Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Teacher Crisis

শিক্ষক নেই, ক্লাস নিতে হয় করণিককেও

১৯৪৯-এ তৈরি স্কুলটিতে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ানো হয়। এখন সেখানে ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৮০০।  স্থায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন সাত জন। পার্শ্বশিক্ষক তিন জন।

পূর্বস্থলীর সাবিত্রী বালিকা বিদ্যালয়। নিজস্ব চিত্র

পূর্বস্থলীর সাবিত্রী বালিকা বিদ্যালয়। নিজস্ব চিত্র

কেদারনাথ ভট্টাচার্য
কালনা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৩ ০৭:১০
Share: Save:

স্থায়ী শিক্ষক পিছু পড়ুয়ার সংখ্যা একশো চল্লিশেরও বেশি। ক্লাস নিতে কার্যত কালঘাম ছোটে শিক্ষকদের। নিজের কাজের চাপ সামলে করণিককেও ক্লাস নিতে হয়। পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের দাবি, অনেক বিষয়ের ক্লাসই ঠিকমতো হয় না। শিক্ষকের অভাবে লেখাপড়ার এমনই হাল পূর্বস্থলী সাবিত্রী বালিকা বিদ্যালয়ে।

১৯৪৯-এ তৈরি স্কুলটিতে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ানো হয়। এখন সেখানে ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৮০০। স্থায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন সাত জন। পার্শ্বশিক্ষক তিন জন। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগেও সেখানে ২৪ জন স্থায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকা ছিলেন। ‘উৎসশ্রী’ পোর্টাল চালু হতেই বদলি নেওয়ার হিড়িক পড়ে। কমতে থাকে শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা। পরে, নিজের বা পরিবারের কোনও সদস্য অসুস্থতা হলে সে ক্ষেত্রে বদলির জন্য আবেদনের নিয়ম চালু হয়। তার পরে, স্কুলের আরও অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা বদলি হন। স্কুল সূত্রে খবর, ২০২১-র সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ১০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা বদলি হয়েছেন।

স্থায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাবের কারণে বাধ্য হয়েই স্কুলের একমাত্র করণিককে বিভিন্ন শ্রেণির গণিতের ক্লাস নিতে হয়। স্কুলে দু’জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ছিলেন। এক জন অবসর নিয়েছেন। অন্য জন বদলি হয়েছেন। শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কারের দায়িত্ব নিতে হয়েছে পড়ুয়াদের। অল্প পারিশ্রমিকে স্কুল খোলা ও বন্ধের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে স্থানীয় এক পেয়ারা বিক্রেতাকে।

স্কুলের করণিক সুমন্ত সাহা জানান, তিনি গণিতের স্নাতক। প্রধান শিক্ষিকা তাঁকে গণিতের ক্লাস নেওয়ার অনুরোধ করলে তা তিনি ফেলতে পারেননি। কাজের চাপ সামলে তাঁকে বিভিন্ন শ্রেণির ক্লাস নিতে হয়। প্রধান শিক্ষিকা মৌসুমি পাল বলেন, ‘‘শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাবে আমাকেও নিয়মিত পড়াতে হয়। সাত জন স্থায়ী শিক্ষক নিয়ে স্কুল চালানো যায় না। খুবই সমস্যা হচ্ছে। সে কথা জানিয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শককে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, চিকিৎসা বা স্বাস্থ্যের কারণ দেখিয়ে কেউ বদলির আবেদন করলে সে ক্ষেত্রে স্কুলের কিছু করার থাকে না। স্কুলে ঠিকমতো পঠনপাঠনের জন্য প্রয়োজন আরও স্থায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকার।

স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী পিঙ্কি খাতুনের কথায়, ‘‘ইতিহাস, এডুকেশন, বাংলা ও ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক না থাকায় ক্লাস হয় না। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে ভয় করছে।’’ এক পড়ুয়ার অভিভাবক সইফুদ্দিন আনসারি বলেন, ‘‘স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগের তেমন কোনও শিক্ষক নেই। পড়াশোনায় খামতি থেকে যাচ্ছে। দ্রুত স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ না হলে পড়াশোনার সঙ্কট আরও বাড়বে।’’

কালনা মহকুমার সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক জহরলাল প্রামাণিক বলেন, ‘‘জেলা পরিদর্শকের সঙ্গে ওই স্কুলটির বিষয়ে কথা হয়েছে। একটি রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Teacher Crisis Purbasthali
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE