কান্নায় ভেঙে পড়েছেন দোকানের মালিক। —নিজস্ব চিত্র
ক্রেতা সেজে দোকানে প্রবেশ। তার পর গয়না দেখার অছিলায় এক এক করে হাতিয়ে নেওয়া ১০টি সোনার হার, কয়েকটি আংটি, মঙ্গলসূত্র-সহ বেশ কিছু মূল্যবান গয়না। দোকানদার চিৎকার করায় পাওনা টাকার দাবিতে পাল্টা চিৎকার দুষ্কৃতীদের। এমনই অভিনব কায়দায় দিনেদুপুরে সোনার দোকান থেকে কয়েক লক্ষ টাকার গয়না ডাকাতি করে পালাল দুষ্কৃতীরা। খাস বর্ধমান শহরের বুকে এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য। আতঙ্কিত ব্যবসায়ীরা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
বর্ধমান শহরের বিবি ঘোষ রোড ও পার্কাস রোডের জংশনে ছোটখাটো এই সোনার দোকানটিতে কোনও সিসিটিভি নেই। দোকানের মালিক ও তাঁর মেয়ে পালা করে দোকানে বসেন। সোমবার ডাকাতির সময় দোকানে ছিলেন মেয়ে দীপান্বিতা দত্ত। তিনি জানিয়েছেন, দুপুর তিনটে নাগাদ দুই যুবক দোকানে এসে হাজির হয়। তাদের মুখে মাস্ক ছিল না। হিন্দি ভাষায় কথাবার্তা বলছিল। নানা ধরনের গয়না দেখার অছিলায় কথাবার্তা শুরু করে তারা। নানা ভাবে সময় কাটিয়ে একটার পর একটা গয়না হাতিয়ে নিতে থাকে।
দুই যুবকের অসৎ উদ্দেশ্য টের পেয়ে চিৎকার শুরু করেন ওই তরুণী। সাধ্যমতো বাধা দেওয়ার চেষ্টাও করেন। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই দোকানের সামনে দাঁড় করিয়ে রাখা বাইকে চেপে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। তরুণীর চিৎকার শুনে ছুটে আসেন আশেপাশের দোকানদাররা। ব্যবসায়ী সুরক্ষা সমিতির সম্পাদক বিশ্বেশ্বর চৌধুরী থানায় খবর পাঠান। দ্রুত বর্ধমান থানার আইসি পিন্টু সাহার নেতৃত্ব পুলিশ এসে তদন্ত শুরু করে।
আরও পড়ুন: শিলিগুড়িতে অশোক, ফিরহাদ এক মঞ্চে, কটাক্ষ দিলীপের
প্রত্যক্ষদর্শী সন্দীপ স্যানাল বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা ক্রেতা সেজে আসায় আশপাশের দোকানদাররাও কিছু বুঝতে পারেননি। মহিলার চিৎকারের পাল্টা হিসেবে দুষ্কৃতীরা টাকা চাইছিল এবং গালিগালাজ করছিল। ফলে আমরা ভেবেছি, ক্রেতা-বিক্রেতার সমস্যায় বাকবিতণ্ডা। কিন্তু যতক্ষণে সবার ভুল ভেঙেছে, ততক্ষণে বাইক নিয়ে চম্পট দিয়েছে দুষ্কৃতীরা।’’
বিশ্বেশ্বর চৌধুরী বলেন, ‘‘এ ভাবে দিনেদুপুরে জনবহুল এলাকায় ডাকাতির ঘটনা ভাবাই যায় না। ব্যবসায়ীরা রীতিমতো আতঙ্কিত। আরও নিরাপত্তা বাড়াক পুলিশ।’’ অন্য দিকে দোকানদারদেরও আরও সেচতন হওয়া এবং নিরাপত্তা বাড়ানোর আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: সারদা-নারদা এবং বিজেপি নিয়ে কল্যাণের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ অপরূপা
কয়েক মাস আগেই বর্ধমানের বিসি রোডে সোনার বিনিময়ে ঋণদানকারী একটি সংস্থায় ৩০ কেজি সোনা ডাকাতি হয়। দুস্কৃতীরা গুলি চালিয়ে একজনকে জখম করে পালিয়ে গিয়েছিল। থানার অদূরেই ওই ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছিল। এ ছাড়াও শহরে আরও বেশ কিছু চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। ফলে পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলে সরব ছিলেন ব্যবসায়ী মহল। ফের একই ধরনের ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পুলিশি নিরাপত্তা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy