অনেক চেষ্টার পরেও বিকল হওয়া বাস সারাতে পারেননি বাসচালক এবং কন্ডাক্টর। অগত্যা চাঁদা তুলে বাস সারালেন যাত্রীরাই। —নিজস্ব চিত্র।
প্রায় প্রতি দিনই চলতে চলতে একের পর এক সরকারি বাস বিকল হচ্ছে। সোমবার একেবারে চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হলেন প্রায় ৩০ জন যাত্রী। প্রায় ২ ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকার পরও কোনও হেলদোল না দেখে নিজেরাই চাঁদা তুলে বিকল বাস সারালেন যাত্রীরা। সোমবার বর্ধমানের শক্তিগড়ের ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে দুর্গাপুর থেকে সল্টলেক-করুণাময়ীর উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে সরকারি বাসটি। ৯টা নাগাদ শক্তিগড়ে পৌঁছায় বাসটি। সেখানে ল্যাংচার দোকানের সামনে দাঁড়ায় বাসটি। যেমনটা অন্যান্য দিন হয়। কিন্তু বাস ছাড়তে গিয়ে হয় বিপত্তি। দেখা যায়, বাসের পিছনের ডান দিকের চাকা ফেটে গিয়েছে। গাড়িচালক এবং কন্ডাক্টর মিলে অনেক কসরত করেও বিফল হন। যোগাযোগ করা হয় বর্ধমান এবং দুর্গাপুর বাস ডিপোতে। যাত্রীদের অভিযোগ, দেড় ঘণ্টা কেটে গেলেও কর্তৃপক্ষের ঘুম ভাঙেনি। অন্য দিকে, তাঁদের গন্তব্যে যাওয়া দরকার। সে পথও তো বন্ধ। পিছোতেও পারছেন না। দুর্গাপুরের বাসিন্দা উত্তম সমাদ্দারের কথায়, ‘‘এই অবস্থায় গাড়ি সারানোর জন্য ১,২০০ টাকা দরকার বলে জানা যায়। আমরা যাত্রীরাই চাঁদা তুলতে শুরু করি। অবশেষে টাকা সংগ্রহের পর গাড়ি সারিয়ে সল্টলেকের উদ্দেশে রওনা হয়েছে।’’ উত্তম জানান, পরে কন্ডাক্টর নিজে টাকা জোগাড় করে যাত্রীদের টাকা ফেরত দিয়েছেন। তবে সরকারি বাস কর্তৃপক্ষের আচরণে ক্ষুব্ধ যাত্রীরা। তাঁরা জানান, কারও পরীক্ষা ছিল। কারও ট্রেন ধরার তাড়া ছিল। কেউ জরুরি কাজে কলকাতা যাচ্ছেন। সবাই কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন। যাত্রীদের কথায়, ‘‘দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম (এসবিএসটিসি) কর্তৃপক্ষের এই তুঘলকি আচরণের বিহিত চাই।’’
প্রতি দিন নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে বর্ধমান, দুর্গাপুর এবং আসানসোল থেকে প্রচুর বাস কলকাতা যাওয়া-আসা করে। কিন্তু কিছু দিন ধরেই পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তবে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান সুভাষ মণ্ডল অবশ্য দায় চাপিয়েছেন চালকের উপর। তিনি বলেন, ‘‘এই ঘটনার জন্য সম্পূর্ণ দায়ী বাসের চালক। কারণ, প্রত্যেকটি বাসে একটি করে বাড়তি টায়ার রাখা থাকে। কিন্তু সোমবার চালক টায়ার খোলার যন্ত্রপাতি বাসে তুলতেই ভুলে গিয়েছেন। তার জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে। সে জন্য তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy