বোর্ড গঠনের পরে শশঙ্গা পঞ্চায়েতে। ছবি: উদিত সিংহ
সকাল থেকেই উত্তেজনা ছিল। পঞ্চায়েত ঘিরে রাস্তার দু’দিকে দুই গোষ্ঠীর লোকজনকে জমায়েত হতে দেখা যাচ্ছিল। মোতায়েন ছিল পর্যাপ্ত পুলিশ। শেষ পর্যন্ত অবশ্য নির্বিঘ্নেই প্রধান-উপপ্রধান নির্বাচন হল খণ্ডঘোষের শশঙ্গা পঞ্চায়েতে।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সরকারি ভাবে ভোটের রাস্তায় না গিয়ে হাত তুলে দু’পক্ষের সম্মতিতে এই নির্বাচন করা হয়। প্রধান হন রিম্পা সাহা প্রামাণিক, উপপ্রধান গোলক রায়। বোর্ড গঠনের পরে প্রথম বৈঠক শেষে অবশ্য এক দল তৃণমূল সদস্যের দাবি, ‘‘দলীয় নির্দেশ মানা হল না। যে গোষ্ঠীর সদস্য বেশি, তাঁদের মধ্যে প্রধান করা হল। দল নির্বাচিত প্রধান হয়ে গেলন উপপ্রধান। উপপ্রধানে নাম থাকা সদস্য ছিটকে গেলেন।’’
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা নাগাদ শশঙ্গা পঞ্চায়েতে প্রধান-উপপ্রধান নির্বাচিত হয়। তার ঘণ্টাখানেক আগে সদস্যদের ভিতরে ঢুকিয়ে নেয় ব্লক প্রশাসন। ২২ সদস্যের মধ্যে ১৭ জন হাজির ছিলেন। তৃণমূল সূত্রের খবর, তাদের ১৬ জনের মধ্যে ব্লক সভাপতি অপার্থিব ইসলামের ঘনিষ্ঠ ছিলেন ৯ জন। বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগের অনুগামী ৭ জন। ছিলেন এক সিপিএম সদস্যাও। শাসক দল সূত্রের দাবি, এই পঞ্চায়েতে প্রথম তালিকায় প্রধান হিসেবে গোলক রায়ের নাম ছিল। বুধবার রাতে তাঁর বদলে দল রিম্পার নাম পাঠায়। কিন্তু উপপ্রধান হিসেবে নাসিরা বেগমের নাম পরিবর্তন করেনি। কিন্তু এ দিন সদস্যেরা আলোচনা করে ঠিক করেন, ব্লক সভাপতির অনুগামী প্রধান হলে বিধায়ক অনুগামী গোলক উপপ্রধান করা হোক।
ব্লক সভাপতির অনুগামীদের অভিযোগ, সুন্দরবন বেড়াতে গিয়ে দলের বিধায়কের অনুগামীদের হামলার মুখে পড়তে হয় ১২ জন পঞ্চায়েত সদস্যকে। তাদের মধ্যে পাঁচ জনকে ‘অপহরণ’ করা হয় বলেও অভিযোগ। ঘটনাচক্রে, এ দিন বোর্ড গঠনে ওই পাঁচ জন গরহাজির ছিলেন। অভিযোগ, বিধায়কের অনুগামীকে প্রধান করা হতে পারে, এই আশঙ্কা করেই সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য পরিবার নিয়ে বাসে সুন্দরবন বেড়াতে গিয়েছিলেন। বুধবার বাসন্তীর গদখালি থেকে বর্ধমানে ফেরার সময়ে বাস আটকে বিধায়কের অনুগামী বলে পরিচিত খণ্ডঘোষ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য সাইফুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ ওঠে। এ দিন সাইফুদ্দিন দাবি করেন, ‘‘আমি তো বোঝাতে গিয়েছিলাম।’’
বুধবারের ঘটনার পরে এ দিন কড়া পুলিশি নিরাপত্তা ছিল পঞ্চায়েত ঘিরে। খণ্ডঘোষের ওসি সুব্রত বেরার নেতৃত্বে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়। প্রধান-উপপ্রধান নির্বাচনের পরে সদস্যেরা পঞ্চায়েত থেকে এক সঙ্গে বেরিয়ে আসেন।
গোলক রায় উপপ্রধান হওয়ার পরে বলেন, ‘‘দলের নির্দেশই শেষ কথা। দল ভোটাভুটি চায়নি। আমরাও নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy