ভেড়ি পরিদর্শন করছে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র
ম্যানগ্রোভ কেটে তৈরি বেআইনি মেছো ভেড়ি নষ্ট করে ফের সেখানে ম্যানগ্রোভ লাগানোর সিদ্ধান্ত নিল প্রশাসন। ক্যানিংয়ের ডাবু এলাকায় সোমবার ম্যানগ্রোভ কেটে তৈরি বেআইনি মেছো ভেড়ি পরিদর্শন করেন ক্যানিংয়ের মহকুমা শাসক রবিপ্রকাশ মিনা, এসডিপিও গোবিন্দ শিকদার-সহ পুলিশ, প্রশাসন, বনদফতর ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকরা। পরিদর্শনের পরেই বেআইনি ভেড়িগুলিকে নষ্ট করে সেখানে ম্যানগ্রোভ লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবা-সহ সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় বিঘের পর বিঘে জমির ম্যানগ্রোভ কেটে মেছো ভেড়ি তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশাসন প্রাথমিক ভাবে নীরবই ছিল। গত কয়েকদিন ধরে ম্যানগ্রোভ ধ্বংস নিয়ে সংবাদপত্রে লাগাতার প্রতিবেদন প্রকাশের পর টনক নড়ে প্রশাসনের। তাছাড়া বাসন্তীর মুড়োখালি, আনন্দাবাদ মৌজায় ১৪০০ বিঘা জমির ম্যানগ্রোভ কেটে সেখানে মাছের ভেড়ি তৈরির প্রতিবাদ জানিয়ে জনৈক কালাম পৈলান হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার শুনানিতে সম্প্রতি এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে দ্রুত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি সুন্দরবনের যে সমস্ত এলাকায় ম্যানগ্রোভ ধ্বংস করে ভেড়ি তৈরি করা হচ্ছে সেগুলি সম্পর্কে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উচ্চ আদালতের এই নির্দেশের পর জেলা প্রশাসন নড়েচড়ে বসেছে। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে ধরপাকড়। দিন দু’য়েক আগে জেলাশাসকের নেতৃত্বে নজরদারির জন্য বিশেষ কমিটিও গঠন হয়েছে। সেই কমিটির সদস্যরা সোমবার ক্যানিংয়ের ডাবু এলাকায় পরিদর্শনে যান। ঘটনাস্থলে গিয়ে কার্যত চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় তাঁদের। অবিলম্বে বেআইনি ভেড়ি নষ্ট
করার নির্দেশ দেন মহকুমাশাসক। পাশাপাশি গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে এই এলাকায় পুনরায় ম্যানগ্রোভের বনভূমি গড়ে তোলার নির্দেশ দেন তিনি। মহকুমা শাসক বলেন, “একটা অভিযোগ ছিল এই এলাকায় ম্যানগ্রোভ কেটে
ভেড়ি বানানো হয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা এলাকা পরিদর্শন করলাম। যে বেআইনি ভেড়ি তৈরি হয়েছে সেগুলিকে নষ্ট করে এখানে নতুন করে ম্যানগ্রোভ লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” এর পাশাপাশি এ দিন এলাকার সাধারণ মানুষের সঙ্গেও কথা বলেন প্রশাসনের আধিকারিকরা। কাউকে ম্যানগ্রোভ কাটতে দেখলে দ্রুত পুলিশ প্রশাসনকে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁদের। সোমবার বাসন্তীর ভরতগড়ে ম্যানগ্রোভ রক্ষার জন্য এলাকায় প্রচার অভিযান চালায় বাসন্তী থানার পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy