Advertisement
E-Paper

অস্ত্র আইনে প্রতিবাদীদের জড়ালেন বিধায়ক

ভাঙা রাস্তা নিয়ে ক্ষোভ জানাতে গিয়ে বিধায়কের দফতরে ঘাড়ধাক্কা খেয়েছিলেন আমিড়া গ্রামের যে মহিলারা, তাঁদের নিয়ে থানায় গিয়েছিলেন স্কুলশিক্ষক মইদুল ইসলাম। ঘটনার পর মইদুলের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করেছেন তৃণমূল বিধায়ক দীপক হালদার। ‘মইদুল ও অন্যান্য’ হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র এবং প্রাণহানির হামলার চেষ্টার ওই অভিযোগে গ্রামবাসী মহিলারাও যুক্ত হয়ে পড়তে পারেন, শনিবার তা জানতে পেরে হতচকিত হয়ে পড়েন গ্রামবাসী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:৫৩

ভাঙা রাস্তা নিয়ে ক্ষোভ জানাতে গিয়ে বিধায়কের দফতরে ঘাড়ধাক্কা খেয়েছিলেন আমিড়া গ্রামের যে মহিলারা, তাঁদের নিয়ে থানায় গিয়েছিলেন স্কুলশিক্ষক মইদুল ইসলাম। ঘটনার পর মইদুলের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করেছেন তৃণমূল বিধায়ক দীপক হালদার। ‘মইদুল ও অন্যান্য’ হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র এবং প্রাণহানির হামলার চেষ্টার ওই অভিযোগে গ্রামবাসী মহিলারাও যুক্ত হয়ে পড়তে পারেন, শনিবার তা জানতে পেরে হতচকিত হয়ে পড়েন গ্রামবাসী।

মইদুলের কথায়, “অস্ত্র নিয়ে বিধায়কের অফিসে যাওয়া তো দূর, আমি ওই মহিলাদের অভিযোগ শুনে তাঁদের থানায় নিয়ে গিয়েছি মাত্র।” ‘আক্রান্ত আমরা’ সংগঠনের সদস্য মইদুল বিজেপি-র শিক্ষা সেলের নেতা। তাই বিরোধীদের উস্কানিতেই মহিলারা তাঁকে হেনস্থা করেছেন, এই অভিযোগ বৃহস্পতিবারই করেছিলেন দীপকবাবু। এরপরেই তিনি অস্ত্র আইনের অধীনে অভিযোগ করেন। দীপকবাবুর দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতেই মইনুলের বিরুদ্ধে বেআইনি জমায়েত এবং আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলার মামলা রুজু করা হয়েছে।

পুলিশ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, তারা বিষয়টি তদন্ত করছে। তবে থানায় কথা বলার পর গ্রামবাসী মহিলারা জানান, মামলা আর অশান্তির পথে না হেঁটে কিছুদিন পরে বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে মিটমাট করার পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ। ওই গ্রামের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের স্ত্রী মুক্তি পাড়ুই বলেন, “আমরা সাধারণ মানুষ। আলোচনার মাধ্যমে ঝামেলা মেটানোর জন্য থানা থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বিধায়কের সঙ্গে আলোচনায় বসব।” গ্রামের আর এক বাসিন্দা চম্পা সর্দার বলেন, “পুলিশ বলেছে, উত্তেজনা একটু কমলে বিধায়কের সঙ্গে একটা মীমাংসা করে নিন।”

কী ঘটেছিল বৃহস্পতিবার? ওই দিন রাস্তা সারানোর দাবি নিয়ে বিধায়ক দীপক হালদারের জনসংযোগ দফতরে গিয়েছিলেন আমিড়া গ্রামের মহিলারা। তাঁদের অভিযোগ, বিধায়কের সঙ্গে বচসার জেরে তাঁদের ঘাড়ধাক্কা দেয় বিধায়কের সঙ্গীরা। ঘটনার প্রতিবাদে গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলের মোহন পাড়ুই পদত্যাগ পত্রও জমা দেন। বিধায়কের তরফে পাল্টা অভিযোগ করে বলা হয়, মহিলারাই তাঁর উপরে চড়াও হয়েছিলেন। তবে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলার চেষ্টা এবং প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগের কথা এ দিনই জানা গিয়েছে।

পুলিশসূত্রেও জানা গিয়েছে, বিধায়কের অভিযোগের গুরুত্ব আঁচ করেই গ্রামবাসীরা পিছিয়ে যাচ্ছেন। এ দিন মহিলা ও শিশু-সহ প্রায় ৫০ জন গ্রামবাসী বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ তাঁদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা সম্পর্কে থানায় জানতে এলে ওই প্রস্তাব দেওয়া হয় বলে তাঁরা দাবি করেন। তাঁদের বলা হয়, যেহেতু দুই তরফেই অভিযোগ দায়ের হয়েছে, ফলে দু’টি অভিযোগকেই গুরুত্ব দেওয়া হবে। তাতে পুলিশ গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করতে পারে। সেই ভয়েই গ্রামবাসীরা বিধায়কের বিরুদ্ধে তাঁদের অভিযোগ নিয়ে বেশি এগোতে চান না বলে জানা গিয়েছে।

তবে পুলিশ ‘মিটমাট’ করে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। থানার এক অফিসার দাবি করেন, “আমরা এ সব কিছুই বলিনি। গ্রামবাসী বিধায়কের সঙ্গে মীমাংসা করবেন কিনা, তা তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন। পুলিশ তদন্ত করছে। তদন্ত শেষ হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ও দিকে দীপকবাবু বলেন, “নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি সকলের কাজ করতে চাই। কিন্তু সে দিন ওঁরা আমার দফতরে এসে হামলা করেছেন। আলোচনার দরজা খোলা। তাঁরা চাইলে আলোচনা করবেন।”

মইদুল দাবি করেন, এর আগেও ডায়মন্ড হারবারে ‘আক্রান্ত আমরা’-র সভা চলাকালীন শাসকদলের হামলার মুখে পড়তে হয় তাঁকে। এ বারও রাজনৈতিক কারণেই তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে বারবার ফোন করেও শনিবার দীপকবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

mp diamond harbour arms act
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy