নিমতৌড়িতে শুভেন্দু অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র
বিধায়কপদ ছাড়ার পর শুভেন্দু অধিকারী বলে দিলেন, ‘‘আমার জনশক্তি আছে। ওই শক্তিই আসল শক্তি।’’ বৃহস্পতিবার তমলুকের নিমতৌড়ির সভার অব্যবহিত পরে প্রশ্নের জবাবে শুভেন্দু ওই বার্তা দিয়েছেন। কিন্তু বিধায়কপদ ছেড়ে তাঁর কেমন লাগছে, নিজেকে ‘মুক্ত’ বলে মনে হচ্ছে কি না, সেই সব প্রশ্নের জবাবেই শুভেন্দু উঁচুগলায় একটি শব্দই বলেছেন— বন্দেমাতরম।
নিমতৌড়ির সভা ছিল একেবারেই অরাজনৈতিক। তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ওই সভায় গিয়েছিলেন শুভেন্দু। মাত্রই পাঁচমিনিটের সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা করেন তিনি। তার পর শোভাযাত্রায় হাঁটতে শুরু করেন। প্রতি বছরই এই দিনটি শুভেন্দু পালন করেন। কিন্তু এ বার তাঁকে ঘিরে আগ্রহ এবং উত্তেজনা স্বভাবতই অনেক বেশি। এই সভা থেকে শুভেন্দু কী বলেন, তা নিয়ে একটা কৌতূহল রাজ্যের বিভিন্ন মহলে তৈরি হয়েছিল। কিন্তু প্রত্যাশিত ভাবেই শুভেন্দু খুব একটা রাজনৈতিক ভাষণের দিকে যাননি। তবে বলবেন না-বলবেন না করেও যেটুকু বলেছেন, তাতেও বার্তা রয়েছে বৈকি!
শুভেন্দু তাঁর বক্তৃতায় তমলুকে ২১ মাসের জাতীয় সরকারের স্মৃতিচারণ করেছেন। বলেছেন, ‘‘ওই একুশ মাসের সরকারকে বৃটিশরা ফেলে দিতে পারেনি। প্রতিবছর এই দিনটি উদ্যাপিত হয়। এ বার অনেক বেশি সংবাদমাধ্যমের লোক এসেছেন। যারা এই ইতিহাস জানে না, তারা শুধু ভোট চায়!’’ এর পরেই শুভেন্দু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বলেছেন, ‘‘ভোট চাই, ভোট দাও, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও, জ্বালিয়ে দাও, পুড়িয়ে দাও— শুধু এর মধ্যে আটকে থাকলে চলবে না। বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আছে। থাকবে। কিন্তু তার সঙ্গে এই ইতিহাসও থাকবে।’’
আরও পড়ুন: বিধায়ক পদ ছেড়ে প্রথম সভায় শুভেন্দু, কলকাতার বাড়ির সামনে দিদির পোস্টার
শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি আবার ‘ভোটপ্রার্থী’দেরই বিঁধেছেন। অর্থাৎ, যাঁরা শুধু ভোটের সময় বিভিন্ন স্থানীয় কর্মসূচিতে আসেন, তাঁদের নিশানা করেছেন। পাশাপাশিই তিনি বিরোধিতা করেছেন ‘নেতির রাজনীতির’ও। অর্থাৎ, বলেছেন, বহুদলীয় গঠনমূলক গণতন্ত্রের কথা। প্রসঙ্গত, শুভেন্দু বারবারই রাজ্যে ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা’র কথা বলতে শুরু করেছিলেন। বিভিন্ন ‘অরাজনৈতিক’ সভা থেকেও তিনি এই বার্তাই দিয়েছেন। নিমতৌড়ির সভাও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
আরও পড়ুন: ধর্ম নির্বিশেষে একই হোক বিবাহ বিচ্ছেদ আইন, সওয়াল সুপ্রিম কোর্টের
অতি সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা শেষ করে শুভেন্দু হাতে জাতীয় পতাকা নিয়ে হাঁটতে শুরু করেন। তাঁর একেবারে পাশে ছিলেন অধুনা তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত এবং তাঁর অন্যতম ঘনিষ্ঠ নেতা কণিষ্ক পণ্ডা। ছিলেন ঢাক-ঢোল-কাঁসরঘন্টা নিয়ে বহু মানুষ।
বক্তৃতার শেষে শুভেন্দু জানান, ওই পদযাত্রার পর তিনি প্রস্থান করবেন। কারণ, তাঁর কথায়, ‘‘আমার সারাদিন আরও নানা কর্মসূচি রয়েছে।’’ সূত্রের খবর, শুভেন্দু কলকাতায় আসতে পারেন। সেখানে তাঁর সঙ্গে উত্তরবঙ্গের কয়েকজন ‘বিক্ষুব্ধ’ তৃণমূল নেতার বৈঠক হওয়ার কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy