সোমবার গভীর রাতে জোরালো ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল জাপান। জাপানের উত্তর-পূর্বাংশ প্রদেশ (যা সে দেশে প্রিফেক্টর নামে পরিচিত) আইওয়েটের বিস্তীর্ণ এলাকায় কম্পন অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৬। সোমবার রাত স্থানীয় সময় অনুযায়ী সওয়া ১১টা নাগাদ আইওয়েট প্রদেশ বরাবর প্রশান্ত মহাসাগর উপকূলে কম্পনটি হয়। ভূকম্পনের এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত বহু মানুষ আহত হয়েছেন বলে খবর।
আরও পড়ুন:
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার রাতে হোনশুর উত্তর প্রান্ত থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে ভূমিকম্পটি আঘাত হানার পর উপকূলীয় বেশ কয়েকটি শহরে সুনামির ঢেউ ওঠে। তবে সেগুলি খুব বড় ছিল না। কোনও কোনও উপকূলীয় এলাকায় সুনামির ঢেউ ৭০ সেন্টিমিটার (২৮ ইঞ্চি) পর্যন্ত উঠেছিল। ৭০ সেন্টিমিটার উচ্চতার একটি ঢেউ আওমোরির দক্ষিণে আইওয়েটের কুজি বন্দরে আঘাত হানে। উপকূলীয় অন্য অনেক এলাকায় ৫০ সেন্টিমিটার উচ্চতার ঢেউ রেকর্ড করা হয়েছে। জাপানের আবহাওয়া দফতরের তরফে প্রথমে জানানো হয়েছিল ভূমিকম্পের কারণে সুনামির ঢেউ তিন মিটার পর্যন্ত উঠতে পারে। পরে সেই সতর্কতা প্রত্যাহার করা হয়।
আরও পড়ুন:
সোমবার রাতে ভূমিকম্পের জেরে অন্তত ২৩ জন আহত হয়েছেন বলে খবর। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কম্পনের ফলে ভারী বস্তু গায়ে পড়ে যাওয়ার কারণে আহত হন তাঁরা। হাচিনোহেতে একটি হোটেলে বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন। তোহোকুতে এক জন গাড়ি সমেত একটি গর্তে পড়ে যাওয়ার কারণে আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
ভূমিকম্পনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই সতর্কতা জারি করেছে টোকিয়ো। প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মিনোরু কিহারা বাসিন্দাদের উঁচু এবং নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রায় ৮০০টি বাড়ি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। কিছু স্থানীয় ট্রেন পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতেও সুরক্ষা পরীক্ষা শুরু করেছে। জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী শিনজিরো কোইজুমি জানিয়েছেন, প্রায় ৪৮০ জন মানুষ হাচিনোহে বিমান ঘাঁটিতে আশ্রয় নিয়েছেন এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ক্ষয়ক্ষতি বোঝার জন্য ১৮টি হেলিকপ্টার মোতায়েন করেছে। শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজও।
আরও পড়ুন:
জাপানের সোমবারের ভূমিকম্পের ভয়াবহতা ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে প্রকাশ্যে এসেছে। নেটমাধ্যমে ভাইরাল ভিডিয়োগুলিতে দেখা গিয়েছে, ভূমিকম্প আঘাত হানার পর বিভিন্ন এলাকায় বাড়িঘর এবং যানবাহন বিপজ্জনক ভাবে দুলছে। বিপজ্জনক ভাবে দুলছে বৈদ্যুতিক খুঁটিও। এ ছাড়াও কিছু কিছু বাড়িতে ভূমিকম্পের ফলে জিনিসপত্র তছনছ হয়ে যাওয়ার ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। প্রকাশ্যে এসেছে, আতঙ্কে মানুষজনের চিৎকারের ভিডিয়োও। যদিও সেই ভিডিয়োগুলির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম।
ভাইরাল সেই ভিডিয়োগুলির কয়েকটি পোস্ট করা হয়েছে ‘ট্রাইডেন্ট’ এবং ‘সেভেননিউজ় অস্ট্রেলিয়া’ নামের এক্স হ্যান্ডল থেকে। ইতিমধ্যেই বহু মানুষ দেখেছেন সেই ভিডিয়ো। লাইক এবং কমেন্টের বন্যা বয়ে গিয়েছে। ভিডিয়োটি দেখে নেটগরিকদের অনেকে যেমন উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, তেমনই আবার বিস্ময়ও প্রকাশ করেছেন অনেকে।