বিধানসভার বাইরে বিক্ষোভ বিজেপি বিধায়কদের। ফাইল চিত্র।
রাজ্যে অ্যাডিনোভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে সরকারপক্ষের বিবৃতি দাবি করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। জবাবে রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় নিজে এ বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। আপনি সে দিন সদনে ছিলেন না।” মন্ত্রী এই কথা বলার পরেই অধিবেশন চলার মাঝেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। তারা সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। বিজেপির অভিযোগ, রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বিবৃতি দেওয়ার পরেও অ্যাডিনোভাইরাস আক্রান্ত হয়ে একের পর এক শিশুর মৃত্যু হচ্ছে কী ভাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিজেপি বিধায়করা। অধিবেশন মুলতুবি হয়ে যাওয়ার পরও বিধানসভার বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা। বিজেপির দাবি, রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে একের পর এক শিশুমৃত্যু নিয়ে বিবৃতি দিতে হবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে। পরে এই বিষয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের উদ্দেশে তোপ দাগেন শুভেন্দু।
অন্য দিকে, বুধবার রাতে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ এবং বৃহস্পতিবার সকালে বিসি রায় শিশু হাসপাতালে আরও দু’জন শিশু মারা যায়। তবে তাদের মৃত্যুর কারণ অ্যাডিনোভাইরাস সংক্রমণ কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, কারণ জানতে নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। অ্যাডিনোভাইরাসের কারণে রাজ্যে বিসি রায় হাসপাতাল, কলকাতা মেডিক্যাল-সহ বেশ কয়েকটি হাসপাতালে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে একাধিক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। প্রত্যেক শিশুর শরীরে ছিল একই ধরনের উপসর্গ। জ্বর-কাশি-ঠান্ডা লাগা এবং তার সঙ্গে শ্বাসকষ্ট। তবে উপসর্গ কম-বেশি এক হলেও সমস্ত শিশুরোগীর শরীরেই অ্যাডিনোভাইরাস পাওয়া গিয়েছে, তা নয়। সম্প্রতিই এ নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে জানিয়েছিলেন সব শিশুর মৃত্যুই যে অ্যাডিনোভাইরাসের কারণে হচ্ছে তা নয়।
তবে চিকিৎসকেরা ইতিমধ্যেই সাবধানবাণী শুনিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, যে সমস্ত শিশু সংক্রমিত হওয়ার পর সেরে উঠেছে, তাদেরও আগামী এক বছর খুব সাবধানে রাখতে হবে। সংক্রমণে ওই শিশুদের ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একটু এ দিক-ও দিক হলেই আবার সংক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর তাদের চিকিৎসককে দেখাতে হবে। এক্স-রে করে ফুসফুসের অবস্থা পরীক্ষা করতে হবে। এখনও যারা জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে, তাদের প্রথমেই অ্যান্টিবায়োটিক দিতে বারণ করছেন চিকিৎসকেরা। বরং রোগীকে প্রথমে প্যারাসিটামল দেওয়া এবং প্রচুর জল খাওয়ানোর কথা বলছেন তাঁরা। তা ছাড়াও ছোটদের মাস্ক পরানোর উপর জোর দিতে বলছেন চিকিৎসকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy