Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
minakhan

Minakhan: দুষ্কতীদের দৌরাত্ম্য, আতঙ্কে মিনাখাঁ

সুন্দরবনের প্রবেশপথ হিসেবে মিনাখাঁ পর্যটকদের কাছে পরিচিত। দেউলি, রাজেন্দ্রপুর-সহ কিছু জায়গায় ভাল গেস্টহাউস রয়েছে।

ভেড়ির এই সব আলাঘরে দুষ্কৃতীদের যাতায়াত আছে বলে অভিযোগ ওঠে অনেক সময়ে। নিজস্ব চিত্র

ভেড়ির এই সব আলাঘরে দুষ্কৃতীদের যাতায়াত আছে বলে অভিযোগ ওঠে অনেক সময়ে। নিজস্ব চিত্র

নির্মল বসু 
মিনাখাঁ শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:৪৭
Share: Save:

দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ মিনাখাঁর বাসিন্দারা। বাইরে থেকে আসা পর্যটকেরাও আতঙ্কিত। টাকি থেকে পিকনিক সেরে ফেরার পথে মিনাখাঁ এলাকায় বাসন্তী হাইওয়ে থেকে এক বধূকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠায়, পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ, তা বোঝা যায় বলে দাবি স্থানীয় মানুষের। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী কিছু কর্মীর মদতে মিনাখাঁয় দুষ্কৃতীদের দাপট বাড়ছে।

সুন্দরবনের প্রবেশপথ হিসেবে মিনাখাঁ পর্যটকদের কাছে পরিচিত। দেউলি, রাজেন্দ্রপুর-সহ কিছু জায়গায় ভাল গেস্টহাউস রয়েছে। কলকাতা-সহ রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে, এমনকী রাজ্যের বাইরে থেকেও অনেকে ছুটি কাটাতে ওই সব গেস্টহাউসে আসেন। টাকি, হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জ এবং সন্দেশখালি-সহ সুন্দরবন ভ্রমণে যেতে হলে মিনাখাঁর উপর দিয়ে কলকাতা-বাসন্তী হাইওয়ে ধরতে হয়। ইদানীং পর্যটকদের গাড়ি আটকে তোলাবাজি, গোলমাল পাকানোর ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ আশপাশের এলাকার লোকজনের। এর আগে এই এলাকায় শ্লীলতাহানি, আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে বলেও তাঁদের অভিযোগ। তাঁদের দাবি, সম্প্রতি রাজনৈতিক দলের কিছু কর্মীর মদতে মিনাখাঁর দুষ্কৃতীরা বিভিন্ন মেছোভেড়ি এবং ইটভাটা থেকেও তোলা আদায় করছে। কয়েক মাস আগে মিনাখাঁ থানা থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে টাকি থেকে কলকাতায় যাওয়ার পথে এক পর্যটকের গাড়ি আটকে মহিলার শ্লীলতাহানি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। কলকাতা-বাসন্তী হাইওয়ের বিভিন্ন জায়গায় দুষ্কৃতীরা পর্যটকদের গাড়ি আটকে মাঝে মধ্যেই ছিনতাই করছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। পড়ুয়াদের শ্লীলতাহানি হয়েছে বলেও অভিযোগ। দুষ্কতীদের ভয়ে সব সময়ে সব খবর থানা পর্যন্ত পৌঁছয় না বলেও দাবি স্থানীয় অনেকের। গণধর্ষণের ঘটনায় ধরা পড়েছে মিনাখাঁর কুমারজোল গ্রামের বাসিন্দা সালাম সর্দার, হাবিবুল্লা মোল্লা, সরিফুল গাজি, সুরজিৎ মণ্ডল ওরফে দীপঙ্কর, মাড়িবেড়িয়ার রাকিবুল ইসলাম মল্লিক এবং কাদিরহাটি গ্রামের বাসিন্দা বাকিবিল্লা তরফদার। এদের নিয়ে প্রশ্ন করায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মুখে কুলুপ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তির কথায়, ‘‘মেছোভেড়ি, ইটভাটার পাশাপাশি এলাকায় ট্যুরিস্ট লজ হওয়ায় কিছু লোকের হাতে কাঁচা টাকা বেড়েছে। তাদের হাত ধরেই দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। পুলিশ এবং রাজনৈতিক দল কড়া পদক্ষেপ না করলে আরও খারাপ কিছু ঘটতে পারে।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও কয়েক জন জানালেন, দুষ্কৃতীদের দাপটে অনেক সময়ে থানা-পুলিশ পর্যন্ত যেতে সাহস পান না তাঁরা। শনিবারের ঘটনায় ভাঙড়ের এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা তদ্বির না করলে পুলিশ এ ক্ষেত্রেও কতটা পদক্ষেপ করত, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় মানষ জন। মিনাখাঁর এসডিপিও নির্মল দাসের দাবি, অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বাসন্তী হাইওয়েতে টহল বাড়ানো হচ্ছে বলেও জানিয়েছে্ন তিনি। ধৃতদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন। মিনাখাঁ ব্লক তৃণমূল সভাপতি আয়ুব হোসেন গাজি বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীদের অপরাধ ক্ষমা করা হবে না। পুলিশকে বলা হয়েছে, অপরাধীদের ধরতে। অপরাধমূলক যাতে না ঘটে, সে দিকে নজর রাখতে দলের কর্মীদেরও বলা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

minakhan Miscreants
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE