ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) কাজে বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমারেশন ফর্ম দেওয়ার পরে তা পূরণ করা, সেই ফর্ম সংগ্রহ করে সেখানে থাকা সব তথ্য নিজেদের মোবাইলে এন্ট্রি করতে হচ্ছে বুথ লেভেল অফিসারদের (বিএলও)। আর সেই কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন তাঁরা। এ বার তাই বিএলও-দের জন্য ট্যাব দেওয়ার দাবি উঠল। ‘শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী বিএলও ডিউটি প্রতিরোধ মঞ্চ’-এর আহ্বায়ক অনিমেষ হালদার বলেন, ‘‘আমরা একাধিক দাবি জানিয়ে দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে (সিইও) চিঠি দিয়েছি। সেখানে প্রত্যেক বিএলও-কে আলাদা ট্যাব দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। অধিকাংশ বিএলও ডেটা এন্ট্রি করতে পারদর্শী নন। নিজেদের ফোনে তাঁরা সেই তথ্য তুলতে গিয়ে নাস্তানাবুদ হচ্ছেন। তাই আমাদের এই দাবি।’’
বিএলও-দের একাংশ মনে করছেন, তাঁদের এই দাবির যথেষ্ট সারবত্তা রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএলও বলেন, ‘‘ফর্ম দেওয়া এবং সেই ফর্ম সংগ্রহের পরে বাড়িতে বসে নিজেদের মোবাইলে ডেটা এন্ট্রি করতে হচ্ছে। বাড়িতে কত জনেরই বা আলাদা ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ আছে? মোবাইলে ডেটা এন্ট্রির কাজ করতে গিয়ে কখনও ফোন চলে আসছে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, যাঁরা ফর্ম পেয়েছেন, তাঁরা কোনও অসুবিধা হলে আমাকে ফোন করছেন। কারণ, সেই ফর্মে হয়তো বিএলও হিসাবে আমার ফোন নম্বরই লেখা আছে। ডেটা এন্ট্রি করার মধ্যে ওই ধরনের ফোন এলে অনেক সময়ে লগ আউট হয়ে যাচ্ছে। তখন আর ডেটা এন্ট্রি করা যাচ্ছে না।’’
ওই বিএলও আরও জানাচ্ছেন, এক বার লগ আউট হয়ে গেলে আবার লগ-ইন করার জন্য ওটিপি চাইতে হচ্ছে। সার্ভার স্লো থাকলে সেই ওটিপি আসতে দেরি হচ্ছে। একই ফোনে পুরোটা করার জন্য এই অসুবিধায় পড়ছেন তাঁরা। সে ক্ষেত্রে আলাদা ট্যাব দিলে সেখানে ডেটা এন্ট্রি অনেক তাড়াতাড়ি হবে। বিএলও-দের একাংশের এ-ও অভিযোগ, এক দিকে দিনে তাঁদের ৩০০ জনের ডেটা এন্ট্রি করার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু নিজেদের মোবাইলে সেই লক্ষ্যে পৌঁছনো কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাঁদের প্রশ্ন, লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হচ্ছে, ভাল কথা। কিন্তু তা পূরণ করার জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই কেন?
‘শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী বিএলও ডিউটি প্রতিরোধ মঞ্চ’-এর তরফে জানানো হয়েছে, প্রত্যেক বিএলও-কে ট্যাব দেওয়ার দাবি ছাড়া তাঁরা আরও কিছু দাবি জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনকে পাঠানো চিঠিতে।সংগঠনের দাবি, এসআইআর সংক্রান্ত যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ করার সময়সীমা অন্তত ৩০ দিন বাড়াতে হবে। বিএলও-দের পোর্টালের সার্ভার আপডেট করতে হবে। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক বিএলও-দের প্রতি সমস্ত নির্দেশ লিখিত ভাবে দিতে হবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)