Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Sadhan Pande

শুভেন্দুর বার্তা রাজীব, সাধনকে

পশ্চিম মেদিনীপুরের সদর শহর মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভায় গত ১৯ ডিসেম্বর বিজেপির হাত ধরেছেন শুভেন্দু।

দাঁতনে বিজেপির কর্মসূচিতে শুভেন্দু অধিকারী। নিজস্ব চিত্র

দাঁতনে বিজেপির কর্মসূচিতে শুভেন্দু অধিকারী। নিজস্ব চিত্র

বিশ্বসিন্ধু দে
দাঁতন শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:৪৮
Share: Save:

‘ভাইপো’র বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আক্রমণ চলছে। এ বার তাতে নতুন মাত্রা জুড়লেন শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূলের বিরুদ্ধে তাঁর আন্দোলনে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো মন্ত্রীদের নাম করে সঙ্গে থাকার ডাক দিলেন সদ্য বিজেপিতে যাওয়া এই নেতা। রবিবার দাঁতনের সভা থেকে ছেড়ে আসা দলের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে গিয়ে শুভেন্দুর মুখের ভাষাও বাংলা থেকে হিন্দিতে বদলেছে। ‘ভাইপো’ হয়েছে ‘ভাতিজা’, আর ‘তোলাবাজি’ হয়েছে ‘ভাতিজা ভেট’! কেন এতদিন এত অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও চুপ ছিলেন, তাঁর ব্যাখ্যা দিয়ে দলবদলু এই নেতা বলেছেন, ‘‘এখন (তৃণমূলকে) তাড়ানোর সময় হয়েছে, তাই বলছি।’’

পশ্চিম মেদিনীপুরের সদর শহর মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভায় গত ১৯ ডিসেম্বর বিজেপির হাত ধরেছেন শুভেন্দু। তারপর এ দিনই এই জেলায় ছিল তাঁর প্রথম কর্মসূচি। ভিড়ে ঠাসা মিছিল শেষে দাঁতনের সরাইবাজারের সভা থেকে শুভেন্দু বলেন, ‘ওই দক্ষিণ কলকাতার চারটে-পাঁচটা লোকের জন্য বাইশটা তৃণমূলের সাংসদ। চল্লিশটা মন্ত্রীর আঠারোজনের বাড়ি ওইখানে। আর আমরা বানের জলে ভেসে এসেছি না!’’ তারপরই তাঁর আহ্বান, ‘‘দক্ষিণ কলকাতার গুটিকয় লোকের বিরুদ্ধে এই লড়াই গ্রামের লড়াই, জেলার লড়াই। উত্তর কলকাতাকে, পুরনো কলকাতাকে বলব, সঙ্গ দিন। আপনার জেলা বাটখারা মন্ত্রী পেয়েছে। হাওড়াকে বলব, পাঁচশো বছরের প্রাচীন শহর সঙ্গ দিন।’’ এর পরেই জেলার মন্ত্রীদের ‘বঞ্চনা’ প্রসঙ্গে রাজীব বন্দোপাধ্যায়ের নাম নেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘আমি কোনও দিন শুনিনি একজন অনগ্রসর দফতরের মন্ত্রী কখনও ওই সম্প্রদায়ের লোকের বাইরে হয়। মাঝখানে রাজীব বন্দোপাধ্যায়কে করে দিয়েছিল।’’

উল্লেখ্য, ক’দিন আগেই শুভেন্দু-অনুগামীদের ঢঙেই হাওড়ার মন্ত্রী রাজীবের নামে পোস্টার পড়েছিল তাঁর নিজের জেলা, এমনকি কলকাতাতেও। তারপর ‘বেসুরো’ রাজীবকে নিয়ে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বার কয়েক আলোচনাতেও বসেছেন। এই আবহে রাজীবের নাম নিয়ে হাওড়াকে সঙ্গে থাকার যে ডাক শুভেন্দু দিলেন, তা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আর উত্তর কলকাতার ‘বাটখারা মন্ত্রী’ হিসেবে ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পান্ডেকে শুভেন্দু ইঙ্গিত করেছেন বলে রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের ধারণা। এ বিষয়ে রাজীববাবুর প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তাঁকে ফোন করে পাওয়া যায়নি। মেসেজেরও উত্তর দেননি তিনি। আর সাধনবাবু বলেন, ‘‘কে কী বললেন, তা নিয়ে আমার কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। আমার দফতর নিয়ে কখনও আমার যদি কিছু বলার থাকে, তা আমি নিজেই বলব।’’

এ দিনও নাম না করে বারবার তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধেছেন শুভেন্দু। সেই সূত্রেই ভাইপোর বদলে তাঁর মুখে শোনা গিয়েছে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের মতো হিন্দি লব্জ— ভাতিজা। মিছিলে ‘তোলাবাজ হটাও’ স্লোগান তোলার পরে সভায় শুভেন্দু বলেছেন, ‘‘সবুজসাথীর ভাঙা সাইকেল সারাতে চারশোটাকা। ওটা ভাতিজা ভেট।’’ ডায়মন্ডহারবারের সাংসদের নাম না করে শুভেন্দুর কটাক্ষ, ‘‘২০১১ সালের পরে তৃণমূল করতে এসেছেন। কী ভাবে ডায়মন্ডহারবারে জিতেছেন সবাই জানে। আর এখন বড় বড় কথা বলছেন।’’ তারপরই তাঁর চ্যালেঞ্জ, ‘‘আমি ডায়মন্ডহারবার বিজেপির সাংগঠনিক জেলাকে বলব, কাউকে ডাকতে হবে না। শুধু আমাকে ডাকবেন। আমি সভা করতে যাব।’’

পুরনো দলকে ‘ছিন্নমূল’ বলে আক্রমণ করতেও শোনা যায় শুভেন্দুকে। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘ওখানে একজনেরই পোস্ট, বাকি সব ল্যাম্প পোস্ট।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sadhan Pande Suvendu Adhikari Rajiv Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE