স্কুলের দেওয়ালে শ্যাওলা ধরেছে। নিজস্ব চিত্র
বহু বছরের পুরনো একতলা স্কুল ভবনটির দীর্ঘদিন কোনও সংস্কার হয়নি। ভবনের ছাদে ফাটল ধরেছে। বৃষ্টি হলে ফাটল চুঁইয়ে জল ঢুকে মেঝেয় জল জমে যায়। দেওয়ালের প্লাস্টার খসে গিয়েছে বেশিরভাগ জায়গায়। মথুরাপুরের খোজখিজির প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিকাঠামো এমনিই বেহাল।
স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৪২ সালে বিদ্যালয়টি সরকারি অনুমোদন পায়। বর্তমানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৩৭। দু’জন শিক্ষক থাকলেও তাঁদের মধ্যে একজন শারীরিক অসুস্থার কারণে প্রায় বছর দু’য়েক ধরে অনিয়মিত হয়ে পড়েছেন। ফলে, বর্তমানে কার্যত একজনই শিক্ষক রয়েছেন স্কুলে। পড়াশোনার পাশাপাশি অন্যান্য কাজও তাঁকেই সামলাতে হয়।
স্কুলে আরও বেশ কিছু পরিকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। ক্লাসঘরগুলি আলাদা করা নেই। একটি হল ঘরেই সব ক্লাস নিতে হয়। একজন মাত্র শিক্ষিকা সমস্ত পড়ুয়াদের সামলাতে গিয়ে নাজেহাল হন। রান্নাঘরটি ক্লাসঘরের একেবারে গা লাগোয়া। গ্যাসের দাম বেশি বলে কাঠের জ্বালানিতেই মিড-ডে মিলের রান্না হয়। ফলে, উনুনের ধোঁয়া শ্রেণি কক্ষে ঢুকে পড়ে। এতে খুদে পড়ুয়াদের চোখমুখ জ্বালা করে, কাশি হয়। ছোটদের খাওয়ার জন্য কোনও ঘর নেই। ফলে ক্লাস ঘরে বা খোলা আকাশের নীচেই খাওয়াদাওয়া করে পড়ুয়ারা। ক্লাসঘর লাগোয়া দুটি শৌচালয় রয়েছে। তবে জল নেই। স্কুলে একটি নলকূপ আছে। সেখান থেকে জল এনে শৌচাগারে ব্যবহার করতে হয়। ছোটদের পক্ষে তা যথেষ্ট কষ্টকর। পড়ুয়ারা ঠিকমতো জল দিতে না পারলে শৌচালয়ের দুর্গন্ধ ক্লাসঘরে ছড়িয়ে পড়ে।
স্কুলের নিজস্ব পাঁচিল নেই। ফলে, স্কুল চত্বরে স্থানীয় বাসিন্দাদের অবাধ যাতায়াত। স্কুলের নলকূপের জল স্থানীয় বাসিন্দারা ব্যবহার করেন। স্কুলের বারান্দায় খড় শুকাতে দেন অনেকে। মাঝেমধ্যে সেখানে গরু, ছাগল বাঁধা থাকে। অনেকসময়ই পশুর মলমূত্রে বারান্দা নোংরা হয়ে যায়। দুর্গন্ধ ছড়ায়। শুধু তাই নয়, রাতের অন্ধকারে স্কুলের বারান্দার বসে মদের আসর।
স্থানীয় এক অভিভাবক বলেন, ‘‘মাত্র একজন শিক্ষিকা স্কুল চালানোর ফলে পড়াশোনা ঠিকঠাক হচ্ছে না। ফলে অনেকেই অন্য স্কুলে ছেলেমেয়েদের ভর্তি করছেন। অবিলম্বে শিক্ষক নিয়োগ না করলে স্কুলের ক্ষতি হবে।’’
ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা কাকলি পুরকাইত হালদার বলেন, ‘‘কার্যত একাই গোটা স্কুল সামলাচ্ছি। একটা শ্রেণির কাজ দিয়ে অন্য ক্লাস নিতে হয়। খুবই সমস্যা হচ্ছে।’’
এই বিষয়ে মথুরাপুর-১ বিডিও তারাশঙ্কর প্রামাণিক বলেন, ‘‘নির্বাচনের সময় ওই বিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। বিদ্যালয়ে মূলত জমি সংক্রান্ত কিছু সমস্যা রয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে সমস্যাগুলি সমাধানের চেষ্টা করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy