Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Hasnabad

হাফ প্যান্ট, স্যান্ডো গেঞ্জি পরে টহল পুলিশের, ধরা পড়ল দুই অপহরণকারী

অভিযোগ, সেখান থেকে কয়েকজন তাঁকে মারধর করে তুলে নিয়ে যায়। রাত ১টা নাগাদ বিশ্বজিৎ তাঁর ফোন থেকে বাড়ির পাশের এক আত্মীয়কে জানান, তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে।

পুলিশের জালে ধৃতেরা। ছবি: নবেন্দু ঘোষ

পুলিশের জালে ধৃতেরা। ছবি: নবেন্দু ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাসনাবাদ শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২২ ০৮:৪৫
Share: Save:

ফাঁদ পেতে দুই অপহরণকারীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। উদ্ধার হয়েছেন অপহৃত ব্যক্তি। শুক্রবার রাতে হাসনাবাদ থানার মুরারিশা এলাকার ঘটনা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, মুরারিশা পঞ্চায়েতের রাঘবপুরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ সরকার সম্প্রতি বাড়ি তৈরি করছিলেন। বাড়ির নির্মাণ সামগ্রী পাহারা দেওয়ার জন্য রাতে থাকতেন নির্মীয়মাণ বাড়িতেই। বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ আসেন সেখানে।

অভিযোগ, সেখান থেকে কয়েকজন তাঁকে মারধর করে তুলে নিয়ে যায়। রাত ১টা নাগাদ বিশ্বজিৎ তাঁর ফোন থেকে বাড়ির পাশের এক আত্মীয়কে জানান, তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে। ১০ লক্ষ টাকা না দিলে খুন করা হবে তাঁকে। অপহরণকারীও সে কথা জানায় ফোনে।

টাকা নিয়ে বসিরহাট থানার হিজল ব্রিজের কাছে আসতে বলা হয়। রাতেই হাসনাবাদ থানার পুলিশকে ঘটনার কথা জানান বিশ্বজিতের ছেলে শুভজিৎ সরকার।

পুলিশের দু’টি দল বেরিয়ে পড়ে। সাহায্য নেওয়া হয় বসিরহাট থানার পুলিশেরও। বিশ্বজিতের ফোনের টাওয়ার লোকেশনের তথ্য সংগ্রহ করে পুলিশ। তদন্তকারীদের কৌশল মতো পরিবার লোকজন বার বার বিশ্বজিতের নম্বরে ফোন করতে থাকেন। মুক্তিপণ কমানোর জন্য জোরাজরি করা হয়।

অনেক দর কষাকষির পরে অপহরণকারীরা দেড় লক্ষ টাকায় বিশ্বজিৎকে মুক্তি দিতে রাজি হয়ে যায়।

এরপরে পুলিশ ঘাস, কাগজ-সহ বিভিন্ন জিনিস দিয়ে নকল টাকার বান্ডিল তৈরি করে। হিজলের ব্রিজের কাছে গিয়ে ফোন করলে দুষ্কৃতীরা জানায়, সেখান থেকে কিছুটা দূরে বসিরহাট থানার শাকচুরা ফতুরআঁটি পোলের কাছে টাকা নিয়ে যেতে। দু’টি বাইকে ৩-৪ জনের বেশি কেউ যেন না আসে, হুঁশিয়ার করা হয়।

সেই মতো দুই পুলিশকর্মী ও দু’জন বাড়ির লোক বাইকে রওনা দেন। পুলিশ আশপাশে ধান খেতে লুকিয়ে ছিল। কয়েকজন পুলিশকর্মী আবার উর্দি ছেড়ে হাফ প্যান্ট, স্যান্ডো গেঞ্জি পরে ঘোরাঘুরি করতে থাকেন।

দুষ্কৃতীরা পাশের একটি বাগান থেকে বেরিয়ে টাকা নিতে আসে। আত্মীয়ের পরিচয়ে পুলিশকর্মীরা দাবি করেন, আগে বিশ্বজিতকে সামনে আনতে হবে। সেই মতো বিশ্বজিৎকে পাশের বাগান থেকে আনে অপহরণকারীরা।

এরপরেই পুলিশকর্মীরা ঘিরে ধরে দু’জনকে ধরে ফেলেন। উদ্ধার করা বিশ্বজিৎকে। ধৃতদের নাম শাহিঙ্গির সর্দার ও জিয়ারুল মোল্লা। বাড়ি বসিরহাট থানার দক্ষিণ বাগুন্ডি গ্রামে।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, বিশ্বজিৎ ভিন্‌ রাজ্য থেকে ফিরে বাড়ি করছেন দেখে তাদের মনে হয়েছিল, তাঁর অনেক টাকা। সে কারণেই অপহরণ করে মুক্তিপণ চায়। হাসনাবাদ থানার আইসি কৃষ্ণেন্দু ঘোষ বলেন, “ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার মূলচক্রীর হদিশ পাওয়া যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hasnabad Kidnaping
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE