ফাইল চিত্র
একশো পার না হলেও প্রতি বছরই উৎসবের মরসুমে পেঁয়াজের দাম বাড়ে। তবে দাম বাড়লেও মজুত করা পেঁয়াজ না থাকায় সে ভাবে মুনাফা পান না চাষি। পরিস্থিতির বদল আনতে পেঁয়াজ সংরক্ষণের ব্যবস্থা ছাড়া উপায় নেই, দাবি উদ্যানপালন দফতরের কর্তাদের।
ওই দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পেঁয়াজের জন্য হিমঘর হয় না। জমি থেকে পেঁয়াজ ওঠার পরেই ফড়েরা কিনেন নেন বেশির ভাগ। এই রাজ্যে শীতকালীন পেঁয়াজ যা উৎপাদন হয় তা মেরেকেটে মাস তিনেক চলে। বাকি সময় নির্ভর করতে হয় মহারাষ্ট্র, গুজরাতের উপরে। প্রতিবারই দুর্গাপুজোর সময় থেকে কালীপুজো, ভাইফোঁটা, বিয়ের মরসুমে পেঁয়াজের চাহিদা বাড়তে থাকে। দামও বাড়ে পাল্লা দিয়ে। এই রাজ্যের চাষিরা পেঁয়াজ মজুত করতে পারলে ওই সময় লাভ পাবেন, দাবি কর্তাদের।
উদ্যান পালন দফতরের এক আধিকারিক পলাশ সাঁতরা জানান, সংরক্ষণ কেন্দ্রে ধাপে ধাপে পেঁয়াজ সাজিয়ে রাখা হয়। এক একটি সংরক্ষণ কেন্দ্রে ২৫ টন করে পেঁয়াজ রাখা যায়। পূর্ব বর্ধমানের ২০টি সংরক্ষণ কেন্দ্রের সব ক’টি রয়েছে কালনা মহকুমায়। এক একটি সংরক্ষণ কেন্দ্র গড়তে খরচ হয় এক লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা। যার মধ্যে সরকারি ভর্তুকি বাবদ মেলে ৮৭ হাজার ৫০০ টাকা। পলাশবাবুর দাবি, ‘‘আরও ৩০টি সংরক্ষণ কেন্দ্র খোলার চেষ্টা শুরু হয়েছে।’’ প্রয়োজনে চাষিরা বাড়িতেও পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারেন, জানান তিনি।
তবে সংরক্ষণের ক্ষেত্রে চাষিদের সতর্ক থাকারও পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। উদ্যান পালন দফতর সূত্রে জানা যায়, জমি থেকে ফসল তোলার ১৫ থেকে ২০ দিন আগে সেচ বন্ধ করে দিতে হবে। পেঁয়াজ তোলার পরে গাছ সমেত সাত-আট দিন ছায়াঘেরা স্থানে ফেলে রাখতে হবে। গোটা পেঁয়াজের সামনের এক ইঞ্চি রেখে গাছ কাটতে হবে। পেঁয়াজ সংরক্ষণ কেন্দ্র ছত্রাকনাশক দিয়ে স্প্রে করে নিতে হবে। সংরক্ষণ কেন্দ্রে যাতে সহজে বাতাস চলাচল করতে পারে সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে হবে। প্রয়োজনে সংরক্ষণ কেন্দ্রে ফ্যান ব্যবহার করতে হবে। এ ছাড়া প্রতি ২০ দিন পর পর পেঁয়াজের গাদা নাড়াচারা করতে হবে। পচা পেঁয়াজ ফেলে দিতে হবে। পলাশবাবু জানান, সুখসাগর প্রজাতির পেঁয়াজ ছ-সাত মাস রাখা যায়। পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, ওজন কম, পচে যাওয়া-সহ নানা কারণে সংরক্ষণ কেন্দ্রে রাখা পেঁয়াজের ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বাদ যায়। তবে সংরক্ষণ কেন্দ্র গড়া চাষিদের দাবি, ‘‘পেঁয়াজ কিছু নষ্ট হলেও বহু সময় পাঁচ থেকে ছ’গুণ বেশি দাম মেলে।’’
উদ্যান পালন কর্তাদের দাবি, পেঁয়াজ ওঠার সময় সাধারণ মানুষও অনায়াসে কম দামে কিনে বাড়িতে ছোট ছোট জায়গায় মজুত করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে আলোবাতাস আসে এমন ঘরে গাছসমেত পেঁয়াজ কিনে ঝুলিয়ে রাখতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy