Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

‘মুশকিল আসান নয় প্রতিষেধক’ 

প্রতিষেধক এলেও মাস্ক, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, দূরত্ব মেনে চলা জরুরি।

ছবি রয়টার্স।

ছবি রয়টার্স।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৩৪
Share: Save:

শীঘ্রই আসিতেছে!

কোভিড ভ্যাকসিন নিয়ে বিশ্বের কোনও না কোনও প্রান্ত থেকে প্রায় প্রতিদিনই শোনা যাচ্ছে এমন রব। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার দেশ-বিদেশের করোনা বিশেষজ্ঞেরা জানিয়ে দিলেন, কোভিড নিয়ন্ত্রণে ভ্যাকসিন আরও একটি রক্ষাকবচ মাত্র। একমাত্র রক্ষাকবচ নয়।

প্রতিষেধক ঘিরে প্রত্যাশার আবহে তৃণমূল স্তরের স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি পৌঁছে দিতে বৃহস্পতিবার দেশ-বিদেশের করোনা বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ওয়েবিনারের আয়োজন করেছিল কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক (সিসিএন)। উপস্থিত ছিলেন লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের প্রফেসর হেইডি লারসন, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইমিউনোলজির প্রফেসর সত্যজিৎ রথ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইমিউনোলজির ফাউন্ডার-ডিরেক্টর পার্থ মজুমদার এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব জেভিআর প্রসাদ রাও।

গত কয়েক মাসে করোনা নিয়ে সচেতনতা প্রচারের পাশাপাশি উল্টো একটি বক্তব্যও সমান তালে প্রচার করার চেষ্টা হয়েছে। তার মূল কথা হল, কোভিড আদতে রোগই নয়। ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি মুনাফার খোঁজে এই ভাইরাসকে মানুষের কাছে ভয়াবহ করে তুলেছে। সেই প্রচার খারিজ করে হেইডি লারসন বলেন, ‘‘কোভিড সাধারণ নিউমোনিয়ার মতো নয়। মানবদেহে এর একটা সুদূরপ্রসারী প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।’’

সাধারণত যে কোনও রোগের প্রতিষেধক তৈরির পিছনে কয়েক বছরের গবেষণা থাকে। কিন্তু কোভিডের ক্ষেত্রে এত দ্রুত তার আগমনবার্তা শোনা যাচ্ছে কেন? লারসেন জানান, অতিমারির মোকাবিলায় প্রতিষেধক তৈরির জন্য আগে কোনও বিশ্ব আর্থিক তহবিল ছিল না। ইবোলার পরে যা গঠন করা হয়। একইসঙ্গে এখন হাতের কাছে এমন আধুনিক প্রযুক্তিও রয়েছে যার সাহায্যে ভাইরাসের জিনোমিক সিকোয়েন্স, তার প্রোটিনকে দ্রুত বোঝা সম্ভব হচ্ছে।

তবে প্রতিষেধক আবিষ্কার মানেই যে মুশকিল আসান নয় তা বোঝাতে পার্থ মজুমদার জানান, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের প্রতিষেধক রয়েছে। কিন্তু প্রতি বছর তাতে বদল ঘটাতে হয়। কারণ, মিউটেশনের জন্য ভাইরাসের গঠন পরিবর্তিত হয়। আর সত্যজিৎ রথ বলেন, ‘‘কোভিডের প্রতিষেধক আবিষ্কার হলে সেটি হবে প্রথম প্রজন্মের ভ্যাকসিন। প্রথম প্রজন্মের ভ্যাকসিন ৫০-৭০ শতাংশ কাজ করলেই মনে করা হয় বিরাট ব্যাপার। ফলে প্রতিষেধক নিলাম মানেই অতিমারি সেরে গেল, তা নয়। প্রতিষেধক এলেও মাস্ক, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, দূরত্ব মেনে চলা জরুরি।’’

অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সবার কাছে রাতারাতি ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়া সম্ভব নয়। ফলে কাদের ভ্যাকসিন দেওয়া সবচেয়ে জরুরি, তা চিহ্নিত করা দরকার। কলকাতা পুর এলাকায় কো-মর্বিডিটির তালিকা তৈরি করছে সিসিএন। অভিজিৎ বলেন, ‘‘এই তালিকা সারা রাজ্যে, সারা দেশে করা উচিত। সেই তালিকা মেনে যাঁর ভ্যাকসিনের সত্যিই প্রয়োজন তিনি যাতে তা পান, সেটিও নিশ্চিত করতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE