লোপাট: উপরে জঙ্গল সাফ করে তৈরি হচ্ছে ভিড়ি। নীচে, কাঠ-চুরি
নদী চরের ম্যানগ্রোভ জঙ্গল কেটে তৈরি হচ্ছে বেআইনি মেছোভেড়ি। চোরাগোপ্তা ম্যানগ্রোভ কেটে ফেলায় প্রতি মুহূর্তে বিপজ্জনক পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সুন্দরবন।
এক দিকে যেমন নদী বাঁধের ক্ষতি হচ্ছে, তেমনই বিপন্ন হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। সম্প্রতি বাসন্তী ব্লকের ভরতগড় পঞ্চায়েতের আনন্দবাদ মৌজার মাতলা নদীর চরের কয়েকশো বিঘা ম্যানগ্রোভ জঙ্গল কেটে বেআইনি মেছোভেড়ি হয় বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, স্থানীয় অনেক লোকজন জ্বালানি কাঠের জন্য ম্যানগ্রোভ ধ্বংস করছেন। অনেকে আবার ম্যানগ্রোভ গাছ কেটে কাঠ চুরি করে বিক্রি করে দিচ্ছেন। এ সব বিষয়ে প্রশাসনের নজর নেই বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের।
বাসন্তীর বিডিও সৌগত সাহা বলেন, ‘‘বাসন্তীর ওই এলাকায় ম্যানগ্রোভ গাছ কাটা হচ্ছে বলে খবর পেয়েছি। আমি বন দফতরকে বিষয়টি দেখার জন্য জানিয়েছি। বিভিন্ন দফতরের আধিকারিক ও ওই এলাকার জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনায় বসব। সেই মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
বনসৃজন প্রকল্পে বিভিন্ন পঞ্চায়েত বছরের নানা সময়ে নদীর চরে গাছ লাগায়। সুন্দরবনের মাতলা, বিদ্যা, গোমর, হোগল নদীর চরে ম্যানগ্রোভ গাছ লাগিয়েছিল সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদ। আয়লার পরে সুন্দরবনে বিভিন্ন সময়ে সরকার থেকে গাছ লাগানোর প্রকল্প নেওয়া হয়। কিন্তু সেগুলি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জঙ্গল থেকে জ্বালানি সংগ্রহের জন্যও নষ্ট হচ্ছে ম্যানগ্রোভ। আবার ম্যানগ্রোভ কেটে গজিয়ে উঠছে বেআইনি মেছোভেড়ি।
পরিবেশবিদেরা মনে করেন, এ ভাবে ম্যানগ্রোভ ধ্বংস করা হলে সুন্দরবনের নদী বাঁধ দুর্বল হয়ে পড়বে। সে ক্ষেত্রে আয়লার মতো জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায় তলিয়ে যাবে।স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, শাসকদলের মদতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ম্যানগ্রোভ কেটে বেআইনি মেছোভেড়ি তৈরি করা হচ্ছে। বাসন্তীর আনন্দবাদ গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘মাতলা নদীর চরের ম্যানগ্রোভ গাছ কেটে মেশিন দিয়ে মাটি কেটে তৈরি করা হচ্ছে বেআইনি মেছোভেড়ি। স্থানীয় নেতাদের মদতেই এ সব হচ্ছে। বিষয়টি প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে জানিয়েও কাজ হচ্ছে না।’’
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বন বিভাগের ডিএফও সান্তোষা জিআর বলেন, ‘‘এমন কোনও ঘটনার কথা আমার জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। সেই মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’’ ভরতগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান নলিনী সর্দার বলেন, ‘‘এই ভাবে ম্যানগ্রোভ কেটে ফিশারি তৈরি করা সমর্থন করিনা। বিষয়টি আমরা প্রশাসন এবং দলের নেতৃত্বকে জানিয়েছিলাম।’’ — নিজস্ব চিত্র
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy