রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর শংসাপত্র দেওয়ার দিনেই সভায় হামলা করে বিরোধী বিধায়ককে মারধর, আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে তাড়া, দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও করে রাখার অভিযোগ উঠল তাঁর দলের বিরুদ্ধে।
বর্ধমানে বুধবার তাঁর আমলের শততম প্রশাসনিক বৈঠকে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, ‘‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বাংলায় অনেক ভাল।’’ সিপিএমের অভিযোগ, এ দিনই উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে তাদের পথসভায় সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দারের উপরে হামলা চালায় তৃণমূল। গুলি ছুড়তে ছুড়তে সভায় হাজির জনতাকে ধাওয়া করা হয়। পুলিশ ছিল দর্শক।
শাসক দল আবার সিপিএমের বিরুদ্ধেই হামলার অভিযোগ তুলেছে। দর্শক হয়ে থাকার অভিযোগ মানেনি পুলিশ। তাদের দাবি, সিপিএম-তৃণমূলের সংঘর্ষে দু’পক্ষের দশ জন আহত। দু’পক্ষই অভিযোগ করেছে। তবে কেউ ধরা পড়েনি।
খবর পেয়ে বামফ্রন্টের ১৬ জন বিধায়ক এ দিন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন। স্পিকার কথা বলেন উত্তর ২৪ পরগনার এসপির সঙ্গে। বাম বিধায়কেরা জানান, নিরাপদবাবুকে নির্বিঘ্নে কলকাতায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য এসপিকে বলেছেন স্পিকার।
‘হামলা’র প্রতিবাদে আজ, বৃহস্পতিবার সন্দেশখালিতে সভা করার কথা রয়েছে বামেদের। সেখানে হাজির থাকতে পারেন সিপিএম নেতা গৌতম দেব। তবে হামলা করার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে জেলা তৃণমূলের নেতা তথা মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মন্তব্য, ‘‘নিরাপদ সর্দারের নেতৃত্বে এ দিন সশস্ত্র মিছিল করেছে সিপিএম। ওঁর নেতৃত্বেই হামলা হয়েছে আমাদের লোকেদের উপরে। গৌতম দেবরা যদি নিরাপদবাবুর সমর্থনে ওখানে সভা করতে যান, তা হলে এলাকার লোক দিয়েই বিধায়ককে এলাকাছাড়া করা হবে।’’
তৃণমূল জমানায় আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে অভিযোগে ২৫ জুলাই সন্দেশখালি থানায় অবস্থান-বিক্ষোভ করার কথা বামেদের। সেই কর্মসূচির প্রচারে এ দিন নিরাপদবাবুর নেতৃত্বে সিপিএম মিছিল করে। ১০টা নাগাদ মিছিল খুলনা বাজারে পৌঁছলে পথসভা শুরু হয় সিপিএমের। আবার ২১ জুলাই ‘শহিদ দিবসে’র প্রস্তুতি উপলক্ষে মিছিল করছিল তৃণমূল। সিপিএমের সভার সামনে দিয়ে তৃণমূলের মিছিল যাওয়ার সময়ে দু’পক্ষের বচসা বাধে।
পুলিশের দাবি, বচসাকে কেন্দ্র করে মারামারি শুরু করে দু’পক্ষ। নিরাপদবাবুর হাত থেকে মাইক কেড়ে নিয়ে মারা হয় বলে অভিযোগ। ভাঙা হয় পথসভার অস্থায়ী মঞ্চটিও। সিপিএমের ফ্ল্যাগ ফেলে দেওয়া হয় পাশের ডাঁশা নদীতে। নিরাপদবাবুর অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের লোকজন গুলি ছুড়তে ছুড়তে ঝাঁপিয়ে পড়ে।’’ বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ ইদ্রিশ আলির দাবি, সিপিএম সমর্থকেরা মুখ্যমন্ত্রীর নামে কুৎসা করছিল। তা শুনে স্থানীয়রাই প্রতিবাদ করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy