E-Paper

কলকাতাতেই মারধর বাংলাদেশি বলে, গ্রেফতার ২

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বুধবার রাত ১০টা নাগাদ ঘটনার সূত্রপাত। শিয়ালদহ স্টেশন সংলগ্ন উড়ালপুলের নীচে দোকান রয়েছে দীপকের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২৫ ০৭:৫২
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

মোবাইল ফোনের কভার কেনার সময়ে দরাদরি করা নিয়ে বচসা। যার জেরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কারমাইকেল ছাত্র আবাসের এক আবাসিককে ‘বাংলাদেশি’ বলে অপমান করে মারধরের ঘটনা ঘটেছিল বলে অভিযোগ। তদন্তে নেমে অভিযুক্ত দোকানি দীপককুমার সাউ ও তাঁর কর্মচারী ইমতিয়াজ আলিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বিজেপি-শাসিত বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষীদের ‘হেনস্থা’র অভিযোগ যখন উঠছে, তখন খাস কলকাতায় এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে রাজ্য সরকার ও তৃণমূল কংগ্রেসকে নিশানা করেছেন বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, ধৃতেরা তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতাদের ঘনিষ্ঠ।যদিও রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, “পুলিশ পদক্ষেপ করছে। বাংলায় এই সব অত্যাচার আমরা হতে দেব না।”

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বুধবার রাত ১০টা নাগাদ ঘটনার সূত্রপাত। শিয়ালদহ স্টেশন সংলগ্ন উড়ালপুলের নীচে দোকান রয়েছে দীপকের। সেই দোকানেই মোবাইলের কভার কিনতে যান কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কারমাইকেল ছাত্র আবাসের আবাসিক মহম্মদ জাহিদ। বিদ্যাসাগর কলেজের পড়ুয়া জাহিদের সঙ্গে মোবাইলের কভারের দাম নিয়ে দোকানির বচসা বাধে। মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা ওই পড়ুয়াকে ‘বাংলাদেশি’ বলে অপমান করে দীপক হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ। জাহিদকে মারধর করা হয় বলেও তাঁর দাবি। ওই পড়ুয়া রাতে ছাত্রাবাসে ফিরে বাকি আবাসিকদের ঘটনার কথা জানালে তাঁরা ওই দোকানে যান। তখন দীপক আরও লোকজন জুটিয়ে ওই পড়ুয়াদের উপরে চড়াও হন এবং লাঠি, রড, হকি স্টিক এবং ছুরি নিয়ে তাঁদের বেধড়ক মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। ১২ জন পড়ুয়া আহত হন। দু’জনের আঘাত গুরুতর। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া, আক্রান্ত মাসুম মিয়াঁ বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘বাংলা ভাষায় কথা বললে কেন বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়া হবে, এই প্রশ্ন তুলেই প্রতিবাদ জানাতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ওই ব্যবসায়ী লোকজন জুটিয়ে আমাদের মারধর শুরু করেন। মোবাইলে ভিডিয়ো করতে গেলে ফোন কেড়ে নিয়ে সব মুছে দেওয়া হয়।’’ আক্রান্তদের রাতে এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁরা মুচিপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার ধৃতদের কলকাতার এসিজেএম (২) আদালতে পেশ করা হয়। সরকারি আইনজীবী বলেন, ‘‘প্রহৃত পড়ুয়াদের বাংলাদেশি, রোহিঙ্গা বলা হয়েছে। তাঁদের লাঠি, রড, হকি স্টিক দিয়ে মারা হয়েছে।’’ বিচারক ধৃতদের ২৬ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।

বিজেপির বিধানসভার সচেতক শঙ্কর ঘোষ বলেছেন, “বাংলাদেশি সন্দেহে ‘হেনস্থা’ অভিযোগ উঠলে এত দিন বিজেপির উপরে দায় চাপিয়েছে তৃণমূল। কলকাতায় যা হয়েছে, তার দায় তৃণমূল ও মুখ্যমন্ত্রী নেবেন?” বৃহস্পতিবার প্রতিবাদ মিছিলের পরে কলেজ স্ট্রিট মোড়ে অবরোধ করেছে এসএফআই। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে বলেছেন, “এই ঘটনার দায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। পুলিশ কেন অভিযোগ প্রথমে নিতে চায়নি?” প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অমিতাভ চক্রবর্তীর বক্তব্য, “যে মুখ্যমন্ত্রী বাঙালিদের জন্য গলা ফাটাচ্ছেন, তাঁরই দলের লোকজনের হাতে খাস কলকাতায় বাংলা বলার জন্য পড়ুয়ারা আক্রান্ত হচ্ছেন।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Calcutta University

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy