Advertisement
১০ অক্টোবর ২০২৪
Basirhat

দেগঙ্গায় গোষ্ঠী সংঘর্ষে জখম তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু

স্থানীয় সূত্রের খবর, এলাকায় হুমায়ুন ও হাবিবের বিবাদ মাঝেমধ্যেই চরমে পৌঁছেছে। দুই ভাইয়ের অনুগামীদের মধ্যে একাধিকবার মারামারি হয়েছে।

এলাকায় পুলিশি টহলদারি। ইনসেটে, মিজান রেজা চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র
নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২২ ০৭:১৬
Share: Save:

দলের দুই গোষ্ঠীর মারামারিতে জখম তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু হল। গত শুক্রবার দেগঙ্গার চাঁপাতলা পঞ্চায়েতের গোঁসাইপুর বাজার এলাকায় দু’পক্ষের গোলমাল বাধে। মারামারির মধ্যে ছুরির আঘাতে জখম হন তৃণমূল কর্মী মিজান রেজা চৌধুরী (৩৫)। কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। রবিবার রাতে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত শুকুর আলিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল রয়েছে। দুই বিবাদমান গোষ্ঠীর একদিকে রয়েছেন চাঁপাতলা পঞ্চায়েতের প্রধান হুমায়ুন রেজা চৌধুরী। অন্যদিকে আছেন হুমায়ুনের এক ভাই পঞ্চায়েতেরই সদস্য হাবিব রেজা চৌধুরী। মৃত মিজান প্রধান হুমায়ুনের আর এক ভাই। তিনি হাবিব গোষ্ঠীর লোক হিসেবেই পরিচিত।

স্থানীয় সূত্রের খবর, এলাকায় হুমায়ুন ও হাবিবের বিবাদ মাঝেমধ্যেই চরমে পৌঁছেছে। দুই ভাইয়ের অনুগামীদের মধ্যে একাধিকবার মারামারি হয়েছে। দুই গোষ্ঠীর গোলমালে এলাকায় বোমাবাজির অভিযোগও উঠেছে। গত শুক্রবার রাতে গোঁসাইপুর বাজারে ফের গোলমাল বাধে দু’পক্ষের। অভিযোগ, প্রধানের অনুগামী শুকুর আলিকে মারধর করে হাবিবের লোকজন। উপস্থিত ছিলেন মিজানও। দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। সেই সময়ে শুকুর আলি ছুরি দিয়ে মিজানকে আঘাত করে বলে অভিযোগ। জখম মিজানকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল হাড়োয়া হাসপাতালে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পরে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুকুরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ঘটনার পর দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে দেগঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। সেই সময় হুমায়ুন গোষ্ঠীর তরফে দাবি করা হয়েছিল, বোমাবাজির একটি মামলায় হাবিবদের বিরুদ্ধে সাক্ষী দেওয়ায় শুকুর আলিকে মারধর করা হয়। আবার হাবিব গোষ্ঠীর লোকজন দাবি করেন, পঞ্চায়েতের দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় মিজানকে ছুরি মারা হয়েছে।

এ দিন মিজানের মৃত্যুর খবর গ্রামে পৌঁছতেই শোকের ছায়া নামে পরিবারে। গোলমালের আশঙ্কায় পুলিশ ও কমব্যাট ফোর্স নামানো হয় এলাকায়। এ দিকে তৃণমূল নেতার মৃত্যু নিয়ে শুরু হচ্ছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক তরুণকান্তি ঘোষ বলেন, “বাম জমানায় হাজার হাজার বিরোধী দলের নেতাকর্মী খুন হয়েছেন। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা তো খুন হচ্ছেই, পাশাপাশি নিজেরাই নিজেদের লোককে মারছে। ঘরে ঘরে বোমা, বন্দুক উদ্ধার হচ্ছে।” ভাইয়ের মৃত্যু নিয়ে অবশ্য এ দিন হুমায়ুন বা হাবিব, কারওর প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে চৌধুরী পরিবারের ছোট ছেলে মাসুম রেজা চৌধুরীর দাবি, “দাদাকে জমি ও মাটি মাফিয়ারা খুন করেছে।”

দেগঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা মফিদুল হক সাহাজি বলেন, “মিজান রেজা চৌধুরী দলেরই একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। দুষ্কৃতীদের হাতে তিনি খুন হলেন। প্রশাসনকে বলা হয়েছে তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Basirhat tmc worker TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE