Advertisement
০২ মে ২০২৪
Vande Bharat Express

আরও সুরক্ষিত ‘বন্দে ভারত’, বিমানের মতো থাকবে ব্ল্যাক বক্স, তৈরি হচ্ছে বাংলার কারখানায়

Vande Bharat Express

—প্রতীকী ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২৩ ২৩:১০
Share: Save:

আরও সুরক্ষিত হতে চলেছে ‘বন্দে ভারত’। বিমানের মতো তাতে থাকবে বক্স সুরক্ষা কবচ। চালক কী কথা বলছেন, তা-ও রেকর্ড হয়ে থাকবে। কোনও কারণে দুর্ঘটনা ঘটলে পরে তার কারণ সম্পর্কে বিশদে জানা যাবে এই ব্ল্যাক বক্স থেকে। গেরুয়া এবং সাদা রঙের এই ট্রেন চলবে ঘণ্টায় ১৩০ কিমি বেগে। নতুন এই ‘পুশপুল এরোডাইনামিক’ প্রযুক্তিসম্পন্ন ‘বন্দে ভারত’ তৈরি হচ্ছে এ রাজ্যের চিত্তরঞ্জন রেলইঞ্জিন কারখানায়।

কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে দু’টি ইঞ্জিন তৈরির কাজ সেপ্টেম্বরেই সম্পূর্ণ হবে। কর্তৃপক্ষের কাজ ভাল লাগলে আরও ইঞ্জিন তৈরির বরাত পাবে এই কারখানা বলে আশাবাদী কর্মাচারীরা। দু’টি ইঞ্জিনের মাঝে থাকবে ২৪টি কামরা। সামনের ইঞ্জিনটি কামরাগুলিকে টানবে এবং পিছনের ইঞ্জিনটি সেগুলিকে ঠেলবে। একেই বলে ‘পুশপুল সিস্টেম’। এই ইঞ্জিনগুলি তৈরি হলেই তা চলে যাবে আইসিএফ (ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি) রেলওয়ে কোচ তৈরির কারখানায়। এর পর নতুন ২৪টি কামরা সহযোগে এই ট্রেন পরীক্ষামূলক ভাবে চালানো হবে। সেপ্টেম্বর মাসেই এই ইঞ্জিনগুলি আইসিএফে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

নতুন প্রযুক্তিসম্পন্ন ‘বন্দে ভারত’ তৈরি হচ্ছে চিত্তরঞ্জন রেলইঞ্জিন কারখানায়।

নতুন প্রযুক্তিসম্পন্ন ‘বন্দে ভারত’ তৈরি হচ্ছে চিত্তরঞ্জন রেলইঞ্জিন কারখানায়। —নিজস্ব চিত্র।

আইসিএফ থেকে চিত্তরঞ্জন রেলইঞ্জিন কারখানায় সম্প্রতি জেনারেল ম্যানেজারের পদে নিযুক্ত হয়েছেন দেবীপ্রসাদ দাশ। তিনি বলেন, ‘‘এ বছরের জুনের শেষে আমরা রেলওয়ে বোর্ড থেকে ‘বন্দে ভারত’ ইঞ্জিন তৈরির বরাত পাই। আমরা ডিজাইন তৈরি করে ফেলি সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে। এই কারখানায় ডব্লিউএপি ৫ এরোডায়নামিক ফেস মডেলের ইঞ্জিন তৈরি হত। আগে সেই ফেস ছিল ২০ ডিগ্রি। এখন তা করা হল ৪৫ ডিগ্রি। অর্থাৎ সেমি বুলেটের লুক দেওয়া হচ্ছে। ফলে বাতাসে হাওয়ার বাধা অনেকটাই কম আসবে।’’

শুধু মডেল বা চেহারার পরিবর্তন নয়, আরও অনেক অত্যাধুনিক বৈচিত্র্য আনা হয়েছে। এই ইঞ্জিনটির মধ্যে সব থেকে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে ইঞ্জিনের সুরক্ষা কবচ। লুকিং গ্লাস অনেক বড় করা হয়েছে। সিসিআর ভিসি প্রযুক্তিতে লোকো পাইলটের কথাবার্তা বা যদি তিনি কোনও ভুল কিছু করে থাকেন, তা বিশেষ ভাবে রেকর্ড হয়ে থাকবে ওই সিস্টেমের মধ্যে। যদি কখনও কোনও দুর্ঘটনা ঘটে, তার পর্যালোচনা করা যাবে। প্লেনে যেমন ব্ল্যাকবক্স থাকে, সে রকম ব্ল্যাকবক্স থাকছে এই ইঞ্জিনে। সামনের ইঞ্জিন থেকেই পিছনের ইঞ্জিনকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। অর্থাৎ এক জন লোকো পাইলটই দুই প্রান্তে দু’টি ইঞ্জিনকে একসঙ্গে কন্ট্রোল করতে পারবেন। তার জন্য আলাদা পাইলটের প্রয়োজন পড়বে না।

পাশাপাশি, এই ট্রেনে রয়েছে অত্যাধুনিক সিগনালিং ব্যবস্থা। লোকো পাইলট নিজের কন্ট্রোল রুম থেকেই মনিটরের মাধ্যমে সিগনালিং ব্যবস্থাকে কন্ট্রোল করতে পারবেন। স্টেশন মাস্টারের সঙ্গে পাইলট যদি যোগাযোগ করতে না পারেন, তা হলে ইঞ্জিনে স্বয়ংক্রিয় ব্রেক লাগবে। ইঞ্জিন-সহ কামরায় রয়েছে এলইডি আলোর ব্যবস্থা। এই আলো নিয়ন্ত্রণ করা হবে ইঞ্জিনের রুম থেকেই। কোন রুটে এই ট্রেন চলবে, তা অবশ্য এখন ঠিক হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE