Advertisement
০৬ অক্টোবর ২০২৪
DVC Releases Water

ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি কমার কারণ দেখিয়ে মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে ২০ হাজার কিউসেক জল কম ছাড়ার ঘোষণা ডিভিসির

বৃহস্পতিবার সকালে ডিভিসি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মাইথন এবং পাঞ্চেত থেকে মোট ৮০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছে। নতুন করে জল ছাড়ার ফলে হাওড়া ও হুগলি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়।

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:৪৬
Share: Save:

রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতির মাঝেই দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি) জানিয়েছে, প্রায় ২০ হাজার কিউসেক জল কম ছাড়া হবে জলাধারগুলি থেকে। বৃহস্পতিবার দুপুরে এই নির্দেশ কার্ষকর হয়েছে। ডিভিসির তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, মাইথন এবং পাঞ্চেত থেকে যথাক্রমে ১০ হাজার এবং ৫০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হবে।

বৃহস্পতিবারও দামোদর উপত্যকার বিভিন্ন বাঁধ ও জলাধার থেকে জল ছাড়া হয়। বৃহস্পতিবার সকালে ডিভিসি এক বিবৃতিতে বলে, মাইথন এবং পাঞ্চেত থেকে মোট ৮০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছে। নতুন করে জল ছাড়ার ফলে দক্ষিণবঙ্গের হাওড়া ও হুগলি জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ‘‘আবহাওয়ার কারণে জলস্তর ক্রমাগত ব়ৃদ্ধি থাকায় মাইথন এবং পাঞ্চেত বাঁধের উপর চাপ বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে তাই মাইথন থেকে ১০ হাজার এবং পাঞ্চেত থেকে ৭০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হবে।’’ পরে অবশ্য নতুন একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, জল ছাড়ার পরিমাণ কমিয়ে যথাক্রমে ১০ হাজার এবং ৫০ হাজার করা হচ্ছে। ডিভিসির যু্ক্তি, আসানসোল, দুর্গাপুর ও ঝাড়খণ্ডে যে বৃষ্টি হচ্ছিল, তা এখন বন্ধ হয়েছে। ফলে জল কমেছে জলাধারগুলিতে। সে কারণেই কমানো হচ্ছে জল ছাড়ার পরিমাণ। ওই জল দামোদর নদী বেয়ে দুর্গাপুর ব্যারাজে আসবে। তবে হাওড়া, হুগলি ও পূর্ব বর্ধমানের দামোদর-তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

ইতিমধ্যেই হুগলি-হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বুধবারও হুগলির পুরশুড়ায় পরিস্থিতি পরিদর্শনে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের উপর ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দামোদর অববাহিকায় বন্যার সম্ভাবনাকে ‘ম্যান মেড’ বলেন তিনি। বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় বানভাসি এলাকা পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী। প্লাবিত এলাকাগুলি ঘুরে দেখার পর ডিভিসির জল ছাড়া নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘‘মানুষকে এ ভাবে ডোবালে ডিভিসির সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক রাখা হবে না।’’ শুধু তা-ই নয়, এই বিষয় নিয়ে বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ত্রাণকাজে কোনও রকম গাফিলতি সহ্য করবেন না বলেও স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কোনও জায়গায় যেন ত্রাণ নিয়ে একটাও অভিযোগ না আসে। আমি সরাসরি জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে দায়িত্ব দেব। যথেষ্ট ত্রাণ পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় অর্থ দেওয়া হয়েছে। তাই কোনও অভিযোগ যেন নবান্ন পর্যন্ত না যায় তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এমন অভিযোগ উঠলে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের কাছ থেকে তার উত্তর জানতে চাওয়া হবে।” সেই সঙ্গে উদ্ধারকাজের জন্য প্রয়োজনীয় নৌকো ও অন্যান্য সামগ্রীরও দ্রুত ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, আসানসোল-ঝাড়খণ্ড সীমানাবর্তী এলাকায় ভিন্‌রাজ্য থেকে যে ট্রাকগুলি আসে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সেগুলিও আটকে দেওয়া হয়েছে। আগামী তিন দিনের জন্য বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানা সিল করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নির্দেশ মেনে ইতিমধ্যেই পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলে কুলটির ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের ডুবুরডিহি চেকপোস্ট পুলিশ সিল করেছে বলে জানিয়েছেন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (সদর) অরবিন্দকুমার আনন্দ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE