Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
mukul roy

মুকুলকে চাপে ফেলার পরিকল্পনা, হার জেনেও রাজ্যসভা নির্বাচনে লড়ার ভাবনা বিজেপি-র

নিয়ম অনুযায়ী বিধানসভা ও সংসদে দলীয় বিধায়ক, সাংসদদের উপরে নির্দেশ মান্য করার হুইপ জারি করতে পারে কোনও রাজনৈতিক দল।

৯ অগস্ট বাংলায় রাজ্যসভার উপনির্বাচন।

৯ অগস্ট বাংলায় রাজ্যসভার উপনির্বাচন। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২১ ১৫:৩৫
Share: Save:

দীনেশ ত্রিবেদীর পদত্যাগে খালি হওয়া রাজ্যসভার আসনে ভোটাভুটিতে জয়ের সম্ভাবনা না থাকলেও প্রার্থী দিতে চায় বিজেপি। মূলত সেই নির্বাচনে দলীয় বিধায়কদের উপরে হুইপ জারি করে দলবদল করা মুকুল রায়ের উপরে চাপ তৈরি করাই হবে বিজেপি-র লক্ষ্য। এ নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হলেও এখনই মুখ খুলতে চাইছেন না কোনও বিজেপি নেতা। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে শীঘ্রই রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কথা বলবে বলেও বিজেপি সূত্রে খবর।

৯ অগস্ট বাংলায় রাজ্যসভার উপনির্বাচন। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার সময় গত ফেব্রুয়ারি মাসে রাজ্যসভার সাংসদ পদ ত্যাগ করেছিলেন দীনেশ। সেই ফাঁকা আসনে ভোটগ্রহণের জন্য শুক্রবার দিনক্ষণ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। যে কোনও দিন নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হতে পারে ধরে আগে থেকেই বিজেপি এ নিয়ে আলোচনা সেরে রেখেছে বলে গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর।

বিজেপি-র টিকিটে কৃষ্ণনগর উত্তর আসন থেকে মুকুল বিধায়ক হলেও গত ১১ জুন তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন। খাতায়কলমে তিনি এখনও অবশ্য বিজেপি-র বিধায়ক। এ নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে দলত্যাগবিরোধী আইন কার্যকরের দাবি তুলে স্পিকারের কাছে আর্জি জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এ বার রাজ্যসভা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়ে হুইপ জারি করে মুকুলকে চাপে ফেলতে চায় বিজেপি। দলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, ‘‘বিধানসভার রীতি ভেঙে মুকুল রায়কে পিএসি-র চেয়ারম্যান করা হয়েছে। তিনি খাতায়কলমে বিজেপি বিধায়ক। বিধানসভায় বিরোধী বেঞ্চেই বসছেন। এই অবস্থায় দলের হুইপ অমান্য করলে মুকুল রায়ের উপরে চাপ তৈরি হব। এখনই রাজ্য বিধানসভায় কোনও বিলের উপরে ভোটাভুটির সম্ভাবনা নেই। তাই রাজ্যসভার উপনির্বাচনে সেই চাপ তৈরি করা হবে বলে প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে।’’

সাংবিধানিক নিয়ম অনুযায়ী বিধানসভা ও সংসদে দলীয় বিধায়ক, সাংসদদের উপরে নির্দেশ মান্য করার হুইপ জারি করতে পারে কোনও রাজনৈতিক দল। একসঙ্গে মোট সদস্যের কমপক্ষে দুই তৃতীয়াংশ হুইপ অমান্য করতে পারেন। সেটা না হলে সংশ্লিষ্ট সদস্যদের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর হতে পারে। পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক (চিপ হুইপ) এই নির্দেশ জারি করেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন-সহ কিছু কিছু ক্ষেত্রে না করা গেলেও অন্য অনেক ক্ষেত্রে হুইপ জারির অধিকার রয়েছে। তিন রকমের হুইপ জারি করা যায়। ‘ওয়ান-লাইন হুইপ’জারি হলে কোনও ভোটাভুটির ক্ষেত্রে দলের নির্দেশ মেনে চলতে হয় বিধায়ক বা সাংসদকে। তিনি সেটা না মানতে চাইলে ভোটদানে বিরত থাকতে পারেন। ‘টু-লাইন হুইপ’-এর ক্ষেত্রে ভোটের সময়ে দলীয় সদস্যকে বিধানসভা বা সংসদে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া যায়। আর ‘থ্রি-লাইন হুইপ’ জারি হলে রাজনৈতিক দল সরাসরি কাকে ভোট দিতে হবে তার নির্দেশ দিতে পারে।

মুকুলের উপরে চাপ তৈরির জন্য কী ধরনের হুইপ জারি করতে পারে বিজেপি? এ ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত বিজেপি নেয়নি বলেই খবর। বিধানসভায় দলের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গাকে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তিনি আনন্দবাজার অনলাইনের ফোনে সাড়া দেননি। তবে চাপ তৈরি করা গেলেও এমন হুইপে কাজের কাজ কিছু হবে না বলেই মনে করছে বিজেপি-র একাংশ। ওই অংশের এক নেতার কথায়, ‘‘রাজ্যসভার ভোট হবে নির্বাচন কমিশনের আওতায়। আর সেখানে দলীয় নির্দেশ না মানা হলে বিধানসভার স্পিকার কারও সদস্যপদ খারিজ করতে পারেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এমন কোনও নজিরও নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Dilip Ghosh mukul roy Suvendu Adhikari
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE