মারধরে অভিযুক্ত কামারহাটি তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি রানা বিশ্বাস। —নিজস্ব চিত্র।
তোলা না দেওয়ায় বেলঘরিয়ায় দলীয় কর্মীদের লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের এক ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে। আহত ৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। থানায় নালিশ জানানো হলেও অভিযুক্ত ছাত্রনেতাকে পুলিশ গ্রেফতার করেনি বলে দাবি আহতদের পরিবারের। এই ঘটনাকে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জের বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। তবে এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ জোড়াফুল শিবির।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কামারহাটি পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় শনিবার এক অটোচালক ও তাঁর দুই বন্ধুকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে কামারহাটি তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি রানা বিশ্বাস ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে। আহত যুবকেরা প্রত্যেকেই এলাকায় তৃণমূলকর্মী হিসাবে পরিচিত। অভিযোগ, মারধরের পর আহতদের সঙ্গে নিয়ে ফেসবুক লাইভে সালিশি সভাও করেন রানা। যদিও মারধরের কথা অস্বীকার করেছেন তিনি। ৩ জনের মধ্যে ২ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সাগর দত্ত মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অটোচালকের মা কবিতা রায়ের দাবি, ‘‘আমার ছেলে গত কাল (শনিবার) অটো চালানোর জন্য বেরোলে ওর কাছ থেকে টাকা চায় রানা। আমার ছেলেটাকে খুব মেরেছে। ওর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। পিঠেও মেরেছে। রানা গুন্ডার শাস্তি চাই।’’ আহত অটোচালকের জামাইবাবু বাবু রক্ষিত বলেন, ‘‘আমার শ্যালক বেলঘরিয়া এলাকায় অটো চালায়। ওকে মেশিনের বাঁট, লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মেরেছে রানা। ও এলাকায় সবচেয়ে বড় তোলাবাজ। এই ঘটনায় আতঙ্কে রয়েছি আমরা।’’
মারধরে অভিযুক্ত রানার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই বেলঘরিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন আহত যুবকদের পরিবারের সদস্যরা। রানা এবং ওই অটোচালক তোলাবাজিতে যুক্ত বলে স্থানীয়দের দাবি। যদিও গোটা ঘটনায় মুখ খুলতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব। স্থানীয় তৃণমূল নেতা গোপাল সাহা বলেন, ‘‘মারধরের অভিযোগ আমিও শুনেছি। বিষয়টি পুরোটা জানি না। দলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ কথা জানিয়েছি। কার কী করা উচিত বা অনুচিত, তা দল ঠিক করবে। ইতিমধ্যেই পুলিশ-প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বিরোধী দল তো বিরুদ্ধে কথা বলবেই।’’
তবে এই ঘটনায় সরব হয়েছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। কিশোর কর নামে স্থানীয় এক বিজেপি নেতা বলেন, ‘‘বেলঘরিয়ার এক অটোচালককে বেধড়ক মারধর করেছেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক নেতা।’’ তাঁর দাবি, ‘‘এই সরকারের রাজত্বে তৃণমূলের এক এক জন নিজেদের জমিদার মনে করেন। মানুষ তাঁদের মতের বিরুদ্ধে গেলে কেস দেওয়া, মারধর করার ঘটনা হচ্ছে। এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। গোটা পশ্চিমবঙ্গেই এ রকম হচ্ছে। এই ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও নিন্দনীয়। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের নিজেদের মধ্যে গোষ্ঠী সংঘর্ষ হচ্ছে। কামারহাটিই বা বাদ যাবে কেন? যদিও অভিযুক্তকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি বেলঘরিয়া থানার পুলিশ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy