Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বৃষ্টিতে আনাজের ক্ষতি, শীতেরও ফেরার আশা কম

কৃষি আবহবিদেরা বলছেন, এই বৃষ্টিতে চাষের, বিশেষত পেঁয়াজ ও আলুর ক্ষতি হবে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:৫২
Share: Save:

বৃষ্টি কমলেও জাঁকিয়ে শীতের আশা দিচ্ছে না আলিপুর হাওয়া অফিস। আবহাওয়ার দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, আজ, শনিবার থেকে বৃষ্টি কমবে। তবে আকাশ মেঘলা থাকবে। আগামী সপ্তাহের আগে দিন ও রাতের তাপমাত্রার তেমন হেরফের হবে না। তিনি বলেন, ‘‘আগামী সোমবার থেকে রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও ১২-১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকবে।’’ অর্থাৎ আপাতত শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা নেই।

বঙ্গোপসাগরের একটি উচ্চচাপ বলয় এবং একটি অক্ষরেখার দৌলতে গাঙ্গেয় বঙ্গে ভরা পৌষে অবশ্য শুক্রবার রীতিমতো শ্রাবণের মেজাজ দেখা গিয়েছে। দিনভর বৃষ্টি হয়েছে, পথেঘাটে প্যাচপেচে কাদা। মেঘ-বৃষ্টির ফলে দিনের তাপমাত্রাও অনেক নেমে গিয়েছে। ছাতা মাথায় দেওয়ার পাশাপাশি দিনের বেলাতেই টুপি-মাফলারে কান-মাথা ঢেকেছেন অনেকে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এ দিন কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে সাত ডিগ্রি কম। তবে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা (১৫.৮ ডিগ্রি) ছিল স্বাভাবিকের থেকে দু’ডিগ্রি বেশি। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে এ দিন বিকেল পর্যন্ত কলকাতায় ২৬.৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

কৃষি আবহবিদেরা বলছেন, এই বৃষ্টিতে চাষের, বিশেষত পেঁয়াজ ও আলুর ক্ষতি হবে। কারণ, গাছের গোড়ায় জল জমে যাবে। আলু ও পেঁয়াজ চাষের উপরে এই বৃষ্টির প্রভাব পড়লে বাজারে এই সব আনাজের দাম আবার বাড়াতে পারে। তার ফলে বাঙালিকেই ভুগতে হবে। বৃষ্টিতে সর্ষে চাষেরও ক্ষতির আশঙ্কা আছে। ক্ষতি হতে পারে গাজর, কপি, মটরশুঁটি-সহ বিভিন্ন আনাজেরও।

আরও পড়ুন: ‘হিন্দুস্তানি নাগরিকে’র যন্ত্রণা শোনালেন তারিগামি

বৃষ্টি থেমে গেলে ফের শীত ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা করছিলেন শীত-প্রত্যাশীরা। আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম ভারতে জাঁকিয়ে ঠান্ডা না-পড়লে উত্তুরে বাতাস কনকনে ঠান্ডা বয়ে আনবে না। আর এই মুহূর্তে উত্তর ভারতের পাহাড়ে তুষারপাত বিশেষ হচ্ছে না। উত্তর ভারতের সমতল এলাকাতেও খুব মারাত্মক ঠান্ডা নেই। আবহাওয়া দফতরের এক বিজ্ঞানীর কথায়, ‘‘দিল্লি যদি ঠান্ডা হয়, তবেই কলকাতা জব্বর শীত পাবে।’’

মৌসম ভবন সূত্রের খবর, কয়েক দিন আগেই শীতে রেকর্ড করেছে দিল্লি। এ দিন তার থেকে তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। শুক্রবার দিল্লিতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৭.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, লখনউয়ে ১৩ ডিগ্রি। রাঁচী, পটনার সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও ১২ ডিগ্রির কাছেপিঠে রয়েছে। আবহবিজ্ঞানীদের একাংশের মতে, উত্তুরে হাওয়ার পথে কিছু বাধা রয়েছে। তার ফলেই চটজলদি শীতের দাপুটে মেজাজ দেখা যাবে না। তবে আবহবিজ্ঞানীদের কেউ কেউ আশা একেবারে ছেড়ে দিতে রাজি নন। তাঁরা জানাচ্ছেন, একটি পশ্চিমি ঝঞ্ঝার (ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা থেকে বয়ে আসা ঠান্ডা ও ভারী জোলো হাওয়া) প্রভাবে কাশ্মীরে তুষারপাত হচ্ছে। ওই ঝঞ্ঝা কেটে গেলেই ফের উত্তুরে হাওয়া ফের শীত বয়ে আনতে পারে।

আরও পড়ুন: ভাবমূর্তিতেই টিকিট পুরভোটে, কলকাতায় বার্তা দিল তৃণমূল

সূচনায় হোঁচট খেলেও পরে শীত রীতিমতো স্বমূর্তি ধরেছিল। তার পরে অকালবর্ষণে পরিস্থিতি অনেকটা বদলে যায়। পৌষের শেষ লগ্নে শীত আবার ঝোড়ো ইনিংস খেলবে, সেই আশাতেই বুক বাঁধছে বাঙালি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE