Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

‘সার্জন হতে সমস্যা হবে না পরিবহের’

হাসপাতালে পরিবহ মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

হাসপাতালে পরিবহ মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

নীলোৎপল বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৯ ০১:৫৮
Share: Save:

হয়তো আর কোনও দিন সার্জন হতে পারবেন না পরিবহ মুখোপাধ্যায়! সাঁতারও আর কাটা হবে না তাঁর! আক্রান্ত চিকিৎসক পরিবহকে নিয়ে এমনই নানা দাবি উঠছে এনআরএস হাসপাতালের আন্দোলন-মঞ্চ থেকে। যদিও পরিবহ যে হাসপাতালে ভর্তি, সেই ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তেমন কোনও ঝুঁকি তাঁরা দেখছেন না। সেখানকার মেডিক্যাল সুপার প্রসেনজিৎ বর্ধন রায় রবিবার বলেন, ‘‘আজ দুপুর দেড়টা পর্যন্ত আমি ছিলাম। পরিবহ ভালই রয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবে কথা বলছেন। সাঁতার কাটতে বা সার্জন হতে তাঁর সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’’

গত ছ’দিনে সোশ্যাল মিডিয়ায় অন্যতম চর্চার বিষয় এনআরএস হাসপাতালে আক্রান্ত চিকিৎসক পরিবহের শারীরিক অবস্থা। অনেকেই দাবি করেছেন, পরিবহ সঙ্কটজনক অবস্থায় ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেসে ভর্তি রয়েছেন। কেউ বলছেন, তিনি আলো সহ্য করতে পারছেন না। কারও আবার দাবি, পরিবহ সব ভুলতে বসেছেন। তাঁর স্মৃতিভ্রংশ হচ্ছে। শনিবার রাতে এনআরএসে আন্দোলনরত চিকিৎসকেরাও সাংবাদিক বৈঠক করে দাবি করেন, ‘‘পরিবহ হয়তো আর কখনও সার্জন হতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে এক জন সম্ভাবনাময় চিকিৎসককে হারাবে সমাজ। আর কখনও সাঁতার কাটতেও পারবেন না পরিবহ।’’ আন্দোলনকারীদের আরও দাবি, ‘‘পরিবহের শর্ট টার্ম মেমরি লস হচ্ছে।’’ পরিবহ দৃষ্টিশক্তি হারাচ্ছেন বলেও চিকিৎসকদের আন্দোলন থেকে দাবি করা হয়।

শনিবার দুপুরেই অবশ্য মল্লিকবাজারের ওই হাসপাতালে গিয়ে দেখা গিয়েছিল, হাঁটাচলা করতে পারছেন পরিবহ। এক ইন্টার্ন এবং আর এক বন্ধু তাঁর সঙ্গে থাকছেন হাসপাতালের ছ’তলার ৬১৯ নম্বর ঘরে। তাঁদের সঙ্গে গল্প করে সময় কাটছে তাঁর। ছিলেন পরিবহের জামাইবাবুও। জানা গিয়েছিল, ওই দিনই মুরগির মাংস খেয়েছেন তিনি। দইও খেতে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। সন্ধ্যায় হাসপাতালেই তাঁর চুল কাটানোর ব্যবস্থা হয়। রাতে পরিবহের আন্দোলনরত সহপাঠীদের ওই দাবির পরে প্রশ্ন উঠেছিল, তবে কি ফের অবস্থার অবনতি হয়েছে তাঁর?

ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেসের সুপার অবশ্য বলেন, ‘‘রোগী তো ভালই আছেন। ওঁর কোনও সমস্যা তো আমার নজরে পড়েনি। ভাল ভাবেই কথা বলেছেন আমার সঙ্গে।’’

কিন্তু, পরিবহ যে দৃষ্টিশক্তি হারাচ্ছেন বলা হচ্ছে? প্রসেনজিৎবাবু বললেন, ‘‘রোগী এক বার বলেছিলেন, তাঁর দেখতে একটু সমস্যা হচ্ছে। সামান্য ঝাপসা লাগছে। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দু’জন চক্ষু চিকিৎসক ওঁকে দেখেছেন। ওঁরা খারাপ কিছু পাননি।’’ শোনা যাচ্ছে স্মৃতি হারাচ্ছেন পরিবহ..! থামিয়ে দিয়ে এ বার সুপার বলেন, ‘‘না না, সে রকম কিছু তো হচ্ছে না। আমার সঙ্গে তো ভালই কথা বললেন। বাকি ডাক্তারেরাও একই রিপোর্ট দিয়েছেন। সবই ঠিক আছে দেখলাম। আমরা খারাপ কিছু পাইনি।’’

প্রসেনজিৎবাবুর আরও দাবি, ‘‘পরিবহ মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন। সেই জায়গাটিকে আমরা রাইট ফ্রন্টাল রিজিয়ন বলি। ওই জায়গাটি তিন মাস পরে ফিলিং করে দেওয়া হবে। আপাতত আর কোনও সমস্যা নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE