেখুন- দেড় কোটির ঋণ, ৩৬ লক্ষের গাড়ি, ১২ লক্ষের গয়না...সম্পত্তির হিসাব দিলেন নুসরত​

এর আগে, সারদা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন চিটফান্ড মামলার তদন্তের সূত্র ধরে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই শীর্ষ আদালতে রাজ্য পুলিশের অসহযোগিতার অভিযোগ জানিয়ে মামলা করে। সেই মামলার শুনানির সময় সিবিআই একাধিক বার জানায়, সারদা মামলার তদন্তের প্রয়োজনে রাজীব কুমারকে জেরা করা প্রয়োজন। কিন্তু বার বার তাঁকে সমন পাঠানো হলেও তিনি আসেননি। সিবিআই তাঁদের সওয়ালে হলফনামা দিয়ে অভিযোগ করে যে, রাজীব কুমার সেই সময় সারদা মামলার দায়িত্বে থাকা রাজ্য সরকার গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর অন্যতম প্রধান আধিকারিক ছিলেন। সিবিআই অভিযোগ করে, ওই সময়ে সারদা মামলার অনেক তথ্য নষ্ট করা থেকে শুরু তথ্য প্রমাণ লোপাট করেছেন রাজীব কুমার।

শীর্ষ আদালত সিবিআইয়ের সওয়াল শুনে রাজীব কুমারকে শিলংয়ে গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু একই সঙ্গে রাজীব কুমারকে ‘গ্রেফতার করা যাবে না’ বলে রক্ষা কবচও দেয়। শিলংয়ে পাঁচ দিনের জেরা শেষে, সিবিআই সেই জিজ্ঞাসাবাদের রিপোর্ট মুখবন্ধ খামে আদালতকে জমা দিয়ে রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করে হেফাজতে নিয়ে জেরার আর্জি জানায়।

পাল্টা রাজীব কুমার এবং রাজ্য সরকার হলফনামা দিয়ে জানান যে, সিবিআইয়ের প্রাক্তন অন্তর্বর্তী অধিকর্তা নাগেশ্বর রাওয়ের স্ত্রী এবং মেয়ের বেআইনি আর্থিক লেনদেনের তদন্ত তাঁর নির্দেশে কলকাতা পুলিশ করছে বলেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে সিবিআই তাঁকে হেনস্থা করছে। দু’পক্ষের শুনানির শেষে প্রধান বিচারপতির তিন সদস্যের বেঞ্চ তাঁদের রায় স্থগিত রাখেন। কারণ ওই মামলায় সিবিআইয়ের মূল আর্জি, রাজীবের রক্ষাকবচ (গ্রেফতার করা যাবে না) প্রত্যাহার করুক শীর্ষ আদালত।

বুধবার নির্বাচন কমিশন রাজীব কুমারকে এডিজি সিআইডি-র পদ থেকে সরিয়ে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দফতরে যুক্ত হওয়ার নির্দেশ দেয়। বলা হয় সকাল ১০টার মধ্যে নর্থ ব্লকে হাজিরা দিতে হবে তাঁকে। সূত্রের খবর, তিনি ৯ টার বিমানে কলকাতা থেকে দিল্লি রওনা দেন। তার পর দিল্লি নেমে সোজা চলে যান বঙ্গভবনে। সেখান থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দফতরে কয়েক মিনিটের জন্য হাজিরা দিতে যান। সেখানে রিপোর্ট করে ফের ফিরে আসেন বঙ্গভবনে নিজের ঘরে। সূত্রের খবর, বিকেল থেকেই তিনি টানা রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল এবং তাঁর আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE