কেউ মাথায় তুলেছেন চাকা লাগানো চেয়ার, কেউ পালাচ্ছেন কম্পিউটার তুলে। কেউ আবার সেই কম্পিউটারই মাটিতে আছড়ে ভাঙছেন। মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীরা নেপালের পার্লামেন্ট ভবনে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পরে তেমনই দৃশ্য ধরা পড়ল। সেই ঘটনার একটি ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে। ভাইরাল হয়েছে ভিডিয়োটি। যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম।
আরও পড়ুন:
ছাত্র-যুব গণবিক্ষোভের রোষে পুড়ছে নেপাল। মঙ্গলবার রোষের আগুন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশ জুড়ে। বহু সরকারি ভবন, নেতা-মন্ত্রীদের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ভাঙচুর করা হয় সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট এবং পার্লামেন্ট ভবনে। পরে পার্লামেন্ট ভবনে আগুনও ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভকারীদের অনেকেই পার্লামেন্ট ভবনের চেয়ার, কম্পিউটার-সহ অন্যান্য জিনিসপত্র বাইরে নিয়ে আসেন। মাটিতে আছড়ে ভেঙে ফেলেন, আগুন ধরিয়ে দেন। কেউ কেউ জিনিসপত্র লুট করে পালান বলেও খবর। সে রকমই একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে।
ভাইরাল ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, নেপালের পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে একটি চাকা লাগানো চেয়ার মাথায় তুলে উল্লাস করছেন এক তরুণ। অন্য এক তরুণ আবার কম্পিউটারের সিপিইউ এবং কিবোর্ড তুলে পালাচ্ছেন। পার্লামেন্ট ভবনের একাধিক কম্পিউটার-সিপিইউ তুলে এনে মাটিতে আছড়ে ভাঙতেও দেখা গিয়েছে বিক্ষোভকারীদের একাংশকে। সেই ভিডিয়োই প্রকাশ্যে এসেছে। এ ছাড়াও নেপালের সদ্যপ্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ওলির বাসভবন ভাঙচুরের একাধিক ভিডিয়োও প্রকাশ্যে এসেছে। ভিডিয়ো দেখে অনেকেই মাস কয়েক আগে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া বিক্ষোভের মিল পেয়েছেন। সেখানেও সরকারি ভবনে ভাঙচুর করে লুটপাট করার ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছিল।
আরও পড়ুন:
ভাইরাল ভিডিয়োটি পোস্ট করা হয়েছে ‘মহিমা যাদব’ নামের এক্স হ্যান্ডল থেকে। ইতিমধ্যেই বহু মানুষ দেখেছেন সেই ভিডিয়ো। লাইক এবং কমেন্টের বন্যা বয়ে গিয়েছে। মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নেটাগরিকেরা।
ছাত্র-যুব বিদ্রোহে অশান্ত নেপাল। সমাজমাধ্যমের উপর নেপাল সরকারের নিষেধাজ্ঞার পরই অশান্তির আগুন ছড়াতে শুরু করে ভারতের পড়শি দেশে। সোমবার থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ অন্য চেহারা নেয় মঙ্গলবার। সমাজমাধ্যমের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেও কোনও লাভ হয়নি। অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে নেপাল। দুর্নীতি, স্বজনপোষণ, আর্থিক বৈষম্যের মতো বিষয়গুলি সামনে চলে আসে। আন্দোলনকারীদের রোষের মুখে পড়ে নেপাল সরকার। নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগও বিক্ষোভ থামাতে পারেনি। বুধবার সকাল থেকে নতুন করে উত্তেজনা না ছড়ালেও থমথমে পরিস্থিতি নেপালে।
আরও পড়ুন:
অশান্ত পরিস্থিতিতে মঙ্গলবারই নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন কেপি শর্মা ওলি। প্রধানমন্ত্রী ওলির ইস্তফার পর বর্তমানে নেপালের দায়িত্বে রয়েছে সেনা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে একাধিক পদক্ষেপ করেছে তারা। নেপাল সরকারের প্রধান সচিবালয় ভবন নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সেনাবাহিনী। দেশে লুটপাট চালালে, ভাঙচুর করলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে, এমনটাই জানিয়েছে নেপালের সেনাবাহিনী। দেশের নাগরিকদেরও সহযোগিতা চেয়েছে তারা। সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে নেপাল সরকারের প্রধান সচিবালয় ভবনও।