ধর্ম ও জাতপাতের নামে বিভাজনের রাজনীতি বাংলাতেও ডালপালা ছড়িয়েছে। তারই মধ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গরিব, প্রান্তিক মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এই অভিযোগ সামনে রেখে রাজ্যে গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির একজোট হওয়ার আহ্বান ফের শোনা গেল কংগ্রেস ও সিপিএম নেতৃত্বের গলায়। বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাঁদের এই বার্তাকে ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।
রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী এবং পরবর্তী কালে কংগ্রেস নেতা হাফিজ আলম সৈরানির প্রথম প্রয়াণ বার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার উত্তর কলকাতার রামমোহন লাইব্রেরি হলে স্মরণসভার আয়োজন করেছিল ‘রমজান আলি ফাউন্ডেশন’। সেই মঞ্চেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের উপস্থিতিতে দলের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরী বলেছেন, ‘‘কে হিন্দু, কে মুসলিম, কে রাজবংশী বা মতুয়া— এই বিচার করে রাজনীতি বাংলায় হত না। ধর্ম, জাতের নামে রাজনীতি ছিল উত্তর ভারতে। বাংলায় ছিল শ্রেণি সংগ্রাম, জাত বা ধর্মের নামে লড়াই নয়। এখন দুর্ভাগ্যজনক ভাবে উত্তর ভারতের সেই পরিস্থিতি বাংলায় নিয়ে আসা হচ্ছে। এর মোকাবিলায় ধর্মনিরপেক্ষ ও উদারপন্থী ঐক্য দরকার।’’ তাঁর মত সমর্থন করেছেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু ও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। ওই মঞ্চেই সেলিমের মন্তব্য, ‘‘মানুষ যখন সরকারের কাছে জবাব চাইছে, সেই সময়ে ফ্যাসিবাদী শক্তি পরিচালিত সরকার মানুষকে ব্যতিব্যস্ত রাখছে নিজেদের নাগরিকত্বের প্রমাণ জোগাড় করতে বলে! ভয় পেলে চলবে না। গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ সব পক্ষ একসঙ্গে নিয়ে ফ্যাসিবাদীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।’’
কংগ্রেস ও বাম নেতৃত্ব। —নিজস্ব চিত্র।
সভায় ছিলেন আরএসপি-র সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্য এবং সৈরানির ভাইপো তথা কংগ্রেস নেতা আলি ইমরান রাম্জ (ভিক্টর)। বিমান ইঙ্গিত দিয়েছেন, আগে থেকে পরিকল্পনা হলে আজ, বুধবার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) দফতরের কাছে বামেদের বিক্ষোভ-জমায়েতে কংগ্রেসকেও সঙ্গে নেওয়া যেত। মূল্যবোধের রাজনীতির পক্ষে সরব হয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)