যোগ্য-অযোগ্যের তালিকা দেয়নি এসএসসি। পরিবর্তে সোমবার গভীর রাতে এসএসসি জানায়, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে চলবে তারা। এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বিবৃতিতে বলেন, ‘‘২০১৬ সালে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে স্পষ্ট করে বলা হচ্ছে যে, এসএসসি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে চলবে। এবং বিভাগ কর্তৃক জানানো হচ্ছে, যে শিক্ষকেরা চাকরি করেছেন, তাঁদের বেতন বর্তমান ব্যবস্থা অনুসারে বিতরণ করা হবে।’’ একই কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও। তার পর থেকে আন্দোলনের ঝাঁজ আরও বাড়ালেন চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষকেরা। তাঁদের দাবি, তালিকা না পাওয়া পর্যন্ত কেউ সল্টলেকের আচার্য ভবন প্রাঙ্গণ ছাড়বেন না। সেই থেকে রাতভর রাস্তায় বসে রইলেন তাঁরা। মাঝে দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে বিতণ্ডা হল।
রাত ১টা নাগাদ পুলিশের সঙ্গে এক বার ধস্তাধস্তি হয় বিক্ষোভকারীদের। চাকরিহারাদের দাবি, রাতে আচার্য সদনে ঢুকতে গিয়েছিলেন বিধাননগর কমিশনারেটের আধিকারিক এবং কর্মীরা। এসএসসি-র চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারকে নিরাপত্তা দিয়ে বার করে নিয়ে যেতে চায় পুলিশ। কিন্তু তাঁরা সেটা হতে দেবেন না। প্রথমে পুলিশের সঙ্গে তর্কাতর্কি, পরে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় চাকরিহারা শিক্ষকদের। শিক্ষিকাদের অভিযোগ, তাঁদের গায়ে হাত তোলা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত মহিলা পুলিশ নেই। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দেয় পুলিশ। বিধাননগরের ডিসি অনীশ সরকার বলেন, “পুলিশ একটা সিস্টেমে কাজ করে। আমরা আমাদের ডিউটি করছি। শিফ্টিং চলছে। আমাদের এক পুলিশকর্মী সাদা পোশাকে ছিলেন। তিনি বেরোচ্ছিলেন। আন্দোলনকারীরা ভেবেছেন, উনি এসএসসির কর্মী। তেমনটা নয়। উনি পুলিশকর্মী। আমরা ওঁদের লিডারের সঙ্গে কথা বলেছি। ওঁরা বুঝতে পেরেছেন। মিটে গেছে। আমরা আছি এখানে।” তিনি আরও বলেন, “আমাকে আটকানো হয়ছিল। মহিলা অফিসারেরা আসেন। যখন যাই তখন ধাক্কা দেওয়া হয় কিন্তু আমরা বিষয়টা সামলে নিতে পেরেছি। ওঁদের প্রতিনিধি এ ব্যাপারে সহযোগিতা করেছেন।” অন্য দিকে, এক আন্দোলনকারী বলেন, “সাদা পোশাকের এক জন পুলিশকর্মী বেরোচ্ছিলেন। আমরা পরে বুঝতে পারি, উনি পুলিশ। পুলিশ যাবেন বা আসবেন, আমাদের তাতে আপত্তি নেই। এসএসসির কোনও কর্মীকে আমরা বেরোতে দেব না।’’
এই ভাবে রাত ২টো পেরিয়ে যায়। রাস্তায় চাকরিহারা শিক্ষকেরা বিক্ষোভ দেখিয়ে যান। রাস্তায় ঠায় বসে থাকেন হাজার হাজার চাকরিহারা যুবক-যুবতী। তাঁরা জানিয়ে দেন, এই ভাবে রাস্তাতেই থাকবেন। আর হারানোর কিছু নেই।