E-Paper

হাতির হানার ভয়ে আলু বেচলেন অর্জুনের বাবা

শনিবার প্রায় চল্লিশ জন কৃষি-শ্রমিককে কাজে লাগিয়েছিলেন বিষ্ণু। সকলের হাজিরা মিলিয়ে কমপক্ষে পনেরো হাজার টাকা পারিশ্রমিক দিতে হবে। যে আলু উঠেছে, তা বেচে তার পরে হাতে বাঁচবে সামান্যই।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৬:২৭
Picture of Bishnu Das.

বিষ্ণু দাস। ফাইল চিত্র।

যে হাতি তাঁর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছেলে অর্জুনকে মেরেছে, তারই ভয়ে খেতের অপরিণত আলু তুলে বেচে দিলেন জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জের বিষ্ণু দাস। বন দফতরের কর্মীরা তাড়া দিয়ে জঙ্গলের গভীরে ঠেলার চেষ্টা করলেও, রাজগঞ্জের মহারাজঘাট এলাকার বাসিন্দাদের একটা বড় অংশের দাবি, রাতবিরেতে গ্রামে ঢুকছে সে হাতি, স্থানীয়রা যাকে এখন নাম দিয়েছেন ‘পাগলা’। এর মধ্যেই কয়েক বার বিভিন্ন খেতের ফসল নষ্ট করে, খেয়ে গিয়েছে সেই হাতি। তাই এলাকাবাসীর সঙ্গী এখন ভয়।

শনিবার প্রায় চল্লিশ জন কৃষি-শ্রমিককে কাজে লাগিয়েছিলেন বিষ্ণু। সকলের হাজিরা মিলিয়ে কমপক্ষে পনেরো হাজার টাকা পারিশ্রমিক দিতে হবে। যে আলু উঠেছে, তা বেচে তার পরে হাতে বাঁচবে সামান্যই। কিন্তু কিছুতেই মাঠে আলু ফেরে রাখতে রাজি নন তিনি। এ দিন সকালেই বাড়ি বয়ে এসে বন দফতরের আধিকারিক-কর্মীরা বলে গিয়েছিলেন, “পাগলাকে পার করে দেওয়া হয়েছে।” যদিও বেলা বাড়তেই পড়শিরা খবর দেন, ফের মহারাজঘাটের জঙ্গলে গাছের আড়ালে এসে দাঁড়িয়েছে সে দাঁতাল। আর ঝুঁকি নেননি বিষ্ণু। ফোনে পাইকারের সঙ্গে দরদাম করে, শ্রমিকদের ডেকে এনে পাঁচ বিঘা জমির আলু তোলানোর কাজ শুরু করেন তিনি।

বিষ্ণুর কথায়, ‘‘আলু পুরোপুরি তোলার মতো হলে হয়তো প্রতি কেজিতে সাড়ে চার টাকা দর পেতাম। পাইকার বলেছে, প্রতি কেজি ২ টাকা ৩০ পয়সা দেবে। অনেক ক্ষতি হবে। কিন্তু পাগলা যদি খেত তছনছ করে দেয়, কী হবে তখন?”

বিষ্ণুর খেতের পাশের আলপথে দাঁড়িয়ে দূরে জঙ্গল দেখা যায়। সে জঙ্গলপথেই বাইকে ছেলেকে নিয়ে হাতির মখোমুখি পড়েছিলেন তিনি। এ দিন ঘাটকাজ করেছেন সেই জঙ্গলের রাস্তা থেকে কিছুটা দূরে বসে।

আজ, রবিবার ছেলের তিন দিনের শ্রাদ্ধ, আগামী বুধবার নিয়মভঙ্গ। এলাকার রীতি মেনে সে আয়োজন করতে কিছু খরচও লাগবে।সরকারি ক্ষতিপূরণের পাঁচ লক্ষ টাকার চেক পেয়েছেন শুক্রবার। যদিও সে চেক ব্যাঙ্কে জমা দেওয়ার সময় পাননি।

তা ছাড়া, বিষ্ণুর বক্তব্য, “ভয় করছে। ব্যাঙ্কে যাওয়ার পথে যদি আবার হাতিটা সামনে এসে দাঁড়ায়।” তার পরেই পঞ্চাশ পেরোনো মানুষটার আক্ষেপ, “হাতিটা আমার অনেক ক্ষতি করে দিল!”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

elephant attack Jalpaiguri Death

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy