কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গির উল্লেখ (ছবিতে চিহ্নিত)। নিজস্ব চিত্র
ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হল বুদবুদের এক অন্তঃসত্ত্বার।
বুদবুদের সুকান্তনগরের বাসিন্দা সরিতা দে (২৬)-র মৃত্যু হয় শনিবার। ডেথ সার্টিফিকেটে বলা হয়েছে, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ওই মহিলার মৃত্যু হয়েছে ‘হেমারেজিক শক’-এ।
মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ৭ জুন অসুস্থ হওয়ায় তাঁকে বর্ধমানের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ডেঙ্গিতে মৃত্যুর খবর চাউর হতেই আতঙ্ক তৈরি হয়েছে এলাকায়।
মৃতার ভাসুর সুমন দে জানান, দিন কয়েক ধরেই জ্বরে ভুগছিলেন চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা সরিতা। স্থানীয় এক চিকিৎসককে দেখানোর পরে তিনি হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন। ৭ জুন বর্ধমানের একটি নার্সিংহোমে তাঁকে ভর্তি করানোর পরে রক্ত পরীক্ষা করা হয়। সুমনবাবু জানান, রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট দেখেই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ সরিতাকে কলকাতায় নিয়ে যেতে বলেন। ১৫ জুন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। কিন্তু তাঁর জ্বর কমছিল না। পরে চিকিৎসকেরা জানান, সরিতার ডেঙ্গি হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃত্যুর কারণ হিসেবেও ডেঙ্গির কথা উল্লেখ করেছেন।
স্বাস্থ্য দফতরের একটি দল এ দিন সকালেই বুদবুদের ওই গ্রামে যায়। সেখানে মৃতার পরিবারের পাশাপাশি গ্রামবাসীদের সঙ্গেও কথা বলে তারা। গ্রামে আর কারও জ্বর হয়েছে কি না, খোঁজ নেন দলের সদস্যেরা। ওই গ্রামটি কয়েক বছর আগে ‘নির্মল গ্রাম’ হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছিল। বাসিন্দারা জানান, গ্রাম এমনিতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। তাই ডেঙ্গিতে মৃত্যুর ঘটনায় তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। গলসি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জনার্দন চট্টোপাধ্যায় জানান, প্রশাসনের তরফে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও সচেতনতামূলক প্রচারের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে।
এই ঘটনায় শুধু বর্ধমান নয়, আতঙ্ক ছড়িয়েছে শহরেও। এ বছর গরমে কলকাতায় ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা গিয়েছে। তাই বর্ষায় সে দাপট বাড়বে কি না সে নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। যদিও কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ স্বাস্থ্য অতীন ঘোষের দাবি, ‘‘জানুয়ারি থেকে কলকাতা পুরসভা ডেঙ্গি প্রতিরোধের জন্য কাজ করছে।’’
তবে, হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ডেঙ্গি সংক্রমণ হয়ে শুধু বর্ধমান বা অন্যান্য জেলার বাসিন্দারা ভর্তি নেই। কলকাতারও বেশ কয়েকটি এলাকার মানুষ ডেঙ্গির সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি আছেন। হাসপাতালের সুপার শিখা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কত জন আক্রান্ত হাসপাতালে ভর্তি সেটা নির্দিষ্ট করে বলতে পারব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy