বরাকরে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার অফিসে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
লাগামছাড়া লোডশেডিং এবং বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীদের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে বুধবার রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার বরাকর শাখা কার্যালয়ে বিক্ষোভ-অবস্থান করল সিপিএম। ঘণ্টাখানেক ধরে দলের কয়েকশো কর্মী-সমর্থক বিক্ষোভ দেখান। পরে দলের তরফে একটি প্রতিনিধি দল আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করে ছ’দফা দাবিতে একটি স্মারকলিপি দেয়। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার বরাকর শাখার আধিকারিক পার্থ চক্রবর্তী জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবিগুলি পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বুধবার সকাল ১০টা নাগাদ সিপিএমের কর্মী-সমর্থকেরা মিছিল করে বিদ্যুৎ কার্যালয়ে পৌঁছন। এই কর্মসূচির কথা আগাম জানা থাকায় সকাল থেকেই সেখানে প্রচুর পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ার মজুত করা হয়েছিল। মিছিলকে কার্যালয়ের গেটেই আটকে দেয় পুলিশ। সেখানে অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করেন সিপিএম নেতা-কর্মীরা। দলের জেলা কমিটির সদস্য সুজিত ভট্টাচার্য অভিযোগ করেন, ভোট গণনার পর দিন থেকেই কুলটি, নিয়ামতপুর, বরাকর, চিনাকুড়ি-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় লাগামছাড়া লোডশেডিং শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে ভোর পর্যন্ত প্রায় ১৫ বার বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়েছে। সারা দিনে ৭-১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ মেলে না বলে অভিযোগ।
স্থানীয় বাসিন্দাদেরও দাবি, লোডশেডিংয়ের জেরে পড়াশোনা কার্যত শিকেয় উঠেছে ছাত্রছাত্রীদের। প্রচণ্ড গরমে বিদ্যুৎ না থাকায় বেশি কষ্ট পাচ্ছেন শিশু ও প্রবীণেরা। সুজিতবাবুর অভিযোগ, ‘‘কেন বারবার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে তা জানার জন্য দফতরে ফোন করলে কর্মীরা গ্রাহকদের সঙ্গে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করছেন।’’ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
কী কারণে কুলটি, বরাকরে এত বিদ্যুৎ বিপর্যয় হচ্ছে? বরাকর শাখার আধিকারিকেরা এ বিষয়ে কিছু বলতে চাননি। আধিকারিক পার্থবাবু শুধু বলেন, ‘‘বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’’ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন পনেরো আগে জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠির সঙ্গে বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকদের একটি বৈঠক হয়। সেখানেও লোডশেডিংয়ের কারণ খুঁজে বের করে সমাধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি বলে অভিযোগ। অতিরিক্ত জেলাশাসক (বিদ্যুৎ) প্রশান্ত মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘অতিরিক্ত বিদ্যুতের চাপ সহ্য করতে না পেরে ট্রান্সফর্মার বিকল হচ্ছে। প্রচুর হুকিং করে বিদ্যুৎ চুরির জন্য ট্রান্সফর্মারের উপরে চাপ বাড়ছে। আমরা এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’ বিদ্যুৎ দফতরের এক আধিকারিক জানান, কুলটির জন্য নতুন একটি ১১ হাজার ফিডারের তারের সংযোগ দেওয়া হবে। একটি বেসরকারি সংস্থা এই কাজের বরাত পেয়েছে। তা হয়ে গেলেই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সমস্যা মিটবে বলে মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy