Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
BJP

বিধানসভা বয়কটে বিজেপি, বৈঠকে নেই মুকুল-শুভেন্দু

বিজেপির এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছে শাসক তৃণমূল।

দলের নবনির্বাচিত বিধায়ক দের সঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বিধানসভায়।

দলের নবনির্বাচিত বিধায়ক দের সঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বিধানসভায়। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২১ ০৬:৫২
Share: Save:

আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রধান বিরোধী দল হওয়ার পরে বিধানসভা বয়কট করে তাদের রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করতে চলেছে বিজেপি। দলের নবনির্বাচিত বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়ে দিয়েছেন, ফল প্রকাশের পর থেকে রাজ্যে ঘটে চলা সন্ত্রাস বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের বিধায়কেরা কেউ বিধানসভায় আসবেন না। বিজেপির এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছে শাসক তৃণমূল।

নতুন বিধানসভার প্রথম অধিবেশন ডাকা হয়েছে আজ, শনিবার। সেখানে স্পিকার নির্বাচন হওয়ার কথা। বিজেপি নেতৃত্ব শুক্রবার যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেই অনুযায়া তাঁদের বিধায়কেরা স্পিকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না। জেলাভিত্তিক ভাগ করে দু’দিন নতুন বিধায়কদের শপথ গ্রহণ কর্মসূচি ছিল বিধানসভায়। বিজেপির সব বিধায়কের শপথ নেওয়াও সম্পূর্ণ হয়নি। যাঁদের বাকি থেকে গেল, পরে স্পিকারের কাছে গিয়ে শপথ নিতে হবে তাঁদের। সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের নেতৃত্বে ১৯৭২ সালে যখন কংগ্রেসের সরকার ক্ষমতায় আসে, নির্বাচনী ও রাজনৈতিক সন্ত্রাসের প্রতিবাদে সে বার টানা পাঁচ বছর বিধানসভা বয়কট করেছিল বিরোধী দল সিপিএম। বিজেপির বয়কটের সিদ্ধান্ত কত দিনের জন্য, তা অবশ্য এ দিন স্পষ্ট করেননি দিলীপবাবু। তিনি বলেন, ‘‘ফল প্রকাশের পর থেকে জেলায় জেলায় সন্ত্রাস চলছে। প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আমাদের বিধায়কদের প্রথম কাজ এখন আক্রান্ত মানুষ এবং দলের কর্মী-সমর্থকদের পাশে দাঁড়ানো। সন্ত্রাস বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত বিধায়কেরা কেউ বিধানসভায় আসবেন না।’’

তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘বিধায়কদের শপথ নেওয়ার পরে বিধানসভা বয়কট করার এই সিদ্ধান্ত থেকেই বোঝা যায়, গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি ও পরিষদীয় রাজনীতির প্রতি ওঁদের শ্রদ্ধা কতটুকু! কী এমন সন্ত্রাস হয়েছে? দু’মাস ধরে বিজেপির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতারা হিংসায় উস্কানি দিয়েছেন, তার পরে সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরি করেছেন। এখন যে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে, তা কড়া হাতে মোকাবিলার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেও এমন সিদ্ধান্ত লজ্জাজনক!’’

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, বিধানসভায় এ দিন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবু বিধায়কদের নিয়ে যে বৈঠক করেছেন, সেখানে উপস্থিত ছিলেন না দলের দুই প্রথম সারির মুখ মুকুল রায় ও শুভেন্দু অধিকারী। মুকুলবাবু বিধায়ক হিসেবে শপথ নিয়েই বিধানসভা ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। শুভেন্দুকে এ দিন আর বিধানসভায় দেখা যায়নি। বিরোধী দলনেতা হওয়ার দৌড়ে নাম রয়েছে এই দুই নেতারই। বিধায়কদের প্রথম বৈঠকেই তাঁদের অনুপস্থিতি জল্পনা বাড়িয়েছে। রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবুর সঙ্গে ওই দুই নেতার ‘সম্পর্ক’ নিয়ে নানা চর্চা আছে বিজেপির অন্দরে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তা হলে কি সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ অন্য কাউকে বিরোধী নেতা বেছে নিতে পারেন দিলীপবাবুরা? শুভেন্দু-মুকুলের অনুপস্থিতিকে অবশ্য তেমন গুরুত্ব দিতে চাননি দিলীপবাবু। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এই বৈঠকে কারও উপস্থিতি বাধ্যতামূলক ছিল না।’’

কোভিড পরিস্থিতির উন্নতি হলে রাজ্যে বকেয়া পুরসভাগুলির নির্বাচন হতে পারে এবং তার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দেওয়ার জন্য এ দিনের বৈঠকে বিধায়কদের পরামর্শ দিয়েছেন দিলীপবাবু। সন্ত্রাস-কবলিত এলাকায় দলের কর্মী-সমর্থকদের পাশে থাকার নির্দেশও দিয়েছেন। তবে বিধায়কদের একাংশের প্রশ্ন, এখনও বিরোধী দলনেতা ঠিক হয়নি। প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে চাইলেও ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না মুকুল-শুভেন্দুর মতো নেতাদের। তা হলে বিধায়কদের কথা শুনবেন কে?

ভোটের পরে মহিলাদের উপরে হামলার প্রতিবাদে এ দিন মেয়ো রোডে গাঁধী মূর্তির পাদদেশে ধর্নায় যোগ দিয়েছিলেন বিজেপির সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, মহিলা মোর্চার সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল, কোয়ম্বত্তূরের বিধায়ক বিনতি শ্রীনিবাসন প্রমুখ। কোভিড বিধি ভাঙার অভিযোগে রূপা, অগ্নিমিত্রাকে গ্রেফতার করে লালবাজারে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়। নবনির্বাচিত বিধায়ক অগ্নিমিত্রার অভিযোগ, ‘‘প্রতিবাদ করতে দেবে না বলেই পুলিশ আমাদের গ্রেফতার করেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE