E-Paper

সংগঠন গুছিয়ে প্রস্তত হওয়ার বার্তা কংগ্রেসে

আগামী বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস কারও সঙ্গে জোট করে লড়বে কি না, সেই বিষয়ে এখনও ফয়সালা হয়নি। কোনও পক্ষের সঙ্গে আসন-রফার আলোচনায় যাওয়ার আগে নিজেদের ঘর গোছানোয় জোর দিতে চাইছেন কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২৫ ০৬:৩১
কলকাতায় এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক গুলাম আহমেদ মীর ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার।

কলকাতায় এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক গুলাম আহমেদ মীর ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। —ফাইল চিত্র।

ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের পরিবেশে সাধারণ রাজনৈতিক কর্মসূচি কার্যত বন্ধ কিছু দিন। তারই মধ্যে শহরে এসে বাংলায় কংগ্রেসের সাংগঠনিক রূপরেখার প্রশ্নে দলের বর্ষীয়ান নেতাদের সঙ্গে আলোচনা সেরে গেলেন এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক গুলাম আহমেদ মীর। রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন যে হেতু বেশি দূরে নয়, তার আগে জেলায় জেলায় দলের শক্তি চিহ্নিত করে সাংগঠনিক প্রস্তুতির পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর, কারা ভোটে প্রার্থী হতে চান, তা-ও জানতে চেয়েছেন এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক।

আগামী বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস কারও সঙ্গে জোট করে লড়বে কি না, সেই বিষয়ে এখনও ফয়সালা হয়নি। কোনও পক্ষের সঙ্গে আসন-রফার আলোচনায় যাওয়ার আগে নিজেদের ঘর গোছানোয় জোর দিতে চাইছেন কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তার জন্য সংগঠনকে সাজানো এবং রাজনৈতিক কর্মসূচি ধারালো করার বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এর আগে দিল্লিতে দলের জেলা সভাপতিদের ডেকে এআইসিসি-র নেতৃত্ব বৈঠক করেছেন, আহমেদাবাদে এআইসিসি-র অধিবেশনেও জেলা স্তরের সংগঠনের কাজে নজর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সেই সূত্রেই মীর এ বার কলকাতায় এসে প্রদীপ ভট্টাচার্য, আব্দুল মান্নান, সন্তোষ পাঠক-সহ দলের বেশ কিছু নেতার মতামত নিয়েছেন। নেপাল মাহাতো, শঙ্কর মালাকারদের মতো জেলার গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে ফোনে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের সঙ্গেও দফায় দফায় এআইসিসি পর্যবেক্ষকের দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। এই যাত্রায় মীর অবশ্য বিধান ভবনে আসেননি। ই এম বাইপাসের ধারে একটি হোটেলে দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে পরিবর্তনের পরে বাংলায় কংগ্রেসের নতুন কমিটি এখনও হয়নি। নতুন করে জেলা সভাপতিদের নামও ঘোষণা হয়নি। কংগ্রেস সূত্রের খবর, কমিটি এবং জেলা সভাপতিদের বিষয়েও এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক রাজ্য নেতাদের মতামত শুনেছেন। আগামী বিধানসভা ভোট যে কমিটিকে সামনে রেখে লড়তে হবে, সেখানে যথাসম্ভব সমন্বয় রাখার কথাই বলেছেন প্রদেশ নেতারা। এআইসিসি-র ‘উদয়পুর সঙ্কল্পে’ কমিটি গঠনের প্রশ্নে বেশ কিছু মাপকাঠি স্থির করে দেওয়া হয়েছিল। কত অনুপাতে মহিলা মুখ রাখা হবে, জাতিগত বিন্যাস কেমন হবে, উল্লেখযোগ্য কাজ না করে থাকলে জেলা সভাপতি পদে পাঁচ বছরের বেশি সাধারণ ভাবে কাউকে রাখা যাবে না— এই সব সূত্রই সেখানে ছিল। এ রাজ্যে কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে সেই সূত্র কত দূর কার্যকর হবে, সে দিকে নজর রয়েছে প্রদেশ কংগ্রেসের। একটি সূত্রের ইঙ্গিত, দ্রুতই কমিটি ঘোষণা করতে পারে এআইসিসি।

মীরের সঙ্গে আলোচনায় দু-এক জন বর্ষীয়ান নেতা রাজ্যে আসন সমঝোতা নিয়ে কথা শুরুর প্রস্তাব দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। মীর অবশ্য তাঁদের বলেছেন, সাংগঠনিক রূপরেখা ঠিক করে নিয়ে তার পরে এই নিয়ে ভাবা যাবে। আলোচনায় উপস্থিত এক কংগ্রেস নেতার কথায়, ‘‘কোন জেলার কোন আসন কংগ্রেসের জন্য ‘সম্ভাবনাময়’, সে সব চিহ্নিত করে এবং সাংগঠনিক শক্তির নিরিখে ময়দানে নেমে সব রকমের প্রস্তুতি নেওয়ার কথাই বলছে এআইসিসি।’’ আর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্করের বক্তব্য, ‘‘দলের নেতাদের সঙ্গে একেবারেই অভ্যন্তরীণ কিছু আলোচনা হয়েছে এআইসিসি পর্যবেক্ষকের। ভোটে লড়তে যাওয়ার আগে নিজেদের শক্তি আগে যাচাই করে নিতে হবে, সংগঠনকে সক্রিয় রাখতে হবে। সেই প্রক্রিয়াই চলছে।’’

এরই মধ্যে প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতির শূন্য পদে নতুন মুখ বেছে নেওয়ার লক্ষ্যে দিল্লিতে সংগঠনের ৮ জন পদাধিকারীকে ডেকে সোমবার ‘ইন্টারভিউ’ নেওয়া হয়েছে সর্বভারতীয় যুব নেতৃত্বের তরফে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Congress Shubhankar Sarkar AICC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy