Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

উন্নয়নের প্রশ্নে দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধেই অনাস্থা 

অনাস্থা: দলীয় পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থাপত্র জমা দিলেন তৃণমূল আধিকারিকেরা। নিজস্ব চিত্র

অনাস্থা: দলীয় পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থাপত্র জমা দিলেন তৃণমূল আধিকারিকেরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বসিরহাট শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৯ ০০:৪১
Share: Save:

উন্নয়ন করছেন না এই অভিযোগে দলীয় পুরপ্রধানের বিরুদ্ধেই অনাস্থা আনল বসিরহাট পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলরদের বড় অংশ। ঘটনার মীমাংসায় আজ, মঙ্গলবার বৈঠকে বসছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, ফিরহাদ হাকিম, বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাস প্রমুখ।

বসিরহাট পুরসভায় তৃণমূলের মোট ১৬ জন কাউন্সিলর। তাঁদের মধ্যে উপ পুরপ্রধান সুদেব সাহা-সহ ১২ জন কাউন্সিলর সোমবার মহকুমা শাসক এবং পুরসভার ‘রিসিভ সেন্টারে’ অনাস্থাপত্র জমা দেন। প্রধানের বিরুদ্ধে তাঁদের অভিযোগ, বাংলা জুড়ে যখন উন্নয়নের জোয়ার বইছে, তখন বসিরহাট পুরপ্রধানের একগুঁয়ে মনোভাবে পুর এলাকায় উন্নয়ন স্তব্ধ। পুরভোট আসন্ন। এ সময়ে সাধারণ মানুষের মন জয় করতে উন্নয়ন করতেই হবে। অন্যথায় বসিরহাট পুরসভায় তৃণমূল খারাপ ফল করবে।

এই অভিযোগ প্রসঙ্গে পুরপ্রধান তপন সরকার বলেন, ‘‘দলের সিদ্ধান্ত মাথা পেতে নেব।’’

বসিরহাট পুরসভায় মোট ২৩টি ওয়ার্ড। ২০১৫ সালে পুর নির্বাচনে তৃণমূল ১৩, কংগ্রেস ৫, বিজেপি ৩ এবং সিপিএম ২টি আসন জেতে। পরবর্তীতে কংগ্রেসের অসিত মজুমদার ও অবিনাশ নাথ এবং বিজেপির সোনা নন্দী-সহ ৩ জন তৃণমূলে যোগ দিলে তৃণমূলের কাউন্সিলর-সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৬। এ দিন পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থাপত্র জমা দেওয়ার পরে দলনেতা তথা ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পরিমল মজুমদার বলেন, ‘‘দলনেত্রীর আদর্শ সামনে রেখে আমরা দল করি। তিনি যখন বাংলা জুড়ে উন্নয়ন করে চলেছেন সে সময়ে দলীয় পুরপ্রধানের কারণে বসিরহাট পুরসভার উন্নয়নের কাজ পিছিয়ে থাকছে। তিন বছর ধরে মেরামতির নাম করে টাউনহল এবং রবীন্দ্রভবন বন্ধ। সংস্কৃতিপ্রেমী বসিরহাটের মানুষ বড় রকম অসুবিধায় পড়েছেন। প্রধান দলীয় কাউন্সিলরদের মতামত নিয়ে কাজ করেন না। তিনি থাকলে বসিরহাটের উন্নয়ন সম্ভব নয়।’’

অবশ্য বিরোধীদের দাবি, উন্নয়ন না হওয়ার জন্য শুধু প্রধানকে দায়ী করলে হবে না। কাউন্সিলরেরাও দায় এড়াতে পারেন না। লোকসভা নির্বাচনে বসিরহাট পুরসভার অধিকাংশ ওয়ার্ডে বিজেপি তৃণমূলকে পিছনে ফেলায় এখন চিন্তিত তৃণমূল নেতারা। ৪ কাউন্সিলর অনাস্থায় সই না করায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিষয়টাও সামনে এসে পড়েছে।

বিজেপির জেলা সভাপতি গণেশ ঘোষ বলেন, ‘‘বসিরহাটের রাস্তা, পানীয় জল, আলো-সহ বিভিন্ন বিষয়ে মানুষকে পরিষেবা দিতে না পারায় দায়ী সব তৃণমূল কাউন্সিলরেরাই। এর বিরুদ্ধে মানুষ সংঘবদ্ধ হয়ে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন।’’ তিনি আরও জানান, পানীয় জলের পাইপ চুরি, কাটমানি-সহ একাধিক দুর্নীতির জন্য তৃণমূল মানুষের রোষের মুখে পড়েছে। সেই রোষ থেকে বাঁচতে এখন দলীয় পুরপ্রধানের উপর দোষ চাপিয়ে গা বাঁচাচ্ছে তৃণমূল। মানুষ যে এ সব ভাল ভাবে নিচ্ছেন না, পুর নির্বাচনেই তা পরিষ্কার হবে।

কংগ্রেস নেতা অমিত মজুমদার বলেন, ‘‘লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই পুরপরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। তার উপর এই অনাস্থার ফলে বসিরহাটের মানুষ পরিষেবা পেতে অসুবিধায় পড়বেন। নিকাশি ব্যবস্থা, ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজে গতি কমলে আখেরে এলাকাবাসীরই ক্ষতি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Basirhat Municipality TMC Chairman No Confidence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE