Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
BJP

শান্তনুর মতকে গুরুত্ব দেবে তো দল, জল্পনা

মঙ্গলবার রাতে শান্তনু ঠাকুরনগরে মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে বৈঠক করেন কয়েকজন মতুয়া বিধায়ক, বিজেপি নেতা এবং অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রতিনিধিদের সঙ্গে।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বনগাঁ শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২২ ০৮:৫০
Share: Save:

বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি রামপদ দাসকে পদ থেকে সরানোর দাবি তুলেছেন সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর ও তাঁর অনুগামী কয়েকজন বিধায়ক। যা নিয়ে বনগাঁ বিজেপিতে নতুন করে ডামাডোলের আশঙ্কা করছেন দলের একাংশ। যদিও এ বিষয়ে স্থানীয় বিজেপি নেতৃ্ত্বের প্রকাশ্যে মুখে কুলুপ। এক নেতার কথায়, ‘‘আমাদের অবস্থা এখন শাঁখের করাতের মতো। যা-ই বলব, কোনও এক পক্ষের বিরুদ্ধে যাবে।’’

মঙ্গলবার রাতে শান্তনু ঠাকুরনগরে মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে বৈঠক করেন কয়েকজন মতুয়া বিধায়ক, বিজেপি নেতা এবং অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রতিনিধিদের সঙ্গে। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন হরিণঘাটার বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকার, বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া, গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর ও রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুকুটমণি জানান, আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা এবং নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতিদের পরিবর্তন করতে হবে। নবদ্বীপ জ়োনের পর্যবেক্ষককে পরিবর্তন করতে হবে। দলের এসসি মোর্চার পদগুলিতে শান্তনুর সঙ্গে আলোচনা করে কাউকে বসাতে হবে। এ ছাড়া, রাজ্যের সহ সভাপতি এবং সম্পাদক পদে মতুয়া সমাজের মানুষকে বসাতে হবে। মুকুটমণি বলেন, ‘‘এই সব দাবি শান্তনু ঠাকুর দলের নেতৃত্বের কাছে জানাচ্ছেন।’’

দিন কয়েক আগে মনস্পতি দেবকে সরিয়ে বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার নতুন সভাপতি করা হয়েছে দীর্ঘদিনের বিজেপি কর্মী রামপদকে। জেলাস্তরে তিনি এতদিন জেলা সভাপতির পদ ছাড়া সহ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ সামলাছেন।

মতুয়া ছাড়া সাধারণ বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের একাংশ আবার চাইছেন রামপদ সভাপতি থাকুন। এতে সংগঠন আরও শক্তিশালী হবে। পুরনো বিজেপি কর্মীরা দলের কাজে গুরুত্ব পাবেন। যদিও সভাপতি হিসেবে রামপদ দাসের নাম ঘোষণার পরেই জেলা বিজেপি কার্যালয়ে ইটপাটকেল ছোড়ার ঘটনাও ঘটেছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় নতুন সভাপতিকে মানতে না পেরে অনেকে ক্ষোভ জানান। পুরভোটে তৃণমূলকে সুবিধা করে দেওয়া হল বলেও মন্তব্য করেন কউ কেউ। রামপদ সভাপতি হওয়ার পরে মতুয়াদের মধ্যেও ক্ষোভ তৈরি হয়। সোমবার দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপগুলি থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। গ্রুপগুলিতে থাকা ‘নিষ্প্রয়োজন’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মঙ্গলবার ঠাকুরবাড়ির বৈঠকে দেখা যায়নি মতুয়া বিধায়ক স্বপন মজুমদারকে। সভাপতি পরিবর্তনের দাবি নিয়ে তিনি বুধবার বলেন, ‘‘এ বিষয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে দল দলের মতোই চলবে।’’

প্রাক্তন সভাপতি মনস্পতি বলেন, ‘‘সভাপতি পরিবর্তনের বিষয়টি দলের সংগঠন মহামন্ত্রী অমিতাভ চক্রবর্তীর বিষয়। আমি আর কী বলব!’’

কী বলছেন রামপদ?

তাঁর কথায়, ‘‘দাবি-দাওয়া তো যে কেউ রাখতেই পারেন। আমাকে সভাপতি করেছেন রাজ্য নেতৃত্ব। এর বাইরে আমার কোনও বক্তব্য নেই।’’ বুধবার দুপুরে রামপদ মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে যান শান্তনুর সঙ্গে দেখা করতে। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে তিনি ফিরে যান। শান্তনুর সঙ্গে তাঁর দেখা হয়নি।

রামপদ এদিন বলেন, ‘‘আমি যখন সভাপতি হই, তখন আমি মুম্বাইয়ে ছিলাম। উনি (শান্তনু) দিল্লিতে ছিলেন। ফোনে কথা হয়েছিল। আজ দেখা করে আশীর্বাদ নিতে এসেছিলাম। কিন্তু দেখা হয়নি। জানতে পারি, দিল্লিতে ভার্চুয়াল বৈঠতে ব্যস্ত আছেন।’’ শান্তনু পরে জানান, তিনি বাড়ির বাইরে আছেন।

দলের একাংশ জানাচ্ছে, এর আগে মতুয়া সমাজের প্রতিনিধি হিসাবে শান্তনুর চাপে পড়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঠাকুরনগরে সভা করে গিয়েছেন। দলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা গঠন হয়েছে। এ বার পদ ভাগ নিয়ে ‘মনোঃক্ষুণ্ণ’ শান্তনুর মন রাখতে দল কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Shantanu Thakur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE