Advertisement
E-Paper

মশা মারলে কোল খালি হত না মায়ের

গ্রামে গ্রামে মশার উপদ্রব ও জ্বরের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে মশা মারার তেমন কোনও পদক্ষেপ না হওয়ায় গ্রামবাসীর মধ্যে অসন্তোষ দানা বাঁধছিল। এ বার  গ্রামের এক কিশোর জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ায় তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:০৭
সন্তানহারা: মা। নিজস্ব চিত্র

সন্তানহারা: মা। নিজস্ব চিত্র

গ্রামে গ্রামে মশার উপদ্রব ও জ্বরের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে মশা মারার তেমন কোনও পদক্ষেপ না হওয়ায় গ্রামবাসীর মধ্যে অসন্তোষ দানা বাঁধছিল। এ বার গ্রামের এক কিশোর জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ায় তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। গ্রামবাসীর বক্তব্য, এখনও যদি নিয়মিত ভাবে মশা মারার কাজ শুরু না হয়, তা হলে না জানি আরও কত প্রাণ যাবে।

অশোকনগর থানার হাবরা ২ ব্লকের বাঁশপুল পঞ্চায়েতের হ্যাচারিপাড়ার বাসিন্দা সুজয় বিশ্বাস (১১) শুক্রবার রাতে আরজিকর হাসপাতালে মারা গিয়েছে। কল্যাণগড় বিদ্যামন্দির স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত সে। তিন ভাই বোনের মধ্যে সে-ই ছোট।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কালীপুজোর দিন সুজয় জ্বরে পড়ে। হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতাল থেকে বৃহস্পতিবার তাকে আরজিকরে পাঠানো হয়। সেখানে শুক্রবার রাতে মারা যায় ছেলেটি। ঘটনায় এলাকার মানুষ শোকস্তব্ধ এবং আতঙ্কিত।

সুজয়ের বাবা দুলালবাবু পেশায় ভ্যানচালক। শনিবার দুপুরে বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, ছেলের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন মা সন্ধ্যাদেবী ও দুলালবাবু। বার বার জ্ঞান হারাচ্ছিলেন মা। পড়শিরা সামলানোর চেষ্টা করছিলেন।

দুলালবাবু বলেন, ‘‘গ্রামে জ্বর ছড়িয়েছে। আগে থেকে মশা মারা হলে হয় তো এ ভাবে আমাদের কোল খালি হত না।’’ বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

ওই বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় বৃষ্টির জলে চারিদিক জলমগ্ন। কথা হচ্ছিল স্থানীয় বাসিন্দা সুচিত্রা বিশ্বাসের সঙ্গে। নিজেও জ্বরে ভুগছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ঘরে ঘরে জ্বর। আমার বাড়ির অনেকেও ভুগছে। অথচ মাত্র একদিন পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ব্লিচিং ছড়ানো হয়েছে। মশা মারার তেল বা ধোঁয়া দেওয়া হয়নি।’’ স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, এ দিনই দু’জন জ্বরে আক্রান্তকে অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। বাঁশপুল পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা পরিতোষ মণ্ডল জানালেন, এলাকায় মশা মারার কাজ কার্যত হচ্ছে না। হাবরা ২ ব্লকের শুধু বাঁশপুল পঞ্চায়েত নয়, শ্রীকৃষ্ণপুর, দিঘরা মালিক বেড়িয়া, ভুরকুণ্ডা, গুমা-২ পঞ্চায়েত এলাকাতেও জ্বর ছড়িয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা সুবীর গোলদার বলেন, ‘‘এখানে নিয়মিত মশা মারার কোনও ব্যবস্থা নেই। অথচ জ্বর বেড়ে যাচ্ছে।’’

যদিও অভিযোগ মানতে চাননি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ পাইক। তাঁর দাবি, ‘‘মশা মারতে একটি ফগ মেশিন কেনা হয়েছে। তা দিয়ে ব্লকের আটটি পঞ্চায়েত এলাকায় পর্যায়ক্রমে কামান দাগা হচ্ছে। এ ছাড়া, প্রতিটি পঞ্চায়েত তাদের নিজস্ব স্প্রে মেশিন দিয়ে মশা মারার তেল ছড়াচ্ছে।’’ এলাকায় ঘুরে দেখা গেল, বাড়ির আশেপাশে বহু ডোবা। সেখানে মশার লার্ভা ভেসে বেড়াচ্ছে। ঝোপ-জঙ্গলও আছে।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy