Advertisement
E-Paper

স্ত্রী অভিযুক্ত, অ্যান্টি র‌্যাগিং সেলের মাথায় স্বামী, গবেষকের আত্মহত্যার ঘটনায় পদ ছাড়লেন আইসারের ডিন

গবেষক পড়ুয়া অনমিত্র রায়কে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁরই সুপারভাইজ়ার অনিন্দিতা ভদ্র এবং অপর এক গবেষক পড়ুয়া সৌরভ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত সুপারভাইজ়ারের স্বামী অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায় আবার ছিলেন ‘ডিন অফ স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স’ পদে। অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটির মাথাতেও ছিলেন তিনিই।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৫ ১২:৫৭
আইসারের গবেষক পড়ুয়ার আত্মহত্যায় প্রশ্নের মুখে কর্তৃপক্ষের ভূমিকা।

আইসারের গবেষক পড়ুয়ার আত্মহত্যায় প্রশ্নের মুখে কর্তৃপক্ষের ভূমিকা। —প্রতীকী চিত্র।

গবেষক পড়ুয়ার আত্মহত্যার ঘটনায় বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইসার) কলকাতার। কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নের মুখেই এ বার ‘ডিন অফ স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স’-এর পদ ছাড়লেন অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। আইসার-এর অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটির চেয়ারম্যানও ছিলেন তিনিই। সূত্রের খবর, সেই কমিটিও ভেঙে ফেলা হচ্ছে। নতুন করে গঠন করা হবে অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটি।

গবেষক পড়ুয়া অনমিত্র রায়কে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁরই সুপারভাইজ়ার অনিন্দিতা ভদ্র এবং অপর এক গবেষক পড়ুয়া সৌরভ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। দাবি করা হচ্ছে, সৌরভের বিরুদ্ধে সুপারভাইজ়ার অনিন্দিতার কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন অনমিত্র। কিন্তু তিনি বিষয়টিতে গুরুত্ব দেননি। পরে অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটিতেও অভিযোগ জানান অনমিত্র। সেখানেও তাঁর কথাকে বিশেষ আমল দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। ঘটনাচক্রে, অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটির মাথায় ছিলেন অভিযুক্ত সুপারভাইজ়ার অনিন্দিতার স্বামী অয়নই।

এমতাবস্থায় অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটি কতটা নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। কমিটির চেয়ারম্যান পদে থাকা অয়নের ‘স্বার্থ সংঘাত’-এর তত্ত্বও উঠে আসছিল। বিক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা বার বার তাঁকে ওই পদ থেকে অপসারণের দাবি তুলছিলেন। বিতর্কের মুখে এ বার অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটি ভেঙে নতুন করে গঠন করতে উদ্যোগী হয়েছেন আইসার কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে ‘ডিন অফ স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স’ পদ থেকেও সরে দাঁড়ালেন অয়ন। তিনি বলেন, “আমিও চাই নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে আমার এই পদ থেকে সরে আসা জরুরি মনে করেছি। তাই এই পদত্যাগ।”

উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগরের বাসিন্দা অনমিত্র অটিজ়মে আক্রান্ত ছিলেন। নদিয়ার কল্যাণীতে আইসার কলকাতায় গবেষণা করছিলেন। গত বৃহস্পতিবার আইসার-এর এক ল্যাবরেটরির ভিতরেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। পরের দিন (শুক্রবার) কল্যাণী এমসে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ২৬ বছর বয়সি ওই গবেষক পড়ুয়ার। মৃত্যুর আগে একটি চিঠিও লিখে যান। সেখানে তাঁর সঙ্গে হওয়া সব ঘটনার বিবরণ উল্লেখ করেছেন তিনি। গবেষক পড়ুয়ার শারীরিক সমস্যার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে ওই চিঠিতে।

মৃত্যুর আগে ওই নোটে অনমিত্র লিখেছেন, তাঁরই এক সতীর্থ গবেষক তাঁকে বার বার হেনস্থা করতেন। ওই গবেষকের বিরুদ্ধে তাঁদের সুপারভাইজ়ারের কাছে নালিশ করলেও তিনি বিষয়টি গুরুত্ব দিতে চাননি। এর পরই আইসার কলকাতার ‘অ্যান্টি র‌্যাগিং’ সেলে অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু তারাও বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি বলে অভিযোগ। তাঁর আরও অভিযোগ, যাঁরা এত দুর্ব্যবহার করেছেন, তাঁদের সঙ্গে সবাইকে খুব স্বাভাবিক ভাবে মেলামেশা করতে দেখে তিনি অত্যন্ত ব্যথিত হয়েছিলেন। যে গবেষক তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছিলেন, তাঁকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেটাও হয়নি।

অনমিত্র লিখেছেন, তাঁকে ‘হেনস্থাকারী’ গবেষকেরই প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন সুপারভাইজ়ার। তাঁর কাজ নিয়ে উচ্ছ্বসিত ছিলেন সুপারভাইজ়ার। তা নিয়ে অনমিত্র সরব হওয়ায় সুপারভাইজ়ার তাঁর সঙ্গে আবার দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ। গবেষক পড়ুয়ার মৃত্যুর পরে শনিবার তাঁর এক আত্মীয় নদিয়ার হরিণঘাটা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। আইসার কলকাতা কর্তৃপক্ষও এই ঘটনায় পৃথক ভাবে একটি তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে।

IISER Kolkata Nadia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy