Advertisement
E-Paper

ছেলে কী ভাবে স্কুলে ভর্তি হবে, ভেবে আকুল সীমা

দুর্ঘটনার দায় মালিক পক্ষের উপরে চাপিয়েছেন শ্রমিকেরাও। তাঁদের বক্তব্য, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ হয় না বলেই এই অবস্থা। তা ছাড়া, কোনও কারিগরি ত্রুটি দেখা দিলে সে জন্য বিশেষজ্ঞদের ডাকা উচিত ছিল।

সুপ্রকাশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৮ ০১:৩৩
দিশাহারা: সন্তান কোলে অশোক বড়ালের স্ত্রী। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

দিশাহারা: সন্তান কোলে অশোক বড়ালের স্ত্রী। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

ক’দিন বাদেই চার বছরের ছেলের স্কুলে ভর্তি হওয়ার কথা। টাকা-পয়সা জোগাড় করার চেষ্টা করছিলেন বাবা অশোক বড়াল। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে খবর এল, কারখানার ভিতরেই দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে তাঁর।

নৈহাটির হাজিনগরের ‘ইন্ডিয়ান পাল্ট অ্যান্ড পেপার লিমিটেড’ কারখানায় কাজ করতেন অশোক। বাড়ি বীজপুরের বালিভাড়ায়। স্ত্রী সীমা জানালেন, স্বামী ঠিকা শ্রমিক ছিলেন। দিনে মাত্র ১৮০ টাকা মজুরি পেতেন। একমাত্র ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করবেন বলে অনেক আশায় ছিল পরিবারটি। সীমা বলেন, ‘‘সংসারটা ভেসে গেল। ছেলেটাকে নিয়ে পথে বসার জোগাড়।’’ কী ভাবে ছেলে ভর্তি হবে স্কুলে, ভেবে কূল করতে পারছেন না সীমা। কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন তাঁর স্ত্রী। ক্ষতিপূরণের দাবি করেছেন।

দুর্ঘটনার দায় মালিক পক্ষের উপরে চাপিয়েছেন শ্রমিকেরাও। তাঁদের বক্তব্য, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ হয় না বলেই এই অবস্থা। তা ছাড়া, কোনও কারিগরি ত্রুটি দেখা দিলে সে জন্য বিশেষজ্ঞদের ডাকা উচিত ছিল। শ্রমিকদের বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হল কেন? ক্ষতিপূরণের দাবি তুলছেন তাঁরা।

কাগজ কারখানাটিতে সাত-আটশো শ্রমিক কাজ করেন। বেশির ভাগই ঠিকা শ্রমিক। অনেকের বাড়ি ভিন্‌ রাজ্যে। মিঠুন কুমার উত্তরপ্রদেশের রামপুরের বাসিন্দা। উদয়রাজ সিংহের বাড়ি সে রাজ্যেরই মোরাদাবাদে। মহম্মদ নাজিম থাকতেন উত্তরাখণ্ডের কাশীপুরে। বাকি তিনজন স্থানীয় বাসিন্দা। অমিতকুমার যাদব এবং বিজয় বেম্বাসি হাজিনগরেরই বাসিন্দা।

শেষ পর্যন্ত কুয়োর উপরে উঠে আসার চেষ্টা চালিয়েছিলেন অমিত, জানাচ্ছেন তাঁর সহকর্মীরা। অনেক দূর উঠে এসেও শেষমেশ মাথা ঘুরে পড়ে যান বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

পুলিশ জানতে পেরেছে, ছ’জনের পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ছিলেন অমিতই। কাগজ কারখানায় ঠিকা ‌শ্রমিকের কাজ করতেন। যে সময়ে হাতে কাজ থাকত না, তখন রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ কিংবা খালাসির কাজ খুঁজে নিতেন বলে পরিবার সূত্রের খবর।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় বিধায়ক পার্থ ভৌমিক পৌঁছে গিয়েছিলেন। দেহ উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত ছিলেন সেখানেই। মৃতেরা যাতে ক্ষতিপূরণ পায়, সে ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

Factory Workers Death
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy