Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Mahalaya 2020

মুখ্যমন্ত্রীর মহালয়া টুইট ঘিরে জল্পনা

মমতার এ দিনের ঘোষণাটি রাজনৈতিক ভাবে তাৎপর্যপূণ বলে মনে করা হচ্ছে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি পিটিআই।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:৪৬
Share: Save:

শারদোৎসবের আনন্দ অম্লান রাখার প্রতিশ্রুতি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা, ‘কোভিডের জন্য আমাদের উৎসব উদ্‌যাপন অনেক বিধিনিয়মে বাঁধা পড়েছে। কিন্তু দুর্গাপুজোর উদ্দীপনাকে কোনও ভাবেই নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না।’

‘মহালয়ার প্রতিশ্রুতি’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে মুখ্যমন্ত্রীর এই টুইট ঘিরে নানা জল্পনা ও গুঞ্জন শুরু হয়েছে। কয়েক দিন আগেই মমতার বিরুদ্ধে দুর্গাপুজো বন্ধ রাখতে চাওয়ার অভিযোগ করে প্রচার শুরু হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই প্রচারের উৎস সন্ধানে নেমে কয়েক জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। তার পরিপ্রেক্ষিতে মমতার এ দিনের ঘোষণাটি রাজনৈতিক ভাবে তাৎপর্যপূণ বলে মনে করা হচ্ছে। পর্যবেক্ষকদের অনেকের ধারণা, মহালয়ার সকালেই শারদোৎসব পালনে সকলকে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচারেরও মোকাবিলা করলেন। আগামী বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে এটা মমতার কুশলী পদক্ষেপ।

মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার রাজনৈতিক জবাব এসেছে বিজেপির তরফে। দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ বলেন, ‘‘মহরমের জন্য দুর্গাপুজোর বিসর্জন আটকে রাখার নজির আগেই গড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এখন ভোটের আগে দুর্গানাম জপ করে মমতা নিজেদের বিনাশ আটকাতে চাইলেও তা পারবেন না।’’ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘পুজো নিয়ে ক্লাব দখলের রাজনীতি আগে হয়েছে। বিজেপি এখন শুরু করেছে ধর্মীয় রাজনীতি। দুটোই আপত্তিকর। পুজো হোক স্বাস্থ্যবিধি মেনে।’’ কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্যের অভিযোগ, ‘‘দুর্গাপুজোর মতো জাতীয় উৎসবেও বিজেপি ও তৃণমূল উভয় দল ধর্মীয় রাজনীতির হিসেব কষছে।’’

কোভিডের জন্য আমাদের উৎসব উদ্‌যাপন অনেক বিধিনিয়মে বাঁধা পড়েছে। কিন্তু দুর্গাপুজোর উদ্দীপনাকে কোনও ভাবেই নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

উত্তরবঙ্গ সফর থেকে ফিরেই ২৫ সেপ্টেম্বর পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে প্রতি বারের মতো বৈঠক করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ওই বৈঠকে পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে থাকবেন পুলিশ, পুরসভা, দমকল, সিইএসসি-সহ সরকারের বিভিন্ন দফতরের প্রতিনিধিরা। সাধারণ ভাবে এই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী পুজো সংক্রান্ত বিভিন্ন সরকারি নির্দেশ, আচরণবিধি এবং ক্লাবগুলির করণীয় নিয়ে আলোচনা করে থাকেন। সেখান থেকে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: টিম পিকে-র হাত ধরে পাল্টা দিচ্ছে তৃণমূলও

এ বার করোনা পরিস্থিতিতে পুজো উদ্যোক্তাদের মধ্যেও বহু সংশয় ও প্রশ্ন আছে। মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য ইতিমধ্যেই ক্লাবগুলিকে বলেছেন, মূল মণ্ডপ ছাড়া পূজা-প্রাঙ্গণের বাকি অংশ যেন খোলামেলা থাকে। যাতে দর্শনার্থীরা সহজে চলাফেরা করতে পারেন, অঞ্জলি দিতেও ঠেলাঠেলি না হয়।

তবে উৎসবের মেজাজে কোনও ঘাটতি যে তিনি রাখতে চান না মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের টুইট-বার্তায় সেটা পরিষ্কার। তিনি বলেছেন, প্রতিটি ঘরে যাতে উৎসবের আলো জ্বলে এবং উৎসবের আনন্দ থেকে কেউ বঞ্চিত না হন, সেই প্রতিশ্রুতি তিনি দিচ্ছেন।

আরও পড়ুন: মাওবাদীদের রুখতে নতুন বঙ্গ বাহিনী ‘স্ট্র’

একটি প্রশ্নের নিরসন অবশ্য এ দিন পর্যন্ত হয়নি। রেড রোডে যদি বিসর্জনের কার্নিভাল হয়, সেখানে স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা যাবে কি?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE