Advertisement
০২ জুন ২০২৪
West Bengal Lockdown

লকডাউনে প্রতিবাদ, গ্রেফতার বিমানেরা

করোনা পরিস্থিতিতে আলোচনার দরজা যখন খোলা রয়েছে, সেই সময়ে এ ভাবে প্রতিবাদের রাস্তায় গিয়ে বাম নেতারা ‘রাজনৈতিক ফায়দা’ তুলতে চাইছেন বলে অভিযোগ করেছেন শাসক তৃণমূল নেতৃত্ব।

প্রতিবাদী: গ্রেফতার হওয়ার আগে অবস্থান বিমান বসুর। শনিবার রেড রোডে। —নিজস্ব চিত্র

প্রতিবাদী: গ্রেফতার হওয়ার আগে অবস্থান বিমান বসুর। শনিবার রেড রোডে। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২০ ০৫:২৮
Share: Save:

লকডাউন ভেঙে প্রতিবাদে নামায় রাস্তা থেকে গ্রেফতার হলেন বিমান বসু-সহ গোটা বাম নেতৃত্ব। প্রতিবাদ-আন্দোলন করতে গিয়ে বহু বার গ্রেফতার হলেও সাতের দশকের পরে এই প্রথম লালবাজারের লক আপে যেতে হল বিমানবাবুকে। কয়েক ঘণ্টা পরে লালবাজার থেকেই ছাড়া পেয়েছেন তাঁরা। করোনা পরিস্থিতিতে আলোচনার দরজা যখন খোলা রয়েছে, সেই সময়ে এ ভাবে প্রতিবাদের রাস্তায় গিয়ে বাম নেতারা ‘রাজনৈতিক ফায়দা’ তুলতে চাইছেন বলে অভিযোগ করেছেন শাসক তৃণমূল নেতৃত্ব।

আরও বেশি করোনা পরীক্ষা, সঠিক তথ্য প্রকাশ এবং ‘দুর্নীতি ও কালোবাজারি’ বন্ধ করে পরিযায়ী শ্রমিক-সহ বিপন্ন সব মানুষের কাছে রেশন ও ত্রাণ পৌঁছনোর দাবিতে শনিবার রেড রোডের ধারে অম্বেডকর মূর্তির সামনে গলায় ও হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে নীরব প্রতিবাদে শামিল হয়েছিলেন সিপিএম এবং বামফ্রন্টের শরিক ও সহযোগী দলগুলির নেতারা। লকডাউনের মধ্যে ‘রেড জোনে’ এমন কর্মসূচি করা উচিত হবে না বলে এন্টালির বদলে রেড রোডে সরিয়ে আনা হয় অবস্থান। আধ ঘণ্টার প্রতীকী প্রতিবাদ শেষ হতেই বিমানবাবুদের গাড়িতে উঠতে বাধা দিয়ে ভ্যানে তোলে পুলিশ। সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তীরা পুলিশকর্মীদের উদ্দেশে প্রশ্ন তোলেন, ‘‘আমাদের চেয়ে অনেক বেশি সংখ্যায় এসে আপনারাই তো লকডাউন ভাঙছেন!’’ বিমানবাবু, সূর্যকান্ত মিশ্র, সেলিম, সুজন, মনোজ ভট্টাচার্য, নরেন চট্টোপাধ্যায়, স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, হাফিজ আলম সৈরানি,সমীর পূততুণ্ড, বাসুদেব বসু-সহ ২৪ জন বাম নেতাকে গ্রেফতার করে লালবাজারে নিয়ে যায় পুলিশ। প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, নিজেদের মধ্যে নেতারা দূরত্ব রেখে দাঁড়ালেও লকডাউনের মধ্যে জমায়েতের সংখ্যা পাঁচের বেশি ছিল বলে পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে।

সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির দাবি, ‘‘ছবিতে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে, গ্রেফতারের সময়ে পুলিশই লকডাউন ভেঙেছে। স্বচ্ছতার সঙ্গে করোনা মোকাবিলা করে দুর্গতদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিক তৃণমূল সরকার। আমাদের নেতাদের গ্রেফতার করে মানুষের মুখ বন্ধ করা যাবে না!’’ বামেদের প্রতিবাদকে সমর্থন জানিয়ে পুলিশি আচরণের নিন্দা করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র ও বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানও।

প্রতীকী প্রতিবাদ শেষ হতেই বাম নেতাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য পাল্টা বলেছেন, ‘‘রাজনৈতিক অস্তিত্ব জাহির করার জন্য বাম নেতাদের এই কাজ অবাঞ্ছিত ও দুর্ভাগ্যজনক। মুখ্যমন্ত্রী বিমানবাবুদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন, ওঁদের চিঠি পেলে নানা বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছেন। করোনা অনেক বড় যুদ্ধ। বিমানবাবুদের কাছে এখনও আবেদন করব সঙ্কীর্ণতা থেকে মুক্ত হওয়ার।’’

আরও পড়ুন: পুলিশ কড়া হতেই ভিড় কমছে রাস্তায়

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ দিন অভিযোগ করেছেন, ‘‘তথ্য ধামাচাপা দেওয়ার জন্য রাতের অন্ধকারে মৃতদেহ সৎকার করে ফেলা হচ্ছে, পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় মানুষের ঝামেলা বেধে যাচ্ছে। লকডাউনে তৃণমূলের লোকজন ত্রাণ বিলি করছে কিন্তু আমাদের জনপ্রতিনিধি ও কর্মীদের বাধা দেওয়া হচ্ছে।’’ পার্থবাবুর জবাব, ‘‘বিজেপি সঙ্কীর্ণ রাজনীতি করছে। আবার বামেরা বিজেপি-বিরোধিতার কথা বলেও কাজে তাদের রাস্তাতেই যাচ্ছে!’’


(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Lockdown Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE