তৃণমূলের মিছিল। নিজস্ব চিত্র
জাতীয় নাগরিক পঞ্জির প্রতিবাদে পরপর দু’দিন শহরে মিছিল করল তৃণমূল। দুই মিছিলে প্রশ্ন উঠেছে দলেই। বিরোধীদেরও দাবি, বোঝা যাচ্ছে তৃণমূলের ফাটল কত গভীরে।
বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুই মিছিলেই হাঁটেন দলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ, জেলা কমিটির কো-অর্ডিনেটর তথা সহ সভাধিপতি দেবু টুডু। স্বপনবাবুর দাবি, “এনআরসি নিয়ে গত ৮ সেপ্টেম্বর মিছিল করার কথা ছিল। কিন্তু আমাদের দলের নেতা সেলিম খান মারা যান বলে মিছিল স্থগিত রাখতে হয়। সেই মিছিলটিই বৃহস্পতিবার শহর কমিটির উদ্যোগে হয়। আর শুক্রবার তো উদ্বাস্তুদের মিছিল। তাঁরা আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, সে জন্য এসেছি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘সিপিএম উদ্বাস্তুদের নিয়ে এনআরসির নামে রাজনীতি করতে চাইছে, সেটা করতে দিতে পারি না।’’
বৃহস্পতিবার শহর সভাপতি তথা বর্ধমান পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল অরূপ দাসের ডাকে স্টেশন থেকে কার্জন গেট পর্যন্ত মিছিল হয়। মিছিল শেষে অরূপবাবু বলেন, ‘‘লোক হবে না অনেকে ভেবেছিল। কেউ কেউ এই মিছিলে লোক আসতে বাধা দিয়েছিল। কিন্তু তাঁরা সফল হয়নি। দল কারও বাপের সম্পত্তি নয়, মিছিলই সেটা বুঝিয়ে দিচ্ছে।’’ তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, বক্তব্যের তির ছিল আর এক প্রাক্তন চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল খোকন দাসের দিকে। এ দিন খোকনবাবুর উদ্যোগে ‘পূর্ব বর্ধমান উদ্বাস্তু মানব কল্যাণ পরিষদের’ নামে টাউন হল থেকে রাজবাটীর উত্তর ফটক পর্যন্ত একটি মিছিল হয়। তাঁর পাল্টা জবাব, “এই মিছিলই প্রমাণ করছে আমাদের সঙ্গে কত মানুষ রয়েছে।’’ দু’টি মিছিলেই অন্যের অনুগামীদের দেখা যায়নি।
তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের একাংশের দাবি, পরপর দু’দিন মিছিল করার উদ্দেশ্য শহরে কার ক্ষমতা বেশি, সেটাই দেখানো। বিরোধীদের দাবি, বিধানসভায় ২৮ হাজারের বেশি ভোটে জেতা আসনে তৃণমূল লোকসভায় কোনও রকমে জিতেছে। দল বারবার এক হয়ে চলার বার্তা দিলেও তাতে যে কোনও কাজ হয়নি, সেটা বোঝা যাচ্ছে। বিজেপির সাংগঠনির জেলা সভাপতি (বর্ধমান সদর) সন্দীপ নন্দীর দাবি, ‘‘তৃণমূলের চেহারা বুঝতে পারছেন মানুষ। একে সেতু বন্ধে ব্যবসায় ক্ষতি হচ্ছে। মিছিলেও সেটারই রেশ রইল।’’
খোকনবাবু বলেন, “অনেক আগেই এই মিছিল করার কথা ছিল। দলীয় অনুমোদন নিয়ে মিছিলটি করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে যাঁদের তাড়ানোর উদ্দেশ্য নিয়ে এনআরসি চালু করতে চাইছে তাঁরাই এই মিছিল করেছে। সে জন্য এই মিছিল বাতিল করা যেত না।’’ আর অরূপবাবু বলেন, “পরপর দু’দিন কেন মিছিল হল, তার ব্যাখা জেলা সভাপতিই দিতে পারবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy