Advertisement
E-Paper

ঠাকুরনগরের মুষলপর্বে ঢুকতে নারাজ বিজেপি! দাদা সুব্রতের সঙ্গে ভাই শান্তনুর দ্বন্দ্বের দ্রুত অবসান হবে, আশায় পদ্মশিবির

দুই ভাইয়ের এই দ্বন্দ্বে বড় ছেলে সুব্রত ঠাকুরের পাশে দাঁড়িয়েছেন মা ছবিরানি ঠাকুর এবং তৃণমূল সাংসদ তথা ঠাকুর পরিবারের আর এক সদস্যা মমতাবালা ঠাকুর ও তাঁর বিধায়ক কন্যা মধুপর্ণা ঠাকুর।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০২৫ ১৩:৪৯
BJP will not be involved in the feud between BJP MP Shantanu Thakur and BJP MLA Subrata Thakur

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি বনগাঁর ঠাকুরনগরের মতুয়াবাড়িতে। ভাই কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে জোর লড়াই বেধেছে বিধায়ক দাদা সুব্রত ঠাকুরের। এমন মুষলপর্বে বনগাঁর ঠাকুরনগরের মতুয়াবাড়ির অভ্যন্তরীণ কলহে প্রবেশ করতে নারাজ রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। ঘটনার সূত্রপাত শনিবার। ওই দিন শান্তনুর অনুগামীরা নাটমন্দিরে বিশেষ শিবিরের আয়োজন করায় তা নিয়ে আপত্তি তোলেন সুব্রত। পাল্টা শান্তনুর অনুগামীরা অভিযোগ করেন, সেখানে গিয়ে মতুয়া ভক্তদের হুমকি দিয়েছেন গাইঘাটার বিজেপি বিধায়ক। আবার সুব্রত দাবি করেন, নাটমন্দিরে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়। সেখানে শিবির করলে অসুবিধা হতে পারে। তাই তিনি আপত্তি করেছিলেন। কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনুর বিরুদ্ধেও ঠাকুরবাড়ির ক্ষমতা কুক্ষিগত করার অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি বিধায়ক দাদা। জবাবে মন্ত্রী হতে দাদা সুব্রত তৃণমূলে যোগদান করবেন বলে আক্রমণ করেছেন শান্তনু।

এই ঘটনায় স্পষ্ট বিভাজন ধরা পড়েছে মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে। দুই ভাইয়ের এই দ্বন্দ্বে বড় ছেলে সুব্রতের পাশে দাঁড়িয়েছেন মা ছবিরানি ঠাকুর এবং তৃণমূল সাংসদ তথা ঠাকুর পরিবারের আর এক সদস্যা তথা তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর ও তাঁর বিধায়ক কন্যা মধুপর্ণা ঠাকুর। এমন বিভাজনের কথা জানতে পেরে দিল্লি থেকে ভিডিয়োবার্তা প্রকাশ করে ছোট ছেলে শান্তনুর পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রধান সেবায়েত মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর। তিনি বড় ছেলে সুব্রতের আচরণের নিন্দা করে ছোট ছেলে শান্তনুকে সমর্থন করেছেন। এমন পারিবারিক বিভাজনকে প্রত্যক্ষ করে আপাতত নীরব থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির একটি সূত্র জানাচ্ছে, এ বিষয়ে দলের রাজ্য সভাপতি তথা রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের মৌন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। এ বিষয়ে তাঁরাও প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করবেন না বলেই জানা গিয়েছে।

বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার এক প্রবীণ নেতার কথায়, ‘‘সুব্রত যেমন গাইঘাটার বিজেপি বিধায়ক, তেমনই শান্তনু আবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য। দু’জনেই আমাদের কাছে অত্যন্ত অপরিহার্য। তাই আমরা কারও পক্ষ নিতে পারি না। দুই ভাইয়ের মধ্যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, আমরা আশা করি দুই ভাই সেই সমস্যা মিটিয়ে নেবেন। এ নিয়ে দলগত ভাবে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই।’’ ঠাকুরনগরের মতুয়াবাড়ির একটি সূত্র জানাচ্ছে, প্রয়াত কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের সঙ্গে সুব্রত-শান্তনুর পিতা মঞ্জুলকৃষ্ণের বিবাদ ছিল সর্বজনবিদিত। সেই বিবাদে সব সময় দুই সহোদরকে তাঁদের পিতার পাশেই দেখা যেত। এমনকি ২০১৫ সালের বনগাঁ লোকসভার উপনির্বাচনে যখন সুব্রত বিজেপি প্রার্থী হিসেবে তৃণমূল প্রার্থী তথা জেঠিমা মমতাবালার বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন, তখনও বাবা এবং ভাইকে পাশে পেয়েছিলেন তিনি। তাই শান্তনু-সুব্রতর মধ্যে এ হেন বিবাদ গভীরতর হতে পারে না বলেই মনে করছেন অনেকেই।

ঠাকুরবাড়িতে ভাইয়ে-ভাইয়ে বিবাদ কোনও নতুন ঘটনা নয়। মেজভাই মৃদুলকৃষ্ণ ঠাকুরের মৃত্যুর পর কপিল ও মঞ্জুলের বিবাদ নিয়ে সর্বদাই সরগরম থেকেছে মতুয়াবাড়ির রাজনীতি। তার পর দীর্ঘ সময় সুব্রত-শান্তনুর সঙ্গে ঘরোয়া বিবাদ চলেছে জেঠিমা মমতাবালার। এ ক্ষেত্রে তাঁকে সমর্থন দিয়েছে বাংলার শাসকদল তৃণমূল। আপাতত শান্তনু-সুব্রতের বিবাদে সেই দ্বন্দ্ব কিছুটা স্তিমিত রয়েছে। রাজ্য বিজেপির একটি সূত্র জানাচ্ছে, সুব্রত-শান্তনুর বিবাদ মিটে যাবে বলেই ধরে নিচ্ছেন তাঁরা। কারণ, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের সময়েও দুই ভাইয়ের মধ্যে চাপা বিবাদ হয়েছিল। সেই দ্বন্দ্ব বেশি ক্ষণ স্থায়ী হয়নি। তাই বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছেন, এ বারের দ্বন্দ্বও বেশি দিন স্থায়ী হবে না।

Santanu Thakur Mamata Bala Thakur BJP TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy